আমার ছোটবোনটার জন্য তার ক্লাসের এক ছেলে হাত কেটেছে

ছোটবোনটার জন্য তার ক্লাসের এক ছেলে হাত কেটেছে । সেটা নিয়ে তাকে খুব ক্ষেপাচ্ছি। আজকালের ছেলেদের কি হয়েছে জানি না। ইচড়ে পাকা হয়ে যাচ্ছে মনে হয়। ক্লাস সেভেনে পড়ে মাত্র ।এখনি পীরিতির আঠা লাগানোর শখ। বসুনিয়া ক্লাসে একটা জোকস সব সময় বলতেন, এখনকার ছেলেরা নাকি আমাদের চেয়ে স্মার্ট। ক্লাস ফোরে থাকতেই চিঠি লিখে বান্ধবীকে, আমি তুমারে ভালবাসি। বড় হয়ে “বিয়া” করব।

যদিও হাসাহাসি করেছি কিন্তু বিষয়টা ভাবিয়ে তুলেছে। এই বয়সের ছেলে একটা মেয়ের জন্য হাত কাটতে যাবে কেন? কাহিনী কি? পোলার কি বা_ পেকে গেছে নাকি? আমরা যেসব ভেজাল খাই তাতে অল্প-বয়সে কারো বা_ পেকে যাওয়া অসম্ভব না।

আমরা হাসাহাসি করেছি প্রচুর। আমার বোনটাকে খুব খেপিয়েছি। এমনভাবে বলার চেষ্টা করেছি যেন একটা ছেলে তার জন্য হাত কেটেছে সেটা তার কাছে খুব স্বাভাবিক মনে হয় । একটা ছোট হুমকিও দিয়ে এসেছি। বললাম তুমি প্রেম কর সমস্যা নাই। কিন্তু একটা ছেলের সাথে করতে পারবে না। একসাথে ৫/৬ জনের সাথে করলে ঠিক আছে। কিন্তু একজনের সাথে করলে......একজনের সাথে করলে তোমাকে কিছু বলব না। কিন্তু ছেলেটার হাড্ডি গুড়া করে দিব।

আমার মা বলে, ছেলের কি দোষ? তোর বোনের দোষ হতে পারে না?
আমি যুক্তি দেই। ধর যদি ছেলেটা এগিয়ে আসে প্রথম, তাহলে তার “মাইর” পাওনা কেননা সে এগিয়ে না এলে আমার বোন আগাত না। আর যদি আমার বোন এগিয়ে যায় তবেও ছেলেটার “মাইর”পাওনা কেননা সে এত চমৎকার কেন হল যে আমার বোন resist করতে পারল না। অর্থাৎ যাই হোক ছেলেটা মাইর খাবে।

কথাগুলা হাসাহাসির ভিতর দিয়ে গেছে। সিরিয়াস না আমরা কেউই। কিন্তু পরে আমার মনে হল যে আকাশ সংস্কৃতি আমরা ঘরে বয়ে নিয়ে আসছি তার প্রভাব নয় ত?

ইন্ডিয়ান এক অনুষ্ঠানে দেখলাম আট বছরের ছেলে কোমড় দুলিয়ে গাইছে “ইশক কমিনা” (হিন্দীটা ঠিক আছে কিনা কে জানে) যতটুকু বুঝি এর অর্থ ছোটলোক প্রেম। এই সংস্কৃতি আমরা বয়ে আনছি। ভারত সরকার আমার জানা মতে এইডস কে মহামারী রোগ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। রাষ্ট্র সীমানা চিনে , রোগ না। আর তাদের গা ঘেষেই আমরা আছি।
আমরা পালটিয়ে যাচ্ছি। এই জেনারেশন মোবাইল জেনারেশন। এরা কি করবে আমি অনুমান করতে পারছি না।
আজকে আমার বোনের জন্য তের বছরের এক ছেলে হাত কেটেছে, বিশ বছর পরের অবস্থা ............ থাক।

No comments: