ছিল মর্মবেদনা গাঢ় অন্ধকারে- ০৩

ধরা যাক যুবকের নাম ওয়ালিদ। সে বুয়েটের ছাত্র।আমার আট বছরের সিনিয়র হবেন। এখনো পাশ করতে পারেন নি। প্রচন্ড হাসিখুশি। উদার। আধুনিক চিন্তা চেতনা। খুবই মিশুক ধরনের। তার সাথে কথা বলতে আপনার ভালো লাগবেই।

ইনি একজন মেয়ে পটানো বিশেষজ্ঞ। মেয়েদের সাথে শুচ্ছেন, তাদের ছবিও তুলে নিয়ে আসেন। ভিডিও করেছেন কিনা জানি না। কোনদিন দেখাননি।তবে ব্ল্যাক মেইল করেন না।(আমার জানা মতে।)

হলে থাকাকালীন সময়ে রূমে আসতেন মাঝে মাঝে। আমাদের রূমের সব কয়জনের নারী বিষয়ক ধারনায় উনি প্রভাব ফেলেছেন।



ওয়ালিদ ভাইয়ের কর্মকান্ডের কিছু উদাহরন দেই।
০১
একদিন উনি রুমে আসলেন পেন ড্রাইভ নিয়ে। তাতে কোন একটা সুন্দরী
প্রতিযোগিতার বারোজন মেয়ের ছবি আছে। আমাদের বললেন, এদের ভিতর একজনকে পছন্দ হইছে। তার সাথেই হবে।
আমরা বিশ্বাস করি না।
তিনি বললেন, এইখানে বারোজনের ভিতর তার একজন বান্ধবী আছে। আগে তার বান্ধবীকে আমার বোন বানাতে হবে। এরপর সব হবে..
মাসখানেক পর তিনি বললেন, হইছে। ছবি দেখবা? আমি বললাম থাক! দেখার দরকার নাই।
তিনি একটু হেসে বললেন, ওর বান্ধবীর সাথেও হইছে।
তাকে না আপনি বোন ডাকলেন?
তিনি কথা না বলে হাসেন।

০২
একবার ছবি নিয়ে আসলেন ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া মেয়ের। আজিজ মার্কেটের কোন এক বন্ধুর রূমে তারা দুইজন সময়(!) কাটিয়েছেন একত্রে। কিছু ছবি দেখালেন যেগুলো মেয়েটাকে খুব একটা এক্সপোজ করে না।
মেয়েটার মুখ কি যে নিস্পাপ! দেখলেই মন খারাপ হয়ে যায়। এই মেয়ে...ওয়ালিদ ভাই- মেলাতে কষ্ট হয়।
আমাদের ভিতর থেকে একজন প্রশ্ন করল, এই মেয়েটার সাথে এরপর কি হবে?
ওয়ালিদ ভাই হাসিমুখে বললেন, এক সপ্তাহের ভিতর মেয়েটা বুঝে যাবে যে কার সাথে সে পড়েছে। এরপর আর কোনদিন আমার সাথে কথাও বলবে না।


তার কর্মকান্ড এর আর উদাহরন দিতে ইচ্ছে করছে না।

প্রায় প্রতিমাসে তিনি একটা মেয়েকে পটান। একবার কোন একটা মেয়ের সাথে শুয়ে পড়ার পরপরই তিনি অন্য কাউকে খুজতে থাকেন।

মেডিকেল, বুয়েট বা ঢাকা ভার্সিটির মেয়েদের দিকে তিনি হাত বাড়ান না। এদের জন্য নাকি বেশি সময় দেয়া লাগে। এখানে উল্লেখ করে রাখি তিনি বিবাহিত- বুয়েটের এক জুনিয়র মেয়েকেই বিয়ে করেছেন। বিয়ের পরও তার কাজ থামেনি।

একদল ভার্জিন যুবকের সামনে উনি যখন তার উদ্দাম সঙ্গমের উল্লেখ করেন, তখন সেই যুবকদের মনের অবস্থা সহজেই অনুমান করা যায়।

আমার ভিতর কি ওয়ালিদ ভাইয়ের জীবনটা পাবার লোভ এসেছিল?

এসেছিল... নিশ্চিতভাবে এসেছিল। আমারো ইচ্ছে করছিল এই সুযোগ নেই। খুব একটা কঠিন নয় এই সুযোগ নেয়া।

কিন্তু আমি নেইনি। আমার রূমের আর কেউই এইধরনের কাজে জড়িয়ে পড়েনি। আমাদের পাশের রূমের জুনিয়রদেরও এই ধরনের কিছু কাহিনী বের হল। কিন্তু আমরা রুমের সবকয়জন fifa আর warcraft নিয়েই পড়ে থাকলাম। একটা আফসোস হয়ত ছিল। কিন্তু সেটা কখনই বড় কিছু ছিল না। আজকে আমি আফসোস করি না যে গেম খেলে আমার বুয়েট লাইফ শেষ হয়েছে। আমার ধারনা আমাদের ভিতর কেউই করে না। গত ঈদের পরদিন সবাই ল্যাপটপ নিয়ে আমাদের বাসায় এসে পড়ে- সারারাত গেম ফাইট হয়। :)

ওয়ালিদ ভাই আমার উপর ছাপ রেখে গেছেন। তার দিকভ্রান্ত জীবন থেকে আমি শিখেছি। গত আট-দশ বছরে তিনি বড়জোড় দেড়শ মেয়ের সাথে কিছু করেছেন। কিন্তু খেসারত হিসাবে নিজের জীবনটা নষ্ট করে ফেলেছেন। এই দেড়শজন মেয়ের থেকেও নিজের জীবনটা অনেক দামী। সেইটা তিনি বুঝেন নাই। আমার তার জীবনটা পাবার লোভ আছে, কিন্তু তারচেয়েও বেশি লোভ নিজের জীবনটার জন্য। দেড়শ-দুইশ মেয়ের জন্য একটা মানব জন্ম খরচ করা যায় না।

আমি ভার্জিন। সেটা নিয়ে একসময় কিছুটা আফসোস ছিল। এখন আর নাই। আমি জানি আমি ঠিক কাজ করছি। দোস্তরা বোকাচোদা বলে ডাকুক- আমার তাতে কিছু যায় আসে না।

(অবশ্য মাঝখানে নিজের sexual orientation নিয়ে সন্দেহে পড়ে গিয়েছিলাম। সেটা নিয়ে পরের পর্বে লিখব)

আরেকটা ছেলের সাথে পরিচয় হয়েছিল যার কাজ সহপাঠিনীদের সাথে সঙ্গম করা। তার কথা লিখলাম না। এক ওয়ালিদ ভাইয়ের কথা লিখতেই নিজের কাছে খারাপ লাগছে- তার কথা লেখার কোন মানে হয় না।

No comments: