দিনলিপি (তারিখ-০২/০৪/০৯ )

গতপরশু সাইনেসথেটিক মানুষের কথা পড়লাম। এরা শব্দ দেখতে পায় আর রঙের শব্দ শুনতে পায়। অডিটরী আর অপ্টিক্যাল স্নায়ুর প্যাচ লেগে গেলে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। পড়ার পর থেকেই মাথার ভিতর এই আইডিয়াটা ঘুরছে। অনেকদিন আগে ব্লগে লিখেছিলাম, বিভিন্ন ছবি আমার মনের ভিতর এক ধরনের মিউজিক তৈরী করে। এখন জানি এই ঘটনা ঘটা খুব সম্ভব। প্রতি পচিশ হাজারে এমন একজন মানুষ পাওয়া যায় যে রঙের বা আলোর শব্দ শুনতে পারে...
আমাদের চারপাশে এই ধরনের মানুষ আছে। যেহেতু বাংলাদেশের বেশিরিভাগ মানুষ দরিদ্র আর ডাক্তারী সুযোগ সুবিধা অপ্রতুল সেহেতু ধরে নেয়া যায় ,এই মানুষগুলা জানে না তারা আসলে কি। আহারে!

আমার অবশ্য এই ধরনের কোন একটা মানুষের সাথে কথা বলার খুব শখ হচ্ছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি আমাকে ধারনা দেয় শব্দের রঙ কেমন হতে পারে। এই ধরনের একটা প্রোগ্রাম লেখা খুব একটা কঠিনও না। আর সমস্ত মিউজিক প্লেয়ার ভিসুলাইজেশনের অপশন দেয়। সেটা ত শব্দকে রঙ্গে পালটিয়ে দেয়াই, তাই না? আমরা শুধু জানি না, আসলেই এই শব্দের রঙ্গগুলা তাদের কাছে এই রকম কিনা।
শব্দকে আলোর সিগন্যালে প্রকাশ করা সহজ হলেও আলোকে শব্দ হিসাবে প্রকাশ করা কঠিন। আমার মনে হয় একটা শব্দ এনালাইসিস করার জন্য সহজ বিষয়। কিন্তু আলো নিয়েই হাজারো গেঞ্জাম। এইটা আরো সহজে আইডিয়া করা যায়, শব্দ ধারন করার একটা ভালো মাইক্রোফোন আর একটা ক্যামেরার দামের তুলনা করলেই।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাসাহিত্যের বিকাশ নামে একটা টপিক পড়ছিলাম। লক্ষ্য করে দেখি এই টপিকে যেইসব উপন্যাসের কথা আছে, তার অতি সামান্য আমি পড়েছি। বেশিরভাগই অচেনা। অথচ স্বাধীনতা পূর্বের বিভিন্ন উপন্যাস যেমন ক্রীতদাসের হাসি বা সূর্যদীঘল বাড়ি এইগুলা পড়া আছে। একাত্তরের দিনগুলি আমি আগ্রহ নিয়ে পড়েছি। কিন্তু ৭০ থেকে ৮৫/৯০ এই সময়ের তেমন কিছুই আমি পড়ি নাই। হুমায়ুন যে কয়টা উপন্যাস লিখেছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সে কয়টা ঠিকই পড়া আছে, কিন্তু সেটা ত শুধু হুমায়ুন বলেই। বাকিদের উপন্যাস আমার পড়ার সুযোগ হলো না কেনো? পাঠক হিসাবে আমি সর্বগ্রাসী। আমার হাতের কাছে বইগুলা আসলে আমি নিশ্চিত পড়তাম।( রশীদ হায়দারের পুতুপুতু প্রেমের ছোট গল্পগ্রন্থ পড়া আছে, কিন্তু তার মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস পড়া হয় নাই।)
কেন এমন একটা ঘটনা ঘটল? ভালো লেখকেরা কি এই সময়টায় কিছু লিখল না , নাকি এর পিছনের অন্য কারন আছে? কে জানে...

অফিসের কথাও লিখে রাখি একটু। আজকে ঢাকা যাওয়ার প্ল্যান ছিল। কিন্তু আমার বস সম্পূর্ন অকারনে আমাকে বসিয়ে রাখল সারাদিন। বিকালের শেষ বাস হর্ন দিতে দিতে আমার অফিসের সামনে দিয়ে চলে গেলো...
ক্ষমতা হাতে পেলে সেটার অপব্যবহার মানুষকে কি যে কষ্ট দেয়! আমি নিজেও একদিন হাই অফিশিয়াল হব। নিজের কাছেই তাই আজকে নিজে প্রতিজ্ঞা করে রাখলাম, অকারনে কাউকে অপেক্ষায় ফেলে রাখব না। এরচেয়ে বড় অপরাধ আর হতে পারে না।

No comments: