কাঁকনের জন্য সনেট

কেন আমি লিখি...


প্রখর দুপুর রৌদ্রে জ্বলা ধুমকেতু
যাকে দেখেনি কেউ, তাকায়নি আকাশে।
তার মতই বিবর্ন, অস্পষ্ট বা ভীতু-
একেবারেই সাদা-কালো স্বপ্নেরা আসে।
বা হয়ত আরো ছিল স্বপ্নে... ফুল,মৃত্যু,
বারুদ যে নোনা গন্ধ ছড়ায় বাতাসে,
নিয়তির তিনবোনেরা......বা রাহু-কেতু,
ব্যর্থ এন্টিয়াস.....সব দল বেধে আসে।

জানি আমি, অন্ধকারেই জ্বলে জোনাকি
দুই মেরু ঘুরে ফিরে শেষপ্রান্তে ফ্রেয়া।
সবই হতে পারে ভুল, বিদ্রুপ-মায়া-
-ছদ্মনাম-অট্টহাস্য। তবু কেন লিখি?
মাটিতে শরীর রেখে, প্রানপনে কি যে।
"চাই। আমি চাই।" কাঁকন বলেছে নিজে।





কবিতায় মিথোলজির কিছু শব্দ আছে। যারা জানেন না তাদের জন্য সেগুলোর মানে দিয়ে দিলাম।

নিয়তির তিনবোন-গ্রীক নিয়তির তিন দেবী। এই তিনজন যা ঠিক করে দেয় দেবতারাও সেটা পাল্টাতে পারে না।
রাহু-কেতু- ভাগ্য নিয়ন্ত্রনকারী দুটি গ্রহ (!)
এন্টিয়াস-গায়া(ধরিত্রী) এর পুত্র, গ্রীক দানব (টাইটান)। মাটি স্পর্শ করলে সে হৃত শক্তি পুনুরুদ্ধার করতে পারত। ফলে তাকে হারানো সম্ভব ছিল না। শেষ পর্যন্ত মহাবীর হারকিউলিস হস্তে পরাজিত। হারকিউলিস এন্টিয়াসকে মাটি স্পর্শ করতে দেয়নি।
ফ্রেয়া( freya)- নর্স দেবী। ফ্রেয়া মানে হল fairest of all. শুক্রবারের ইংরাজি নাম FRI DAY এসেছে FREYA's day থেকে। কিছু কিছু বর্ননায় প্রধান দেবতা ওডিনের প্রেয়সী। ওডিন বেচে থাকার অর্থহীনতায় হতাশ হয়ে পড়ে । পৃথিবী চষে বেড়ায় জীবনের মানে খুজে খুজে। শেষ পর্যন্ত ফ্রেয়া তাকে বুঝিয়ে দেয় কেন বেচে থাকা দরকার।



এই কবিতাটি আমার মতে সনেট। কিন্তু আমি বললেই ত হবে না। অষ্টক-ষষ্ঠকের ব্যাপার আছে। ছন্দরীতির ব্যাপার, মাত্রা বজায় রাখার ব্যাপার আছে। এই বাধা টপকানের পর সাধারনত নতুন অভিযোগ আসে। সনেটের যে ভাব গাম্ভীর্য থাকা উচিত সেটা এখানে নাই। আমি জানি বেশীর ভাগ বাঙ্গালি মধুসুদনের ছাড়া আর কারো সনেট পড়েনি। মধুসুদন দুর্বোধ্য করে লিখেছে বলে আমাকেও লিখতে হবে সেটা মানতে পারি না। এই যুগে মধুসুদনের মত লিখলে সবাই হেসে খুন হবে। বর্তমান যুগটাই কঠিন বস্তু সহজে বুঝার আর করার। আমি আমার মত বললাম আর ব্যাখ্যা দিলাম। কবিতা হিসাবে না উৎরাতে পারলে সনেট হয়েছে কি হয়নি সেটা আর মাথা-ব্যাথার বিষয় না। তাই পাঠকের কি মত সেটা জানালে ভালো হয়।

1 comment:

Anonymous said...

norse mytholohy অনুযায়ী ফ্রেয়া অর্থ ভালোবাসা এবং উর্বরতার দেবী :)