ফানপোষ্ট- কিছু ব্লগারের স্টাইল অনুসরন করে...

ঘটনা সহজ। প্রথম প্রেম বা প্রথম ডেটের কথা লিখছেন বিখ্যাত ব্লগাররা।তাদের নিজস্ব স্টাইলে। শিরোনাম আর নমুনা ব্লগ দিলাম।
মডু/নুটিশবোর্ড

নির্মল বিনোদনের উৎস এই ব্লগগুলা। প্রথম ডেট বর্ননায় ব্লগের নানা টার্ম ব্যবহৃত হবে...
শিরোনাম- আমার প্রেম- সকল ব্লগারের দৃষ্টি আকর্ষন

নমুনা ব্লগ-
ছেলেটাকে দেখলেই মনে হলো এই ছেলে শখানেক প্লাস পাওয়া ছেলে। এইছেলে নিরাপদ না হয়েই যায় না। আমার হৃদয়ে তার আসন স্টিকি হয়ে গেলো...ইচ্ছে হলো শোকেসে রেখে দেই তাকে... কয়েকটা মেয়েও তার দিকে তাকিয়ে আছে...মেয়েগুলাকে ওয়াচে রাখলাম...


(পোষ্ট স্টকি থাকবে, মাইনাসে ভরে যাবে। কিছু চিহ্নিত ব্যাক্তিকে দেখা যাবে প্লাস দিচ্ছে আর বাহবা দিচ্ছে। )


কাগু
ব্লগের ভাষাসৈনিক(!) কাগু ব্লগ শুরু করবেন একেবারে নিজস্ব স্টাইলে।

শিরোনাম- বাথিযা- বাথিযিড়া আনন্ধ করো, অভসেসে কাগু কাঘীমা কুযে ফেলো
নমুনা ব্লগ-
অপিছে ভছে ছিঙ্গাড়া খাচসি,ঠুঈ ঠাখার চুট্ট ছিঙ্গাড়া। এমুন ছময় মাছাল্লাহ, এখ টড়ুনী এলু, তাহাড় সিঙ্গাড়া পাছঠাখার খম না হয়ে জায় না।
................................




দূরের পাখি
পাচ-ছয়টা ভাষায় দক্ষ দূরের পাখি লিখবে খাটি ফেনী-কুমিল্লা অঞ্চলের ভাষায়।
শিরোনাম- পুলিশীয় পোষ্ট- আমার প্রথম অভিসার আর হুজুরগুলার _এ চুলকানি


নমুনা ব্লগ-
হেতেরে দেখতাছি কয়দিন ধইরা। দেখলেই আঞ্জা দিয়া ধরতে ইচ্ছা করে। এমুন সোন্দর হয় মানুষ...

( পোষ্ট এইভাবে শুরু হলেও হঠাৎ করে এর ভিতর ইসলাম ঢুকে যাবে। শেষে হযরতকে গালি দিয়া ব্লগ শেষ হবে।)


কৌশিক
ব্লগের সেলেব্রেটিদের একজন। ধারালো ভাষায় তিনি প্রথম ডেটের কথা লিখবেন। ব্লগে অনেক উচ্চমার্গীয় কথা বার্তা থাকবে। শেষের জন্য তিনি সবচে বড় চমকটা রেখে দিবেন।

শিরোনাম- পলিগেমাস পুরুষের মনোগ্যামির শখ- একটি ডেট এবং তৎ পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ (সিরিজ ব্লগ)

নমুনা ব্লগ-
আমি টিপাইমুখ বন্ধ করো টি-শার্ট পড়ে লেকের পাড়ে বসে আছি। কলিগের আসার কথা পাচটায়। এখন বাজে পাচটা বেজে ত্রিশ সেকেন্ড। আমি খুবই বিরক্ত।
......

( ব্লগের শেষে পাঠক ধাক্কা খাবেন যখন জানবেন কলিগ আসলে বিবাহিত। পরের পর্বে জানবেন কলিগ আসলে ছেলে। এরপরের পর্বে জানবেন যে কলিগের সাথে ডেট সেইটা আসলে বিবাহিত কলিগ না, অন্য কলিগ। ......)


চিকনমিয়া


হিট ব্লগার চিকনমিয়া ডেট নিয়া প্রথমে লিখতেই রাজি হবেন না। জোর করে নামানোর পর ছোট একটা ব্লগ লিখবেন। সেইটার হিট প্রথমদিনেই হাজার পেরিয়ে যাবে।

শিরোনাম- প্রেমে মাইনাচ নাই...লাভই লাভ

নমুনা ব্লগ-
ডেটের উদ্দেশ্যে আমি লেকের পাড়ে বসে আছি। সামনে একটা রূমাল বিছাইছি। সেইখানে বাদাম খাইয়া ছোলকা রাখমু। কিন্তু রূমাল বিছাইয়া বসতেই একজন আইস্যা দুইটা টাকা রূমালে রাখল। কয়- কিছু কিন্না খাইস...শরীরে ত কিছুই নাই।
যাই হোক ঘন্টাখানেকের ভিতর শ দুয়েক টাকা আয় করলাম।
ডেটের দেখা নাই। যাউকগা, পয়সা কামাইচি... এইটাই ভালু।

রাইতে চুইটি ফুনে কয়, আমি লেকের পাড়ে গেছিলাম ত। কিন্তুক একটা গোলাপি শার্ট পড়া ফকির ছাড়া আর কাউরে দেখলাম না। তুমি আসো নাই ক্যান?
......



সুদীপ্তঅরন্যচারী


এই ছেলেটা দিনলিপি আকারে লিখবে। বান্ধবীর সাথে বসে বসে সিনেমা দেখছে। সেই থেকেই প্রেম শুরু।


শিরোনাম- আমার প্রেমলিপি
নমুনা ব্লগ-
আমি দৌড়িয়ে সিনেপ্লেক্সে আসলাম। হাতে ফুল । দৌড়িয়ে আসতে আসতে ধাক্কা লেগে অনেকফুলের পাপড়ি আর নাই। যাহোক ডান্ডাগুলা দিলেও সে মাইন্ড করবে না। আমি প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ি। এদের প্রেমে ফুলের দরকার লাগে না। ( প্রাইভেটে পড়ি... মাইনাস দিয়া যাইয়েন ভাইয়েরা)
.........

(ব্লগ ভালোই হবে। কিন্তু কমেন্টে ছাগু-জামাত নিয়া বিরাট ক্যাচাল হবে। এইটা যে একটা প্রেমের পোষ্ট কারো মাথায় থাকবো না। সিটিএন ছোড়াছুড়িতে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়বে। শেষ পর্যন্ত বেচারা নিজেই ব্যান খেয়ে বসবে। )

মেয়েদের ব্লগে হিট বেশি পড়ে- কথা এইখানেই শেষ নয়- আরো কথা বাকি আছে

মেয়েদের ব্লগে হিট বেশি পড়ে। খুব সত্যি কথা। ব্লগে প্রচুর লুল। এটাও খুব সত্যি কথা। যেনতেন ব্লগ লিখে একজন মেয়ে ব্লগার অনেক কমেন্ট পায়- ছেলেরা পায় না- এইটাও সত্যি কথা।

আমি আমার ব্লগজীবনে মাত্র চারটা মাইনাস দিয়েছি। এরমধ্যে প্রথমটা পেয়েছে একটা মেয়ে। তখন আমি ব্লগে একেবারেই নতুন। একটা মেয়ের ব্লগ ছিল- নাম মনে নেই- বাংলা সিনেমা নিয়ে হাল্কা ধরনের রম্য। মোটেও ফানপোষ্ট বলা যাবে না। কিন্তু সেখানে প্রচুর ব্লগার হাবিজাবি নানা কমেন্ট করছিল। আমার নিজের তখন একটা ব্লগ ফার্স্ট পেজে ছিল। তেমন একটা হিট ছিল না। আমার ব্লগটা (আমার মতে) তারটার চেয়ে ভালো ছিল। কিন্তু কেউ উকি দিচ্ছিল না আমার ব্লগে। আমার খুব রাগ হলো। খালি মেয়ে বলেই সে এত হিট পাবে? আমি জীবনের প্রথম মাইনাস তাকে দিয়ে আসি।

পরবর্তীতে আমি বুঝতে পারি সেটা ছিল ভুল।
সামু বা অন্য কোন সাইটে যে ভালো মেয়ে ব্লগারের সংখ্যা কম তার কারন কিন্তু এইটা। লুলদের বাড়াবাড়িতে মেয়ে ব্লগাররা হারিয়ে যায়।
ব্যাখ্যা করি একটু।
ধরা যাক আসমানি নামের একটা মেয়ে ফেসবুকের লিঙ্ক থেকে সামুর সন্ধান পেয়েছে। সে ভুল বানানে জীবনের প্রথম ব্লগ লিখেছে। কিছু যুবকের শুভেচ্ছা আর স্বাগতম শুনা শুরু করেছে। জোসের কারনে সে দ্বিতীয় ব্লগও লিখে ফেলেছে। ছোটবেলায় তার পুতুল হারিয়েছিল-সেটা নিয়ে। নতুন ব্লগারদের ব্লগ সাধারনত ছোট হয় আর মানে হয় নিম্ন-শ্রেনীর( কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে)। এই নিম্নমানের ব্লগ লিখেও সে বেশ কয়েকটা প্লাস পাচ্ছে এবং সুন্দর সুন্দর কমেন্টে ভরে যাচ্ছে তার ব্লগ। সে যা বুঝতে পারছে না, তা হল একজন সম্ভাবনায় ব্লগারের মৃত্যু ঘটাচ্ছে লুলেরা।
এই মেয়েটা যখন কোন খারাপ ব্লগ লিখছে- কেউ তাকে সাবধান করে দিচ্ছে না- এটা খারাপ। বিরক্তিকর ব্লগ হচ্ছে- এই কথাটাও তাকে কেউ বলছে না। তার ভিতর ধারনা হয়ে যাচ্ছে – আমি ভালো লিখি পাঠকেরা সেই জন্যেই আসছে। এরপর একদিন সে তার বয়ফ্রেন্ড নিয়ে লিখে বসবে। লুলেরা জেনে যাবে সে খালি নয়। লুলেরা তখন নতুন কোন ফুলবানুর দিকে ঝুকে পড়তে শুরু করবে। আসমানি হঠাৎ আবিষ্কার করবে তার প্লাসের সংখ্যা কম হচ্ছে ইদানীং। হায়দার বা কায়সার নামের তার নিয়মিত পাঠক আর প্লাস প্রদানকারী মাঝে মাঝেই তার নতুন ব্লগ মিস করা শুরু করছে। একসময় সে তাদের কাছ থেকে আর কিছু পাচ্ছে না। এইসময়ে সে আবিষ্কার করবে- সে ভালো ব্লগ লিখে না। কিন্তু কিভাবে ব্লগ আকর্ষনীয় করতে হয়- সেইটা বুঝার জন্য যে শ্রম এবং সময় দিতে হয়- সেটা দেবার অভ্যাস তার নেই। সে ত জানে ব্লগ লিখলেই সবাই ঝাপিয়ে পরে পড়ার জন্য। পাঠকদের কিভাবে টেনে আনতে হয় ক্ষুদ্র তিনমাসের ব্লগ জীবনে সেটা সে জানার চেষ্টাই করে নাই বা করতেই হয় নাই। কিছুদিন হয়ত সে লেগে থাকবে- এরপর হাল ছেড়ে দিবে। ফলাফল ব্লগের প্রতি আগ্রহ শেষ। সে হয়ত একজন ভালো ব্লগার হত। কিন্তু সেই সুযোগ সে পায় নাই।

একটা সময় আমার ধারনা ছিল- মেয়েদের সিনেমার নায়িকা হওয়া সোজা। হয় দেখতে খুব সুন্দর হও নতুবা কাপড় খুলে দাড়াও ক্যামেরার সামনে। কিন্তু কফি উইথ করন নামে একটা অনুষ্ঠানে মল্লিকা শেরওয়াতের সাক্ষাৎকার দেখে আমার ধারনা পালটে গেল। যদিও বোম্বের সিনেমা আমি বলতে গেলে দেখিই না, তবুও মল্লিকাকে আমি খুব ভালো করে চিনি। আমার রূমমেট যখন হিন্দী মুভি দেখত তখন আমি তাকে বলে রাখতাম হট সীন আসলে ডাকিস। সে আমাকে ডাকত আর আমি শুধু সীনটা দেখে চলে আসতাম। মার্ডার মুভির সময় বারবার নিজের টেবিল আর পিসির সামনে দৌড়াতে হলো।
সেই মল্লিকাকে দেখি উপস্থাপককে প্রানপনে বুঝাতে চাচ্ছে- সে ভালো চরিত্রে অভিনয় করতে চায়। কিন্তু সে সুযোগ পাচ্ছে না।
সেইদিন হঠাৎ করে আমি বুঝতে পারলাম- মেয়েদের জন্য ফিল্মের জগত আসলে ছেলেদের চেয়ে কঠিন। তোমার চেহারা সুন্দর-খুব ভালো কথা। কিন্তু খুব শীঘ্রই তোমার মত সুন্দর কিন্তু তোমার চেয়ে অল্প বয়স্কা আরেকটা মেয়ে খুজে পাওয়া যাবে। তুমি কাপড় খুলে দাড়াচ্ছো- আরো অনেক মেয়ে পাওয়া যাবে যে আগ্রহ নিয়েই এই কাজ করবে। আমার দ্বিগুন বয়েসী শাহরুখ আমার চেয়ে বয়স কম একটা মেয়ের সাথে খালি গায়ে নাচার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু এই মেয়েটার বয়স হলে সে এই সুযোগ পাচ্ছে না। কাপড় খুলে দাঁড়ানো যেহেতু সোজা- প্রচুর মেয়ে পাওয়া যাবে নায়িকা হিসাবে। মল্লিকার অনেক প্রতিদ্বন্দী। কিন্তু ভালো অভিনয় করা বেশ কঠিন- তাই শাহরুখের প্রতিদন্দ্বীর সংখ্যা কম। ঠিক এই কারনেই একজন টাক মাথার ব্রুস উইলিস দুনিয়া কাপাতে পারে- একজন বিশ্রী চেহারার নায়িকা খুজে পাওয়া যায় না।

ব্লগ পুরোপুরি পুরুষতান্ত্রিক এবং বহুলাংশে ফিল্মের জগত এর মত। এখানে যেসব সিনেমা হয় সেগুলো পর্দার চেয়ে কোন অংশেই কম মজার নয়।

আমি যখন প্রথম ব্লগ লিখি- সেগুলো ছিল নিম্নমানের। ( এখন জাতে উঠেছি তা নয়। তবে আগের চেয়ে ভালো লিখি।) শুধু আমি নই- বেশিরভাগ ব্লগারের প্রথম দিককার ব্লগ নিম্নমানের। এরা আস্তে আস্তে বুঝতে পারে কিভাবে ব্লগ লিখতে হয়- কিভাবে বড় একটা ব্লগের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠককে ধরে রাখতে হয়। কিভাবে বহু ব্লগ পড়ে আর কমেন্ট করে নিজের রেপুটেশন-পরিচিতি বাড়াতে হয়। এরা আস্তে আস্তে শিখে-শক্তিশালী হয়। একসময় এসে আর পাঠক পাবার জন্য চেষ্টা করতে হয় না। পাঠকেরা নিজেরাই আসে।

কিন্তু হতভাগা নতুন মেয়েরা এই সুযোগ পায় না। এদের পাঠকেরা কেউই সত্যিকারের পাঠক নয়। এরচেয়ে ভয়ঙ্কর কথা হলো- এরা যেসব কমেন্ট পায় তা থাকে মিথ্যায় ভরপুর। এই মিথ্যার জাল ভেদ করে- সত্যিকারের বস্তুর সন্ধান পাওয়া কঠিন।
এই প্রতিকূলতার ভিতর দিয়ে যেসব মেয়ে ব্লগার টিকে থাকে- এরা সাধারনত পুরুষদের চেয়ে শক্তিশালী ব্লগার। শুধু মেয়ে বলেই প্লাস পাচ্ছে বা কমেন্ট পাচ্ছে- এদের ব্লগ সম্পর্কে এই কথা বলা খুবই অন্যায়। এটা নিজেদের ছোট মানসিকতার পরিচয়।


অফটপিক-
আমার নিজের কাছে মনে হয়- লুলামি খুব একটা দোষের নয়। একটা ছেলে একটা মেয়েকে পাবার জন্য চেষ্টা করতেই পারে। এটা খুব একটা খারাপ বিষয় না। যদি ফেসবুকে লুলানো যায় তবে সামুতে করতে দোষ কি? ( বিবাহিত লুলদের কথা অবশ্য আলাদা।)

ডিজুস বন্দনা

১.
বিসিএস এর প্রথম পরীক্ষা শেষে রাস্তায় নেমেছি। নিজেকে একই সাথে ক্লান্ত এবং আবেগশূন্য মনে হচ্ছে ।যদিও আমি এর আগে কখনো ধর্ষিত হই নি তবুও কেনো জানি মনে হচ্ছে ধর্ষন শেষে মনের অবস্থা এই রকমই হয়। আমি ক্লান্ত পায়ে বাসের জন্য এগিয়ে যাচ্ছি।
ঢাকা কলেজের এখানে ইন্টারের ছেলেদের সিট পড়েছে। তারাও পরীক্ষা শেষে বের হয়ে এসেছে। বেশ মোটাসোটা একটা ডিজুস ছেলে হঠাৎ চিৎকার দিল- আরে তুই এইখানে?
একটা সমবয়েসী মেয়ের উদ্দেশ্যে এই চিৎকার। কাছাকাছি হতেই মেয়েটার উদ্দেশ্যে ছেলেটা হাই ফাইভের জন্য হাত উপরে তুলল।
-আরো একটা পরীক্ষা শেষ। হুরররররেরেরের......
মেয়েটা আর ছেলেটা হাই ফাইভ শেষ করেই যার যার পথে এগিয়ে গেল। আর আমি ক্লান্ত মনে এইটাই ভেবে ভেব পাচ্ছিলাম না, আমারো ত একটা পরীক্ষা শেষ হলো। আমার ওদের মত এত ফুর্তি এলো না কেন?

ডিজুস তারুন্যকে মনে হয় সেইদিনই প্রথম হিংসা করা শুরু করি।

২.
ঢাকার বাস সার্ভিসের এখন একটা সিস্টেম হলো- নির্দিষ্ট একটা স্টেশনে মালিক পক্ষের লোক থাকে। বাসগুলা একটা ক্লিপ বোর্ড সাথে রাখে। হেল্পার সেই বোর্ড নিয়ে দৌড়ে গিয়ে সই করিয়ে আনে। মালিক পক্ষের লোক সে বোর্ডে লাগানো শিডিউলে সই করে দেয় আর সীটে কতজন লোক থাকে সেটার নাম্বার লিখে দেয়। চৌদ্দ নাম্বার ( অধুনা ১ই) বাসের করে বাসায় আসছি। আজিজের কাছাকাছির কাউন্টারে চশমা পড়া এক অল্প বয়স্ক ডিজুস ছেলে সীটে কতজন আছি গুনা শুরু করল। তার চশমা দেখে সন্দেহ হলো ছাত্র। হাতে বালা ( ব্রেসলেট)এবং কানে দুল । তবে পড়ে আছে বেশ ময়লা টি-শার্ট। এইছেলে যখন সই করার জন্য পকেট থেকে জেল কলম বের করল তখনি আমি শিওর হলাম ছাত্র। আর যাই হোক, বাসের নিয়মিত স্টাফরা চার-পাচ টাকা দামের চেয়ে বেশি কলম ব্যবহার করবে না। ইন্টার পরীক্ষা শেষে সে এই কাজ করতে পারে, (মেট্রিক পরীক্ষার শেষও হতে পারে , আজকাল বুড়া ধামসি হয়ে পুলাপাইন এসএসসি দেয়)। যে ডিজুস জেনারেশন পার্ট টাইম কাজ হিসাবে এটা বেছে নিতে পারে- তাদের কিছু বলার আগে সাবধানে বলা উচিত।

০৩.
ডিজুস পাবলিক চেনার অনেক উপায় আছে। এরা ভুল ইংরেজিতে কথা বলে এবং হিন্দীতে পরস্পরকে এসএমএস পাঠায়। এদের পোষাকে পাশ্চাত্যের ছাপ কিন্তু অনুকরন করে বলিউডকে। হায়! ডিজুস বাংলা উচ্চারন নিয়ে কত হাসাহাসিই না হয়ে গেছে ব্লগের পাতায় পাতায়।

ডিজুস তরুনদের আমি কিছু কারনে আর হাসাহাসির যোগ্য বলে মনে করতে পারছি না। আমি যখন কোন তরুনকে গালি দেই বা হাস্যকর মনে করি- সেই মুহুর্তেই হয়ত আমি বুড়াদের দলে পড়ে যাই।

ডিজুসদের কি কি দোষ?


ভুল বাংলা বলে? র এর উচ্চারন ঠিক মত করতে পারে না? বাংলার সাথে ইংরেজি মিশিয়ে জগাখিচুড়ি ভাষায় কথা বলে?


- যে বাংলায় আমরা কথা বলি এখন, এই বাংলা দুইশ বছর আগেও এমন ছিল না। দুইশ বছর পড়েও বাংলা এমন থাকবে না। আমাদের ভিতর কয়জন আছে যে , পাঠ্য বইয়ে নাই ,শুধু নিজের আগ্রহে বঙ্কিমের একটা উপন্যাস পড়ে শেষ করেছে? অথচ বঙ্কিম বাংলা আধুনিক গদ্যের প্রান পুরুষদের একজন। এমনিই ত হয়। আজকের ডিজুস যদি হুমায়ুন এর বেশি বাংলা সাহিত্যের কোন খোজখবর রাখতে না চায়- অন্তত আমি ত মনে করি আমাদের অভিযোগ জানানোর কিছু নাই। বাংলা কারো পাহারায় আজকের এই জায়গায় আসে নাই, কেউ পাহারা দিয়ে এই ভাষার পবিত্রতা রক্ষারও প্রয়োজন নাই। বাংলা যদি টিকে থাকে নিজের কারনেই টিকবে, আর যদি না টিকে থাকে তবে বোবা না থেকে নতুনকে বরন করে নেয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
- ডিজুসের হিন্দি প্রীতি নিয়েও বলি। আমার মা বোন হিন্দী সিরিয়াল না খেয়ে রাতে ঘুমাতে পারে না। কিন্তু তাতে ত আমার মা বোন ডিজুস হয়ে যায় নাই। হিন্দী পছন্দ করা দোষের হলে- ইংরেজি পছন্দ করাও দোষের হওয়া উচিত। অন্যদের কথা জানি না, ফ্রেন্ডস , বিগ ব্যাং থিওরীর মত হাসির সিরিয়ালের বেশির ভাগ ডায়ালোগ আমার মুখস্থ এবং অফিসে কানে হেডফোন দিয়ে আমি শুধু এদের অডিও শুনি আর হাসি। আমি ত নিজেকে একবিন্দু কম বাঙ্গালি ভাবি না। সুতরাং কেউ যদি হিন্দী নিয়ে বাড়াবাড়ি করে, আমি কিভাবে তাকে বলতে পারি, তুমি বাঙ্গালি সংস্কৃতির অংশ না?

আধুনিকতা ব্যাপারটা বেশ রহস্যময়। কোন পোশাক আধুনিক আর কোনটা শুধু অশ্লীল সেটা আগে থেকে আচ করা সম্ভব না।
উদাহরন দেই। শাড়ি বাঙ্গালির চিরন্তন পোশাক। অথচ এমন কোন নারী এখন পাওয়া যাবে না, যে চিরন্তন বাংলার পাছা পাড় শাড়ি ব্লাউজ ছাড়া পড়ে ঘুরে বেড়াতে রাজি হবে। পাছা থেকে পাড় পায়ের কাছে নেমে এসেছে খুব বেশিদিন হয় নাই। পাছার উপর জোর দেয়া (highlighted) একটা পোশাক যদি এখন আচলের উপর জোর দেয়া পোশাকে পালটে যায় তবে সালোয়ার কামিজ থেকে মেয়েদের পোশাক টি-শার্ট আর জিন্সে চলে আসলে কি খুব অসুবিধা হবে?
ডিজুস ছেলেদের কানের রিং বহু আগে থেকেই বাঙ্গালি পুরুষ পরে আসছে। এক্ষেত্রে আসলে তাদের পুরাতনপন্থীই বলা ভালো।
অনুকরনের একটা প্রশ্ন এখানে এসে যায়। এরা ত নিজেদের স্টাইল (ফ্যাশন নয়) নিজেরা খুজে বের করছে না। অনুকরন করছে।
উনিশ শতকের শুরুতে কোন শিক্ষিত বাঙ্গালি পাশ্চাত্যের অনুকরন করে নি? রবীন্দ্রনাথের মত সৃজনশীল মানুষ অনুসরন করেছেন পাশ্চাত্যের- আর ডিজুস করলে দোষ? আমি তাদের গালি না দিয়ে বরং এই আশাই করব যে ডিজুস জেনারেশন একদিন তাদের টোন খুজে বের করে ফেলবে।

ডিজুসদের বেলেল্লাপনা নিয়ে অনেক বাক্য খরচ করা যায়। আমার কাছে কিন্তু মনে হয়, এই ধরনের কাজ বাঙ্গালিরা অতীতেও করেছে এখনো করে। সেক্স আগে গোপন ছিল একটু প্রকাশ্যে এসেছে। কখনো খারাপ লাগে আবার কখনো কখনো কিন্তু ভালোই লাগে। ধানমন্ডির রাস্তায় ল্যাম্পের আলোয় জড়াজড়ি করে পরস্পরকে চুমু খাওয়া দুই ডিজুসকে দেখে আমার কাছে কিন্তু ভালোই লেগেছে। তবে কিছু বাজে ব্যাপার ঘটছে। আগে হয়ত গোপন ক্যামেরায় ভিডিও হত না, এখন হয়। এরবেশি কিছু না।
আসল কথা হলো ডিজুসরা একেবারেই তরুন। ডিজুস নিয়ম ভাংগবে। এই নিয়ম ভাংগতে গিয়ে এরা ভালো কিছু ভেঙ্গে ফেলবে , খারাপ কিছুও ভাংগবে। তরুন বলেই এরা ভুল করবে আবার সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিবে। আর শুধুমাত্র তরুন বলেই আমি ঠিক করেছি, আমি তাদের উপর আমার আস্থা রাখব , আমি তাদের উপর আমার বিশ্বাস স্থাপন করব। আমি তাদের পক্ষে কথা বলব।


ডিজুসদের নিয়ে এই ব্লগটা অনেক আগেই লিখব ভেবেছিলাম। কিন্তু আলস্য, ১৮+ এর প্রতি আসক্তি, রম্য রচনায় অতিরিক্ত আগ্রহ- নানাবিধ কারনে সময়মত লিখতে পারি নি। আবার যখন লিখলাম তখন আবার তাড়াহুড়ো করে লিখে ফেললাম। আরেকটু সময় নিয়ে যুক্তিগুলো আরো ঘুছিয়ে নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তবুও মনের ভিতর একটা সান্ত্বনা আছে- ডিজুসের মতই আউলা-ঝাউলা লিখলাম- অন্তত থিম ত ঠিক আছে।

আমার পতনের গল্প

আমার ছোটবোনটার খুব জ্বর কয়েকদিন ধরে। থার্মোমিটার হারিয়ে গেছে। নতুন একটা কিনে আনা হল। সেটাতে জ্বর মেপে দেখি একশ ছয় আর সাতে ঘুরাঘুরি করছে। গায়ে হাত দিলে বোঝা যায় বেশ জ্বর। তাই বলে এত বেশি হতেই পারে না। আমরা ধরেই নিলাম থার্মোমিটারে সমস্যা। বাসার দুইজন ইঞ্জিনীয়ারের মাথায় একবারও এই কথাটা আসল না, ফারেনহাইটের ১০৪ আর ১০৭ এর ভিতর যা পার্থক্য তা আসলে সেলসিয়াসে দেড় ডিগ্রীর মত। এই সামান্য পার্থক্য হাতে বুঝতে পারা সম্ভব না।
ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তার ব্লাডের টিপিক্যাল টেস্ট দিল। সেখানে ESR এর মান অনেক বেশি আসছে। আমরা জানি না ESR এর মান বেশি আসলে কি হয়। ডাক্তার শুক্রবার রোগী দেখে না। তাই গুগলে সার্চ মেরে দেখলাম ESR বস্তুটা কি। যা পড়লাম তাতে আক্কেল গুড়ুম। ESR এর মান বেশি আসলে যেসব রোগ হবার সম্ভাবনা তার ভিতর আছে ক্যান্সার, রিমুটিক ফিভার... ইত্যাদি ইত্যাদি। নিজেই রিপোর্টে ব্লাড সেলের সংখ্যা দেখে বুঝলাম আর যাই হোক ক্যান্সার না। ইন্টারনাল ব্লিডিংও হচ্ছে না। ্কিছুটা হাফ ছেড়ে বাচলাম আর কি। পরের দিন আমি আর আমার বাবা অফিস থেকে ছুটি নিলাম। বুঝতে পারছি ঘটনা সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছে।
ডাক্তারের পরামর্শে পিজিতে নিয়ে anti CCP টেস্ট করে নিয়ে আসলাম। গুগলে ESR এর সার্চ দেয়ার পর নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আর যাই হোক কিছুতেই গুগলে সার্চ দিবনা। হেভি ভয় খাইছিলাম সেইবার। কিন্তু নয়া রিপোর্ট হাতে পেয়ে তর সইলো না। PDA তেই গুগল সার্চ দিলাম। ইয়াপ! পজেটিভ আসছে। শুধু পজিটিভ না, অস্বাভাবিক বেশি আসছে। মোটামুটি শিওর হয়ে গেলাম হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
তবু একবার ডাক্তারকে দেখিয়ে নিলাম। ডাক্তার ইসলামী হাসপাতালে বসেন, সেখানে ভর্তি হতে বলে দিলেন। আমরা রিসেপশনে গিয়ে জানলাম আপাতত কিছু খালি নাই, সকালে খালি হবে। সকাল মানে হোটেলের মত বারোটায় চেক আউট।
পরদিন সকালে মায়ের চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গল। আমার ছোটবোনের শরীর অস্বাভাবিক রকমের শীতল হয়ে পড়েছে। সে কথা বলতে পারছে না। কেউ ডাকলে সাড়া দিচ্ছে না। শুধু চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকছে। অতি ধীরে শ্বাস নিচ্ছে। আমার পড়িমরি করে একটা সিনএনজি ডেকে ইসলামী ব্যাঙ্ক হাসপাতালেই নিয়ে আসলাম। যে ডাক্তার তাকে দেখছে, সে ত এখানে ভর্তির কথা বলেছে।
হাসপাতালে এনে হুইল চেয়ারে বসিয়ে রেখে ভর্তির ব্যাপারে খোজ নিতে গেলাম। কেবিন নাই। ওয়ার্ড চাইলাম- সেইটাও নাই। ইমার্জেন্সীর ডাক্তার চাইলাম। আছে। নিয়ে গেলাম তার কাছে। মধ্যত্রিশের এই ডাক্তার আমাকে অবাক করে দিল। তার নাম কি আমি জানি না। তাই ব্লগে তাকে শুয়োরের বাচ্চা-১ বলেই উল্লেখ করছি।( বাকি নম্বরের গুলাও আসছে) শুয়োরের বাচ্চা-১ আমার ছোটবোনটার শরীরের অস্বাভাবিক কম তাপমাত্রা দেখল। এরপর বলল, ভর্তি সেকশনে যোগাযোগ করেন। আমরা যতবারই বলি ভর্তি হবার মত সীট খালি নাই। বারোটার দিকে খালি হতে পারে –কাউন্টার থেকে এমনই জানিয়েছে। সে ততবারই বলে যোগাযোগ করেন। এরপর শুয়োরের বাচ্চা জাস্ট হাত গুটিয়ে বসে রইল। আমরা যদি ভর্তি না হই তাহলে এখনকার চিকিৎসার কোন বিল সে নাও পেতে পারে, এই ভয়ে সে হাত দিবে না। আগে আমাদের ভর্তি হতে হবে। টাকা জমা দিতে হবে- এরপর চিকিৎসা। আমরা কাউন্টারে গেলাম। তারা জানাল খালি হতে পারে। তার চেক করে বলবে। এই ফাকে তারা জেনে নিল আমার ছোটবোন কি অপারশনের রূগী না মেডিসিনের।
পরে জানাল সীট নাই। বারোটার পর ওয়ার্ডে ভর্তি হলেও হতে পারে। আমি আর আমার বাবা তখন মাথায় আর কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। টাকা ত সমস্যা না। চিকিৎসা ত শুরু করুক। বোনের যে অবস্থা তাকে আবার গাড়িতে করে কোথাও নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে কিনা সেটাও বুঝতে পারছি না। ডাক্তাররা কেউ ত কিছুই বলছে না। ফিরেও দেখছে না। যদি কারো পায়ে ধরলে কিছু হত, আমি মনে হয় তখন পায়েও ধরতাম। কিন্তু কেউ ত পাত্তাই দিচ্ছে না। একজন মানুষ ভয়াবহ অসুস্থ, সে কারো বোন-কারো কন্যা, কেউ মাথা ঘামাচ্ছে না।
একজন রূগীর দর্শনার্থী আসল কথা ফাস করল। অপারেশনের রূগী না হলে এরা ভর্তি করবে না। খালি মেডিসিন দিলে কত টাকা আর বিল হবে? তিনিই বুদ্ধি দিলেন আশেপাশের কোন একটা হাসপাতালে আপাতত নিয়ে যেতে।
আমি বের হয়ে আসলাম। কাছেই আল বারাকাহ হাসপাতাল। সেখানে গিয়ে খোজ নিলাম সীট খালি আছে? ডাক্তার আছে? তারা জানালো আছে। ছোটবোনকে নিয়ে আসলাম।
আল বারাকাহ এর রিসেপশনিষ্ট এরপর আমাকে জানাল ইমারজেন্সীতে নিয়ে যান। আমি যতই বলি কোন একজন ডাক্তারকে ডাকেন। তার চিকিৎসা শুরু হোক। তারা ততই বলে অপেক্ষা করেন। এরা দুইজনেই তখন মোবাইলে কথা বলছে মিষ্টি করে কার সাথে জানি না। সকাল নয়টা তখনো বাজে না। মোবাইল কোম্পানীগুলার বিশেষ অফার তখনো চলমান। এরা ফোনের ফাকে ফাকে বলল ডাক্তার আসবে। দেখবে। ঠিক করবে রোগী ভর্তি করা যাবে কিনা। এরপর চিকিৎসা শুরু হবে।
এই পর্যায়ে আমার গলার স্বরে রাগ চলে আসছিলো। একটু গলা চড়াইছি । দুইজনেই মোবাইলে কথা বন্ধ করল। এরপর শুরু করল আমাকে জ্ঞান দান। এইভাবে কেনো কথা বলি আমি? সবকিছুর একটা সিস্টেম আছে। সিস্টেমের বাইরে যাওয়া যাবে না। এইটা হাসপাতাল। ধমক ধামকে কাজ হবে না।
আমার বাবা আর মা ছোটবোনকে নিয়ে অসহায় মুখে বসে আছে ইমার্জেন্সীতে। আমি বুঝলাম এইভাবে কাজ হবে না। I HAVE TO SUCK LIKE I NEVER HAD SUCKED BEFORE. আমি তাই করলাম। শুয়োরের বাচ্চা-২ আর শুয়োরের বাচ্চা-৩ কে ভজাইলাম। এরপর হারামজাদা ফোন করল। ডাক্তার আসল।


(পরে লিখব বাকিটুকু)

দিনলিপি (তারিখ-০২/০৪/০৯ )

গতপরশু সাইনেসথেটিক মানুষের কথা পড়লাম। এরা শব্দ দেখতে পায় আর রঙের শব্দ শুনতে পায়। অডিটরী আর অপ্টিক্যাল স্নায়ুর প্যাচ লেগে গেলে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। পড়ার পর থেকেই মাথার ভিতর এই আইডিয়াটা ঘুরছে। অনেকদিন আগে ব্লগে লিখেছিলাম, বিভিন্ন ছবি আমার মনের ভিতর এক ধরনের মিউজিক তৈরী করে। এখন জানি এই ঘটনা ঘটা খুব সম্ভব। প্রতি পচিশ হাজারে এমন একজন মানুষ পাওয়া যায় যে রঙের বা আলোর শব্দ শুনতে পারে...
আমাদের চারপাশে এই ধরনের মানুষ আছে। যেহেতু বাংলাদেশের বেশিরিভাগ মানুষ দরিদ্র আর ডাক্তারী সুযোগ সুবিধা অপ্রতুল সেহেতু ধরে নেয়া যায় ,এই মানুষগুলা জানে না তারা আসলে কি। আহারে!

আমার অবশ্য এই ধরনের কোন একটা মানুষের সাথে কথা বলার খুব শখ হচ্ছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি আমাকে ধারনা দেয় শব্দের রঙ কেমন হতে পারে। এই ধরনের একটা প্রোগ্রাম লেখা খুব একটা কঠিনও না। আর সমস্ত মিউজিক প্লেয়ার ভিসুলাইজেশনের অপশন দেয়। সেটা ত শব্দকে রঙ্গে পালটিয়ে দেয়াই, তাই না? আমরা শুধু জানি না, আসলেই এই শব্দের রঙ্গগুলা তাদের কাছে এই রকম কিনা।
শব্দকে আলোর সিগন্যালে প্রকাশ করা সহজ হলেও আলোকে শব্দ হিসাবে প্রকাশ করা কঠিন। আমার মনে হয় একটা শব্দ এনালাইসিস করার জন্য সহজ বিষয়। কিন্তু আলো নিয়েই হাজারো গেঞ্জাম। এইটা আরো সহজে আইডিয়া করা যায়, শব্দ ধারন করার একটা ভালো মাইক্রোফোন আর একটা ক্যামেরার দামের তুলনা করলেই।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাসাহিত্যের বিকাশ নামে একটা টপিক পড়ছিলাম। লক্ষ্য করে দেখি এই টপিকে যেইসব উপন্যাসের কথা আছে, তার অতি সামান্য আমি পড়েছি। বেশিরভাগই অচেনা। অথচ স্বাধীনতা পূর্বের বিভিন্ন উপন্যাস যেমন ক্রীতদাসের হাসি বা সূর্যদীঘল বাড়ি এইগুলা পড়া আছে। একাত্তরের দিনগুলি আমি আগ্রহ নিয়ে পড়েছি। কিন্তু ৭০ থেকে ৮৫/৯০ এই সময়ের তেমন কিছুই আমি পড়ি নাই। হুমায়ুন যে কয়টা উপন্যাস লিখেছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সে কয়টা ঠিকই পড়া আছে, কিন্তু সেটা ত শুধু হুমায়ুন বলেই। বাকিদের উপন্যাস আমার পড়ার সুযোগ হলো না কেনো? পাঠক হিসাবে আমি সর্বগ্রাসী। আমার হাতের কাছে বইগুলা আসলে আমি নিশ্চিত পড়তাম।( রশীদ হায়দারের পুতুপুতু প্রেমের ছোট গল্পগ্রন্থ পড়া আছে, কিন্তু তার মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস পড়া হয় নাই।)
কেন এমন একটা ঘটনা ঘটল? ভালো লেখকেরা কি এই সময়টায় কিছু লিখল না , নাকি এর পিছনের অন্য কারন আছে? কে জানে...

অফিসের কথাও লিখে রাখি একটু। আজকে ঢাকা যাওয়ার প্ল্যান ছিল। কিন্তু আমার বস সম্পূর্ন অকারনে আমাকে বসিয়ে রাখল সারাদিন। বিকালের শেষ বাস হর্ন দিতে দিতে আমার অফিসের সামনে দিয়ে চলে গেলো...
ক্ষমতা হাতে পেলে সেটার অপব্যবহার মানুষকে কি যে কষ্ট দেয়! আমি নিজেও একদিন হাই অফিশিয়াল হব। নিজের কাছেই তাই আজকে নিজে প্রতিজ্ঞা করে রাখলাম, অকারনে কাউকে অপেক্ষায় ফেলে রাখব না। এরচেয়ে বড় অপরাধ আর হতে পারে না।

আবার পাচটা কৌতুক (১৮+)

জামাই বউ এসেছে ডাক্তার কাছে।
ডাক্তার বলল, কি হইছে?
বউ জামাইকে দেখিয়ে রাগী রাগী মুখে কয়, সে ত ৩০০% অক্ষম হয়ে পড়ছে।
-৩০০%? বুঝলাম না...
-১০০% অক্ষম কিভাবে সেটা ত আইডিয়া করতেই পারছেন তাই না? এরপর শুনেন। সে তার জিহবা পুড়ে ফেলছে আর আঙ্গুল ভেঙ্গে বসে আছে।



বারে ছেলে মেয়ের সাথে কথা হচ্ছে।
ছেলে- তোমার নাম কি?
মেয়ে- কারমেন।
-বেশ ভালো নাম ত।
-হুমম। আমি নিজেই এই নাম নিয়েছি।
-কেন?
-আমি কার ভালোবাসি আর মেন(man) ভালোবাসি। দুইটা মিলে কারমেন।
-হুমমম।
-তোমার নাম কি?
-আমার নাম বিয়ারফাক।




এক রেড ইন্ডিয়ান বৃদ্ধ আর অল্প বয়সের তরূনী এসেছে হাসপাতালে। মেয়েটার বাচ্চা হবে। ডাক্তার বাচ্চা ডেলিভারি দেয়ার পর, বুড়াকে জিজ্ঞেস করল, এই বয়সে পোলার বাপ... ক্যামনে পারেন আপনি?
হে হে হে... পুরান ইঞ্জিনেও কাম চলে।
পরের বছর আবার বাচ্চা হলো। এইবারো ছেলে। ডাক্তার জিজ্ঞেস করল, আপনার কি স্পেশাল কোন মেডিসিন জানা আছে? ক্যামনে করতাছেন এই কাজ?
হে হে হে... পুরান ইঞ্জিন এখনো নষ্ট হয় নাই।

পরের বছর আবার বাচ্চা হবে। এইবারও ছেলে। ডাক্তার বের হয়ে এসেছে। তাকে দেখেই বৃদ্ধ বলল, হে হে হে...পুরান ইঞ্জিন কাজ করতাছে...
ডাক্তার বলল, হুমম... তয় মনে হয় তেল পাল্টাতে হবে। এইবারের ছেলে ত নিগ্রো।



জিরাফ মাত্র গাজার কল্কেতে একটান দিয়েছে, এমন সময় খরগোশ হাজির। ছিঃ জিরাফ। এইটা কি করছো?
জিরাফ কিছু বলে না।
খরগোশ বলে, এরচে চলো বনের ভিতর একটু দৌড়াদৌড়ি করি, স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
জিরাফ গাজার কল্কে রেখে দিয়ে খরগোশের সাথে দৌড়াতে শুরু করল। তারা দুইজন দৌড়াতে দৌড়াতে একজায়গায় এসে ভালুকের সাথে দেখা। ভালুক শিরায় সুই ফুটাচ্ছে।
ছিঃ ভালুক।
ভালুক চুপ করে থাকে।
- তোমার শরীরের জন্য ড্রাগ খারাপ। এরচে বরং চলো বনের ভিতর একটু দৌড়াই। রক্ত চলাচল বাড়ুক।
তিনজন দৌড়াচ্ছে...
বাঘের সাথে দেখা। বাঘ মাত্র আফিম নেয়ার জোগাড় যন্ত্র রেডি করছে।
-ছিঃ বাঘ ।
বাঘ কিছু বলে না।
-এইসব ছাইপাশ না নিয়ে, বরং একটু দৌড়াই চলো...
বাঘ এই কথা শুনেই খরগোশকে ধরে মারতে লাগল। ভালুক আর জিরাফ এসে তাকে থামাল। শেষবারের মত খরগোশকে একটা লাথি মেরে সে বলল, তুই আজকে জাস্ট বাইচ্যা গেলি।
ভালুক বলল, ছিঃ বাঘ। খরগোশ ত ভালো কথা বলছে।
হ!! হারামজাদা যখনই ইয়াবা খায়, আমারে ফুসলাইয়া নিয়া আদ্ধেক বন দৌড়ায়।



বব আর লিসার বিয়ের ত্রিশতম বার্ষিকী। দুইজনেরই বয়স হয়েছে। দীর্ঘ বিবাহিত জীবনে নানা ঝামেলা এসেছে, সেই ঝামেলা পাড়িও দিয়েছে। আজ তারা চারটি ছেলে সন্তানের বাবা-মা। সুখের জীবন।
অনুষ্টান শেষে, রাতের বেলা লিসা ববকে বলল, আজকে রাতে তুমি আমাকে একটা সত্য কথা বলবে?
বলব।
তুমি বিবাহিত জীবনে আমি ছাড়া আর কয়টা মেয়ের সাথে শুয়েছো?
বব উত্তর দিতে একটু দেরি করছে। লিসা তাই বলল, দেখো, আমরা এমন বয়সে চলে এসেছি যে একজনকে ছাড়া আরেকজন চলতে পারব না। সুতরাং সত্যি কথা বললেও সমস্যা হবে না।
বব মাথা ঝাকিয়ে বলল, শুয়েছি তিনজনের সাথে...
দুইজনেও চুপ-চাপ। গলা খাকাড়ি দিয়ে বব বলল, আমারো একটা প্রশ্ন ছিল।
কি?
দেখো, আমি আমার সবকয়টা ছেলেকেই সমান চোখে দেখেছি। কোনদিন অবিচার করিনি। আজকে তোমাকে বলি , আমার ভিতর সন্দেহ ছিল জনিকে নিয়ে। সে তার বড় তিনভাইয়ের মত না। তার শারীরিক গঠনও আলাদা। সে চিকন এবং বাকি ভাইদের তুলনায় অনেক বেশি মেধাবি। যে কেউ মাথা খাটালেই বুঝবে, জনির বাপ আর বাকিদের বাপ এক পুরুষ না। আমার খুব সন্দেহ তাকে নিয়ে। তুমি সত্যি করে বলো ত, জনির বাপ আসলে কে?
লিসা কিছুক্ষন মাথা নিচু করে থাকে, এরপর লাজুক মুখে বলে, তুমি।

কৌতুক (৩৬+)


কেন বই পড়া বা পড়াশুনা করা সেক্স করা থেকে ভালো?
তাড়াতাড়ি পড়া হয়ে গেলে লজ্জার কিছু নাই।
আপনি একা একা পড়তে পারেন ;)
আপনি চাইলে আরেকজনকে সাথে নিয়ে পড়তে পারেন। আবার গ্রুপেও পড়তে পারেন। কেউ আপনার রুচি নিয়ে প্রশ্ন করবে না।
খোলা ময়দানে শুয়ে বসে যেভাবে ইচ্ছে পড়তে পারেন।
পড়ার সময় হঠাত করে বাবা মা রূমে ঢুকে পড়লে কোন অসুবিধা নাই।
আপনি ছেলে বা মেয়ের সাথে একত্রে পড়তে পারেন।
পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়লে লজ্জার কিছু নাই।
কয়েক ঘন্টা ধরে একটানা পড়তে পারবেন।
আপনার বই সাইজে ছোট হলেও কুনো সমস্যা নাই।


রেস্টুরেন্ট। চিকেন এর অর্ডার মাত্র এসে টেবিলে পৌছল।
বব খাওয়া শুরু করবে এই সময় অয়েটার এসে বলল, স্যার । থামেন। এই ডিস আপনাকে দেয়া যাচ্ছে না।
কেনো?
জন সাহেব আমাদের নিয়মিত খদ্দের। তিনি এই ডিস খান। আজকে এইটাই শেষ ডিস। সুতরাং দয়া করে এটা নিয়ে যেতে দিন। হাউসের তরফ থেকে আপনাকে আমরা অন্য একটা ডিস ফ্রি দিচ্ছি।
জন হারামজাদা কে? সে চাইলেই আমি ডিস ফেরত দিব ক্যানো? আমি দিব না। এই চিকেন আমি খাব। জন যা পারুক করুক।
অয়েটার চলে গেলো। একটু পর এক পুলিশ অফিসার আসল। এসেই বলল, কুত্তার বাচ্চা ! আমার চিকেন দে!
বব বুঝল এর নামই জন।
সে বলল, আমার ডিস আমি খাব! কিছুতেই তোকে দিব না।
আইচ্ছা! তোকে সাবধান করে দিচ্ছি। তুই মুরগিটার যা করবি, আমিও তোর তা করমু। তুই যদি মুরগির একটা রান ছিড়স, তোর রানও আমি ছিড়মু। খবরদার! মুরগির গায়ে হাত দিবি না।
আমি মুরগির সাথে যা করমু, তুই আমার সাথে তা করবি? আইচ্ছা! দেখ শালা...এই বলেই বব মুরগির দুই পা ফাক করে, ইয়ের ভিতর দুইটা আঙ্গুল ভরে দিলো। এরপর আবার আঙ্গুল দুইটা বের করে নিজের মুখে চুষে নিল। এরপর উঠে প্যান্ট খুলল। জনের দিকে তাকিয়ে বলল, ওকে শুরু কর দেখি।



বব সিগারেটখোর। সারাদিন ফুকে চলছে।
ওর বঊ বিরক্ত হয়ে তাকে ধরে নিয়ে গেলো ডাক্তারের কাছে বিড়ি ছাড়ানোর জন্য। ডাক্তার বুদ্ধি দেয়। বব সেইকথা মত চলে। কয়দিন বিড়ি ফুকা বন্ধ থাকে। এইসময় বব রাতে ঘুমাতে পারে না। কয়েকটা রাত নির্ঘুম কাটিয়ে আবার সিগারেট ফুকা শুরু হয়। রাতের ঘুমও ফিরে আসে। এদিকে বার বার ডাক্তারের কাছে আসতে হচ্ছে।
শেষবার ডাক্তার বলল, এইবার আপনাকে আল্টিমেট বুদ্ধি দিচ্ছি। এইটা ফেইল করলে আমিও ফেইল। আপনাকে অন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
বুদ্ধিটা কি?
আপনি যখন এক প্যাক সিগারেট কিনবেন তখন দুইটা সিগারেট প্যাকেট থেকে বের করে, নিজের পাছার ফুটোতে ভরে দিবেন সামান্য সময়ের জন্য। এরপর দুইটাকে বের করে এনে প্যাকেটের অন্য সিগারেটের সাথে মিশিয়ে ফেলবেন। যেহেতু আপনি জানেন না কোন দুইটা ময়লা সিগারেট, আপনি সিগারেট খেতে পারবেন না।

দুই সপ্তাহ পর ববের বউ আসছে। বব আসে নাই।
ডাক্তার জিজ্ঞেস করলেন, কি কাজ হইছে?
বব ত সিগারেট খাওয়া বন্ধ করছে। কিন্তু এখন ত আবার পাছায় দুইটা সিগারেট না ভরা পর্যন্ত সে রাতে ঘুমাতে পারে না।



পাগলদের হাসপাতালের নার্স ডিউটিতে বের হইছে। ববের কাছে এসে দেখে বব খুব ব্যস্ত ভঙ্গিতে হাত পা চালাচ্ছে। আর মুখে পো পো শব্দ করছে। তার দোস্ত জন একটু পরপর অদৃশ্য কিছু তার হাতে তুলে দিচ্ছে। দুইজনে মিলে হেভি ব্যস্ত।
বব , তুমি কি করছো?
আমি গাড়িটা ঠিক করছি। শিকাগো যাব। জন সাহায্য করছে।
পরের দিন বব অদৃশ্য কাউকে হেভি গালি দিচ্ছে।
সাইড দে হারামজাদার দল।
নার্স জিজ্ঞেস করল, কি করছো বব?
আমি শিকাগো যাচ্ছি। তবে রাস্তায় খুব জ্যাম। কেউ সাইড দেয় না।
নার্স ববের সাথে কথা বলে এসে জনের রূমে এল। জন হস্তমৈথুন করছে।
জন কি করছো?
বব শিকাগ যাচ্ছে , এই ফাকে আমি ওর বউয়ের সাথে রোমান্স করছি।

মূল তথ্য- বাংলাদেশ আর্মি বছরে পাচ হাজার কোটি টাকা খরচ করে।

চলেন, আগে জানি বঙ্গবন্ধু বা যমুনা সেতু সম্পর্কে। টাইপ করতে সুবিধা হবে বলে আমি যমুনা সেতু এই নামটাই ব্লগের বাকি অংশে ব্যবহার করব।

যমুনা সেতু আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সিভিল স্ট্রাকচার। একজন সিভিল ইঞ্জিনীয়ার হিসাবে এই ব্রীজের প্রতি আমি সব সময় এক ধরনের ভালোবাসা বোধ করে এসেছি। বাংলাদেশের মত একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য এই আকারের (অর্থের দিক দিয়ে) কিছু তৈরী করতে বেশ সাহস আর দীর্ঘ পরিকল্পনার প্রয়োজন।
যমুনা সেতু বানাতে এর খরচ জোগাড় করতে সরকারের কালো ঘাম ছুটে গেছে। এডিবি সহ অন্যকিছু খাত থেকে টাকা এসেছে। সরকার নিজেও কিছু বহন করেছে। দেশের বহু নেতা এই সেতুর স্বপ্নই শুধু দেখে গেছেন, কাজটা শুরু করতে পারেন নাই। মাওলানা ভাসানী বোধহয় প্রথম এই সেতু তৈরীর দাবি জানান। সেটা পাকিস্তান আমলে। এরপর অনেক সরকার অনেক ধরনের স্টাডি করেছেন, কিন্তু সাহস আর পরিকল্পনা করতে পারেন নাই। উত্তরের লোকজন গ্যাস বিল আর পানির বিল ইত্যাদির সাথে আলাদা করে কর দিয়েছে যেন একটা সেতু হতে পারে। ঈদের ছুটিতে যেন তার আপনজন সহজে বাড়ি আসতে পারে।
যমুনা সেতু শেষ পর্যন্ত আমরা বানাতে পেরেছি। এরজন্য দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষা করতে হলো।

বাংলাদেশের জন্য এই সেতুর কতটুকু গুরুত্ব তা মনে হয় বলার অপেক্ষা রাখেনা। এই সেতু হবার পর আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। পরিবহনের খরচ কমেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কোন দেশের সাথে যদি আমাদের যুদ্ধ হয়, তবে তাদের প্রথম লক্ষ্য থাকবে এই সেতু উড়িয়ে দেয়া। সেতুটার কৌশলগত আর অর্থনৈতিক গুরুত্ব এতেই অনুমান করা যায়। আপনি জানেন কি- যমুনা সেতুতে সার্ভিলেন্স ক্যামেরা লাগানো আছে। যেকোন গাড়ি সেতুতে উঠলেই তার রেকর্ড রাখা হয়। আপনি যমুনা সেতুতে উঠে গাড়ি থামাতে পারবেন না। সেতুর নিরাপত্তা রক্ষার্থে এই ব্যবস্থা। অফিসিয়াল গাড়ি এই মাথা থেকে সেই মাথা গিয়ে প্রতি দুই ঘন্টায় একবার চেক করে। একটা গরীব দেশ যতটুকু ভালোভাবে সম্ভব ততটুকু চেষ্টা নিচ্ছে যমুনা সেতু রক্ষার পিছনে। ধারনা করা হয় আমাদের জিডিপির ১% শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আসে। আমার ত মনে হয় যমুনা সেতুর জন্যও ১% হয়। (আমি কোন পরিসংখ্যান খুজে পেলাম না। )
আমি জানি না আপনি কতটুকু বুঝতে পারছেন এই সেতুর গুরুত্ব। ধরে নিচ্ছি , পরিস্কার জানেন।
পদ্মা সেতু নামে আরেকটা সেতু বানানোর প্লান চলছে। এই সেতুরও অনেক গুরুত্ব। কিন্তু সরকারের হাতে টাকা নাই। পুরোটা নিজের টাকায় বানানো সম্ভব না। কয়দিন আগে পেপারে দেখেছি এডিবির কাছে আরো কিছু টাকা চাওয়া হচ্ছে। একটা যমুনা সেতু বানাতে আমাদের ত্রিশ বছরের বেশি লেগেছে- পদ্মা সেতু বানাতে কতদিন লাগবে কে জানে।
এইবার আসল কথায় আসি। বাংলাদেশ আর্মি বছরে পাচ হাজার কোটি টাকা খরচ করে। এই টাকার পরিমান আসলে কত সেই আইডিয়া আপনার আছে? নিচের হিসাবগুলো পড়ুন।
বাংলাদেশের আর্মি যদি বছরে মাত্র ২০% টাকা কম খরচ করত, তবে প্রতি চার বছরে আমরা একটা করে যমুনা সেতু বানাতে পারতাম। প্রতিটা রাজনৈতিক দল ক্ষমতা থাকার সময় একটা করে গুরুত্বপূর্ন সেতু বানিয়ে দিয়ে যেতে পারত। জিয়া সেতু, হাসিনা সেতু, খালেদা সেতু- সব সেতুই আমরা পেতাম।
আসেন এইবার একটা সুখ কল্পনা করি, দেশে আর্মি নাই। সীমান্ত রক্ষা আর পুলিশের কাজ এই দুইটা করা হচ্ছে একটা সম্মিলিত বাহিনী দিয়ে। আমরা বাকিটাকা যদি দেশের উন্নয়নে খরচ করতে পারতাম তবে প্রতি বছর একটা করে পদ্মা সেতু বানাতে পারতাম। দেশের এক কোটি লোক দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে। যদি সেতু না বানিয়ে টাকাটা সরাসরি তাদের ভর্তুকি হিসাবে দিয়ে দিতাম, তবে চল্লিশ লক্ষ লোক শুধুমাত্র সরকারের ভর্তুকির কারনে সরাসরি দারিদ্র্যসীমা থেকে বের হয়ে আসতে পারত। আর যদি এই টাকা মানব সম্পদ উন্নয়নে লাগাতাম, তবে কত লক্ষ লোক আর দরিদ্র থাকত না সেটা গবেষনার বিষয়।
এখন নিজেকেই প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশ যে উন্নতির জোয়ারে আসলে ভাসছে না, তার পিছে কি কি কারন আছে ? কে এবং কি আমাদের পিছনের দিকে টানছে?
========================
আপডেট

কমেন্ট পড়ে মনে হল অনেকে ব্লগের মূল কথাটা ধরতে পারেন নাই। আমি শুধু আমাদের উন্নতির অন্তরায় এর অনেকগুলা কারনের একটা বড় কারন আর্মি, সেইটাই বলতে চেয়েছি। এককভাবে আর্মি আমাদের পিছে ধরে রাখে নাই।

=========================
আপডেট ২
েপচাইললা বলেছেন: কোন বিতর্কে না গিয়েই বলা যায় আমরা যে আর্মি পুষছি তার দরকার আছে কি-না। প্রায় এক লাখ ত্রিশ হাজারের মত ফোর্স, যাদের কাজ শুধু সারাদিন ভাল ভাল খাওয়া-দাওয়া করা, সকাল-সন্ধা ব্যায়াম করে শরীরের শক্তি বাড়ানো এবং সেই শক্তি .......থাক। আবার মিয়ানমারের মত ছাগল এসে ঘাড়ের কাছে তড়পাবে, আমাদের সীমানা-সম্পদে হাত দেবে আমরা শুধু আঙুল চুষব আর প্যারেড করব, শক্তিবৃদ্ধি করব।

ও আচ্ছা, তারা আবার বিদেশে গিয়ে বিশ্বের শান্তি-শৃঙ্খলা দেখাশোনা করে, অনেক টাকা কামায় যদিও সে টাকা তাদের ব্যাক্তিগত আয় মাত্র। আমাদের খায় তাতে কি, রাজনীতিবিদদের মত নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন তো ঘটাচ্ছে!! যদিও পন্ডিতেরা মনে করেন এতে আমাদের দেশে ব্যপক পরিমানে টাকা আসছে- রেমিটেন্স যাকে বলে। রাষ্ট্রের খেয়ে-দেয়ে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বাইরে গিয়ে কামানো টাকায় রাষ্ট্রীয় কিংবা সার্বজনীন আয় কোথায় হয় তা আমি আর শরৎচন্দ্রীয় স্টাইলে জিজ্ঞাসা করব না । কারণ প্রশ্ন রাখলেই সেই পন্ডিতেরা উত্তর দেবেন যে কেন দেশে টাকা আসা মানেই তো কোন না কোন ভাবে অর্থনীতি শক্তিশালী হওয়া। আমিও সেই একই স্টাইলে উত্তর দেবার দরকার মনে করব না যে আর্মির কামানো টাকা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাড়ী-গাড়ি করে, বউদের বিউটি পার্লারে পাঠানোর কাজেই ব্যয় করা হয়। বাকী টাকা ব্যংকে রেখে সারাজীবন আয়েশ করার কাজেই ব্যয় হয়। উৎপাদনশীল কোন খাতে ব্যয় করা হয় না যাতে এর মাধ্যমে অন্যদেরও অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে পারে। এখানে আবারো প্রশ্ন উঠতে পারে যে সাধারণ জনগণ যখন বাইরে গিয়ে একই কাজ করে তখন তো আমরা প্রশ্ন তুলি না। উত্তর দেবার দরকার নেই যে তারা সম্পূর্ণ নিজেদের খরচে যায় এবং এখানে রাষ্ট্র বরং তাদের শোষণই করে। কিভাবে, তা পাঠক নিশ্চয়ই বিচার করতে পারবেন।

আর্মি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তায় কতখানি গুরুত্ব রাখছে, সে প্রসঙ্গে আসা যাক। আমাদের যুদ্ধ করার আছে কার বিরুদ্ধে? ভারত? বার্মা? অন্য কেউ? কেন করবে? আমাদের সম্পদ বলতে কি আছে? প্রাকৃতিক সম্পদ? এর থেকেও বেশি সম্পদ অর্থাৎ নগদ টাকা আছে সিঙ্গাপুরের, সুইজারল্যান্ডের। তাদের তো কেউ হামলা করছে না। তাহলে? ভারতের কাছেই সবচেয়ে হুমকিটা রয়েছে, মকিন্তু ভারত যদি আক্রমণ করেও আমরা কত ঘন্টা টিকব? হিসেবটি পাঠকের জন্য তোলা থাক।

আর আচরণগত দিক? থাক না সেকথা, আমরা সে কথা বলার অধিকার রাখি না। আমরা তো ব্লাডি সিভিলিয়ান।

রূম নম্বর ১১৭ পর্ব দুই

ফুটবলের কথা না বললে ১১৭ এর কিছুই বলা হবে না। রাত জেগে আমরা EPL আর champion’s league এর খেলা দেখতাম। আর দিনের বেলা সেই খেলা বিশ্লেষন করে সময় কাটাতাম।
সবার পছন্দের খেলোয়াড় ছিল। আমার পছন্দের খেলোয়াড় লিভারপুলের জেরার্ড, তাকে আদর করে আমরা গেরাড ডাকতাম। আমার ডাক নাম লিমন, এর সাথে জেরার্ড আর ল্যাওড়া মিশিয়ে আমার ডাক নাম হয়ে গিয়েছিল ল্যাওরার্ড। সুমনের নাম ছিল সুমনদিনহো... (নামেই বুঝা যায় সে কার ফ্যান)। আতিক ছিলো ল্যাম্পার্ডের ফ্যান। আর মারূফ কাকার। রূমে লম্বা বিতর্ক চলত জেরার্ড না ল্যাম্পার্ড কে সেরা সেটা নিয়ে। ফিফা গেম ত খেলতামই। গেমের কথা অন্য পর্বে লিখব।

যারা প্রচুর হিন্দী গান শুনে তারা এক পর্যায়ে হিন্দী গান গুনগুন করে গাওয়া শুরু করে। যে মেয়ে প্রচুর হিন্দী সিনেমা দেখে তার পোষাকেও চেঞ্জ চলে আসে। তেমনি ভাবেই আমরা এক পড়ন্ত বিকালে একটা ফুটবল কিনে মাঠে চলে আসলাম। কয়েকটা ১৫/১৬ বছরের ছেলের বিপক্ষে খেলা শুরু করলাম। গোলের পর গোল খাচ্ছি। একটা পর্যায়ে আবিস্কার করলাম, আমাদের প্রতিপক্ষের মূল লক্ষ্য দশ গোল দেয়া। আমরা সেদিন অবশ্য বহুকষ্টে দশ গোল ঠেকিয়েছিলাম।
এরপর নিয়মিত মাঠে যাই। প্রতিপক্ষের কাছ থেকে দশ গোল না খাওয়ার চেষ্টা চালাই। মাঝে মাঝে দুই এক গোল দেই। আমি খেলি লেফট উইঙ্গে, মারূফ স্ট্রাইকার , সুমন মিডফিল্ডে আর আতিক ডিফেন্সে। পজিশন মানে আসলে খেলা শুরুর সময় যেখানে দাড়াই আর কি। খেলা একবার শুরু হলে সবাই বলের পিছেই দৌড়াইতাম। কালে ভদ্রে একটা-দুইটা লাথি মারার সুযোগ আসত। খেলা শেষে রূমে ফিরে একজন আরেকজনকে তুমুল তুলাধুনা করি। খেলতে পারোস না তুই মাঠে যাস ক্যান? তুই নিজে কি _লটা খেলোস যে আমাকে বলতে আসোস! পাচটা গোল ত খালি তোর ভুলে খাইছি... ইত্যাদি ইত্যাদি।
এক সময় খেলার মূল ব্যাপারটা আমরা ধরে ফেলি। বুট কিনি। জার্সি আর শর্টসও কেনা হয়। বুট পড়ে ফুটবলে প্রথম লাথি মারা আমার জীবনের স্মরনীয় মুহুর্তগুলোর একটা। ( ডান পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে সমস্যা থাকায় আমি কিক নিতে পারতাম না। বুট পড়ে যেদিন কিক নিলাম, আমার মনে হয়েছিল- আমার অসম্পুর্ন পা ঠিক সেই মুহুর্তে পূর্নতা পেল)। হাড্ডা হাড্ডি লড়াই করতে শুরু করি। সবার ভিতর কমরেডশীপ গজিয়ে যায়। মাঝে মাঝেই জিতে ১১৭ তে ফিরে আসি।
আজকে পিছন ফিরে আমি বলতে পারি, এই যে মাঠে ফুটবল খেলতে যেতাম, সেটাই আমার বুয়েট লাইফের সেরা সঞ্চয়। খেলা শেষে রূমে ফিরে অনেকবার রূমমেট গুলারে গালি দিয়েছি, গালি খাইছিও। কিন্তু একটা কথা কুনোদিন তাদের বলি নাই- আজকে ব্লগের মাধ্যমে সেটা বলছি। আমি আসলে উইঙ্গে খেলতে পারতাম না। উইঙ্গার বলতে যা বুঝায় তার কিছুই আমি না। কিন্তু উইঙ্গার হওয়ার প্রতি আমার খুব দুর্বলতা কাজ করত। রূমমেটগুলা সেটা জানত। ওরা আমাকে অনেক কিছুই বলেছে, কিন্তু কোনদিন বলে নাই তুই আর উইঙ্গে খেলিস না। যা পারোস না সেইটা নিয়ে চেষ্টা করিস না। আমার দুর্বল জায়গাটায় আঘাত করে নাই। এই জন্য আমি তাদের কোনদিন ধন্যবাদ দেইনি, কৃতজ্ঞতাও জানাই নাই। আজকে জানাচ্ছি, thank u guys.


u ROCK!!!

রূম নম্বর- ১১৭ (পর্ব-১)

ফ্লোর থেকে বড় ভাইরা পাস করে চলে যাচ্ছেন। বিদায় দিতে হবে। আমাদের ওপর দায়িত্ব পড়ল অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য। অনুষ্ঠান সিরিয়াস কিছু না। ঘন্টা দুয়েক সবাইকে মাতিয়ে রাখার মত কিছু টুকটাক আয়োজন করা।
যারা বুয়েটের ছাত্র তারা জানে এই সব বিদায়ে কি হয়। অশ্লীলতা আর নিজের গোপন কথা ফাস করার আসল জায়গা হল ফ্লোর বিদায়ের অনুষ্ঠান। প্রথম হস্তমৈথুনের অনুভুতি থেকে শুরু করে প্রেম-নারী-চাকুরী-CGPA সব কিছু নিয়েই বিদায়ী ভাইদের প্রশ্ন করা যায় এবং তারা উত্তরও দেন।
সেইবার প্রথম আমরা, ১১৭ এর পোলাপাইন আয়োজনের দায়িত্ব পেলাম। এইসব অনুষ্ঠানে সব সময় একটা আইটেম থাকেই থাকে। ধরেন বক্সের উপর লেখা থাকে সবচে মোটাকে দিন , কেউ একজন কাউকে দেয়। মোটা ছেলেটা আবার কভার ছিড়লে পাওয়া যায় সবচে চিকনকে দিন এই রকম মেসেজ। আমাদের ইচ্ছে এই গেমটাই থাকবে। তবে সেটাকে অশ্লীল করতে হবে। মোটাকে দিন জাতীয় মেসেজের বদলে আমরা লিখলাম যাকে দেখে সমকামী মনে হয় বা যার সাথে রাত কাটাতে ইচ্ছে করে- এইসব হাবিজাবি। এরপরও মনে হল যথেষ্ট হচ্ছে না। আরো কিছু লাগবে। বড় কথা হলো সবার শেষে যে পাবে তার জন্য কি থাকবে?
সিদ্ধান্ত নেয়া হল যেই বাক্স পাবে তাকে একটা কন্ডম উপহার দেয়া হবে। আর সবার শেষে যে থাকবে তার জন্য থাকবে একটা কলা আর চারটা কন্ডম। তিনটা কন্ডম সে নিয়ে যেতে পারবে, আর একটাকে কলার গায়ে পড়িয়ে দিতে হবে। সবাই হাতে কলমে কন্ডমের ব্যবহার শিখবে। ফান করার সাথে সাথে শিক্ষাও হবে। হাজার হোক একটা প্রথম শ্রেনীর ইউনির ছাত্র আমরা। ফান করার সময়ও কিছু শিখতে এবং শিখাতে আগ্রহী।
সমস্যা হলো কন্ডম কিনতে কে যাবে? একজন আরেকজনকে ঠেলা শুরু করলাম। শেষ পর্যন্ত আমি আর আমার রূমমেট সুমন গেলাম কন্ডম কিনতে। নীলক্ষেতে একটা ফার্মেসির দোকানে গিয়ে সুমন বলল, কন্ডম আছে?
দোকানি বলল আছে।
তাকে অবাক করে দিয়ে আমরা বললাম, ত্রিশ প্যাকেট দেন।
এরপর আমরা অবাক হয়ে গেলাম কন্ডমের দাম শুনে। প্রতিটার দাম সাড়ে তিন টাকা করে ছিল। ( সেটা ২০০৫ এর কথা।) দোকান থেকে অনেক কিছু অবশ্য জানলাম- ডটেট আর নন ডটেড, ফ্লেভারড এইসব আরকি। দামের ভেরিয়েশন কেমন সেটাও জানলাম। প্যাকেটের ভিতর ম্যানুয়াল ছিল। রূমে এসে সবাই সেই ম্যানুয়াল মনযোগ দিয়ে পড়েছি। অনেক কিছু জানতে পেরেছিলাম সেই বার।
অনুষ্ঠান যে হিট হয়েছিল সেটা না বললেও চলে। সবার শেষে বাক্সটা পেয়েছিল আমাদের জুনিয়র একটা ছেলে। আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়ে অবলীলায় দক্ষতার সাথে সে কলার গায়ে কন্ডম পড়িয়ে দিয়েছিল।

সেইরাতেই আমরা একটা কন্ডম বেলুনের মত ফুলিয়েছিলাম। (দয়া করে জিজ্ঞেস করবেন না কিভাবে ফুলানো হয়েছিল।) সেটা নিয়ে রাত তিনটার দিকে সিনিয়র ভাইদের দরজায় ঝুলিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। পরদিন ভোরে হাউকাউ। সিনিয়ররা আমাদের দিকে আঙ্গুল তুললেন। কিন্তু আমাদের যুক্তি গত রাতের অনুষ্ঠানে সবাইকে কন্ডম দেয়া হয়েছে গিফট- যে কেউ করতে পারে।

কৌতুক- ব্রেস্ট স্ট্রোক সাতার

০১
মেয়দের ব্রেস্ট স্ট্রোক সাতার প্রতিযোগিতা চলছে। সেখানে বিশাল বক্ষা এক তরুনী অংশ নিচ্ছে। হুইসেল দেয়ার পর সবাই ঝাপিয়ে পড়েছে পানিতে।
সুইমিং পুলের এক মাথা থেকে আরেক মাথায় গিয়ে সবাই চলে এসেছে। শুধু বিশাল বক্ষা তরুনী ডুবে আর ভেসে ভেসে অনেক কষ্টে সাতরিয়ে যাচ্ছে। সে আগাচ্ছে একটু একটু করে। বাকি প্রতিযোগিরা সাতার শেষ করে তোয়ালে দিয়ে পানি শুকিয়ে নিচ্ছে। আর তরুনীটি সাতরিয়েই যাচ্ছে।

বলা বাহুল্য টিভি ক্যামেরা নিয়ে সাংবাদিকরা চলে এসেছে। এরা চায় ত ফানি জিনিস। আর এই মেয়ে মাত্র (!) আধাঘন্টা দেরি করে ফেলছে সাতার শেষ করতে।
যাই হোক এক সময় সে সাতার শেষ করে। সাংবাদিক খুব আগ্রহ নিয়ে তার দিকে মাইক্রোফোন বাড়িয়ে দিয়ে প্রশ্ন করে-
-মিস। ব্রেস্ট স্ট্রোক সাতারের এই আইটেমে প্রথম প্রতিযোগি তিনমিনিটে সাতার শেষ করেছেন। আপনার পয়ত্রিশ মিনিট লাগার কারন কি?

তরুনী হাপাতে হাপাতে উত্তর দিল, আমি সেই রকম মানুষ না যারা হেরে গিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে চিটিং এর অভিযোগ আনে। কিন্তু আমি শিওর , আমি বাদে বাকি সবাই সাতারের সময় হাত ব্যবহার করেছে।


০২
এক সাত আট বছরের ছোট ছেলে এসেছে ফার্মেসীতে।
এক প্যাকেট whisper ultra দেন ত।
ফার্মাসিস্ট জিজ্ঞেস করলেন, কার জন্য?
আমার জন্য না। আমার বোনের জন্য। আমার বোনটার বয়স পাচ হয়ে গেছে। সে এখনো সাইকেল চালাতে পারে না। টিভিতে দেখলাম এইটা পড়লে সাইকেল চালানো, দৌড়াদৌড়ি সব কাজ সুন্দরভাবে করা যায়।

রহিম মিয়ার কান্না এবং আট বছরের ময়না

০১
ময়নার বাপ রহিম মিয়া বাজারের সবার সামনে গালে থাপ্পড় খেলো। গরিব মানুষের ইজ্জতের দাম নাই। এই রকম থাপ্পড় সে কত খেয়েছে। কিন্তু এইবার ময়না তার সাথে ছিল। সে তার নিরীহ চোখ দুইটা তুলে বাপকে দেখল। কোনদিন যা হয় নাই আজকে তাই হলো। রহিমের চোখে পানি চলে আসল।
তাকে থাপ্পড় মেরেছে বাজার কমিটির চেয়ারম্যান। রহিম মিয়া মাথা নিচু করে চোখের পানি লুকাতে চেষ্টা করল।
-তোরে যদি আবার বাজারের কোনায় ভিক্ষে করতে দেখি, ত খবর আছে।
রহিম মাথা নিচু করেই ঘাড় নাড়ল। সে আর ভিক্ষে করবে না।
-মাথা নাড়সা ক্যান? মুখে বলোন যায় না?
কমিটির চেয়ারম্যান আরেকটা থাপ্পড় মারল। থাপ্পরের পরপরই ময়না তার বাপের হাত ধরে ফেলল। তার হাতে একটা শিশুর হাতের চাপ পড়ার পরই চোখের পানি যেন আরো বেড়ে যেতে লাগল।
-আর ভিক্ষ্যা করমু না।
চেয়ারম্যান আবার থাপ্পড় মারলেন একটা। এরপর বললেন, মনে থাকে যেন। চোরের গুষ্ঠি সব কয়টা।

রহিম মিয়া থাপ্পড় খাওয়া শেষে ময়নাকে নিয়া বাজারের একটা চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ল।

০২
রহিম মিয়ার কপাল খারাপ। ময়নার সামনে সে আবার থাপ্পড় খেলো। সে ভিক্ষে করা থামায় নাই। কমিটির চেয়ারম্যান বাজারে তাকে ধরে ফেলেছেন।
-তোর শিক্ষা হয় না?
রহিম মিয়া আবার কয়েকটা থাপ্পর খেলো। ময়না থাপ্পরের এই সময়টাতে তার বাপের হাত ধরে রাখল। এতে রহিম মিয়ার চোখে পানি চলে আসল। গভীর মমতা নিয়ে ময়না তার বাপের হাত ধরে আছে।
থাপ্পড় দেয়া শেষে, ময়না তার শান্ত চোখ দুইটি তুলে চেয়ারম্যানকে বলল, বাপেরে আর মাইরেন না।

০৩
গরীবের ইজ্জতের দাম নাই। রহিম মিয়ারও ইজ্জত নাই। কতবার কত মানুষের মার খেলো। কখনো চোখে পানি আসে নাই। ছোটবেলায় সবজি চুরি করত । ধরাও পড়ত মাঝে মাঝে । মালিক দিত মার। সেই মার খেয়েও কোনদিন রহিম কাদে নি। দোস্তরা বলত, রহিমের দিল পাত্থরের লাহান। চোক্ষে পানি আহে না।
সেই পাত্থর দিল রহিম মিয়া ইদানীং দুই-তিনটা থাপ্পড় খেয়েই কেদে দিচ্ছে। রহিম মিয়া বুঝতে পারে, ময়না তার পাশে থাকলে কোথা থেকে জানি তার লজ্জা চলে আসে। ব্যথার জন্যে সে কাদে না। লজ্জা পেয়ে কাদে।

০৪
রহিম মিয়া ঠিক করে আর ভিক্ষে না। সে রিকশা চালাবে । ময়নার মুখের দিকে তাকিয়ে সে ভাবে, ইজ্জতের সাথে বাচতে হবে। এইভাবে চলা যায় না ।

০৫
রহিম মিয়া কতদূর যেতে পারে রিকশা চালিয়ে তা এখনই বলা যায় না। সে একদিন রিকশা গ্যারাজের মালিক হতে পারে। এরপর হয়ত সি.এন.জি কিনে সেই ব্যবসা শুরু করবে। এরপর একদিন বাস সার্ভিস চালানো শুরু করবে। রহিমের উত্থান হতে পারে।
আবার এমন হতে পারে, ময়না মারা যাবে আগামী বছর। বাসের নিচে পড়ে। ছোট মেয়েরা ত রাস্তার পাশে খেলে। বাসের নিচে কি সে পড়তে পারে না? রহিম মিয়া আবার ভিক্ষের জীবনে ফিরে যাবে। কমিটির চেয়ারম্যান মাঝে মাঝে তাকে থাপ্পড় দিবে। তবু সে ভিক্ষে থামাবে না।

০৬
আমি গভীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি। ময়নার কি হয় সেটা জানার জন্য। রহিম মিয়া ভিক্ষে করা থামায় নাকি সেটা জানার জন্য।

আমার বিয়ে পরবর্তী জীবনের জন্য বিয়ের আগেই ভেবে রাখা তিনটা নিয়ম

গত কয়দিন ধরে বিয়ে পরবর্তী জীবনের জন্য আমি তিনটা নিয়মের কথা ভাবছি।
নিয়ম-

প্রথম নিয়ম- বিয়ের পর আমার যেভাবে ভালো লাগে সেভাবেই, ছোট থেকে বড় সবকিছু থাকবে ও চলবে, নিজের বুদ্ধি এবং বিবেচনায় যা ভালো মনে হয় সেইভাবেই সমস্ত কাজ করব, যতক্ষন না দ্বিতীয় এবং তৃতীয় নিয়ম দ্বারা প্রথম নিয়ম বাধাগ্রস্থ হয়।

দ্বিতীয় নিয়ম- বিয়ের পর আমার স্ত্রী আমার সকল কর্মকান্ডের সমালোচনা,
পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং ইচ্ছে করলে বাতিলের সিদ্ধান্ত, আমাকে জানিয়ে বা না জানিয়ে নিতে পারবে। তাকে কোন রূপ জবাবদিহিতার ও আমার তরফ হতে প্রতিবাদের সম্মুখীন হতে হবে না। নির্বিচারে তার নির্দেশ এবং অনুরোধ পালনে আমি সচেষ্ট থাকব যতক্ষন না তা তৃতীয় নিয়মের বিরোধী হবে।

তৃতীয় নিয়ম- বাব-মার আদেশ শিরোধার্য, তারা যা বলবেন, তাই হবে।

(এইখানে প্রাসঙ্গিক কারনেই জানিয়ে রাখি, আমার ছোটভাই -বোন দুইটা এই তিনটা নিয়মের বাইরে থাকবে।)

আসিমভের রোবটিক্সের তিনটা সূত্রের মত আমার এই নিয়ম।


===========================


আমি মনে হয় না কোনদিন আমার বাবা-মা আর ভাই-বোন দুইটাকে ছেড়ে আলাদা থাকতে পারব। একটু চিন্তায় আছি। যদি বউ চায় আলাদা থাকতে? তাই ভেবে চিন্তে একটা নিয়ম দাড় করালাম।যে মেয়েকে বিয়ে করতে পারি- বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে মেয়েটাকে জানিয়ে দিব এই তিনটা নিয়ম। এরপর মেয়ের সম্মতি থাকলে আমি আছি, সে রাজি না হইলে রাতে কোল বালিশ জড়াইয়া শুয়ে থাকব।

একটি সাধারন দিনের বিবরন

ভোর রাতে আমার ছোটবোনটাকে নিয়ে একটা দুঃস্বপ্ন দেখলাম। আমি জীবনে যত দুঃস্বপ্ন দেখেছি তার বড় একটা অংশ আমার এই বোনটাকে নিয়ে।ঘুম ভেঙ্গে যাবার পর দেখি ভোর হয়নি এখনো। আর ঘুম আসল না। পিডিএ তে জোকস পড়া শুরু করলাম। পাচ মিনিট পরই ফজরের আজান দিল। তখন বুঝলাম আসলে ভোর মাত্র হচ্ছে। ভোর রাতে দুঃস্বপ্ন দেখলাম। মনটা কেমন কেমন করতে লাগল।

জোকস পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে মূসা সাহেব এসে ঘুম থেকে ডেকে তুললেন। তার একটা চিঠি টাইপ করতে হবে। খুব নাকি জরূরী। দাত না মেজেই উঠে গেলাম অফিসে। চিঠি টাইপ করে দিয়ে এসে দাত মাজলাম। নাস্তা করলাম।

এরপর আবার অফিসে দৌড়। টেন্ডারের কাজগুলা শেষ করতে হবে।
দুপুরের দিকে খেতে গেলাম বিয়ের দাওয়াতে।কলোনীর এক কর্মচারীর ছেলের বিয়ে। তাকে আমি চিনি না। ছেলেকে চিনি না। যে মেয়েকে বিয়ে করছে তাকেও চিনি না। কিন্তু দাওয়াত পেয়েছি। আমাকে যেতেই হবে। সকালেই জসিম সাহেব জানালেন, উপহার হিসাবে ক্যাশ টাকা দেয়া যাবে। আমি শিওর না কত টাকা দেয়া উচিত।

মূসা সাহেব জানালেন, পাচশ টাকা দেয়া উচিত। চিনি না, জানি না এমন কাউকে একবেলা খাওয়ার জন্য পাচশ টাকা দিতে আমার মন সায় দিল না।

আমি বললাম, তিনশ টাকা দেই? মূসা সাহেব হেসে ফেললেন। তিনশ টাকা আবার দেয়া যায় নাকি?
দুপুরের দিকে একটা খামে আমি পাচশ আর মূসা সাহেব পাচশ টাকা ভরলাম। একবার ভাবলাম, মূসা সাহেবের চোখ এড়িয়ে আমার পাচশ টাকার নোটটা সরিয়ে সেখানে তিনশ টাকা ভরে দেই। কিন্তু সেটা করার সুযোগ পেয়েও করতে পারলাম না।

বিয়ের অনুষ্ঠানে বেশ খাতির পেলাম। কিন্তু যখন আসার সময় খামটা দিতে গেলাম, খারাপ লাগল। পাচশটা টাকা শেষ। আমার অল্প বেতনের চাকুরিতে এইটা অনেক টাকা।
যাইহোক, দুপুরে শুয়ে শুয়ে ভাবলাম, আগামী চল্লিশ দিন বাজার থেকে রিকশায় না এসে হেটে আসব। এতে দুইশটাকা সেভ হবে। মনটাতে একটু সুখ আসল।

দুপুর শেষে আবার অফিস। শনিবার সরকারী ছুটির দিনেও এত কাজ করতে হচ্ছে তাই মেজাজ খারাপ ছিল। বিকালে জসিম সাহেবকে নিয়ে বের হয়ে গেলাম। আর কাজ করব না। জসিম সাহবে বললেন কাছেই বনবিভাগের নার্সারী আছে। সেখান থেকে ফুল গাছের চারা কেনা যাবে। গেলাম সেখানে। সরকারি কাজকর্ম যা হয় আরকি। গাছ-টাছ কিছুই নাই। বনবিভাগের উপর আমার আর কোন ভরসা থাকল না।

সেখান থেকে গেলাম পুরান একটা জমিদার বাড়ি দেখতে। জমিদারদের বাড়ির নাম দালাল বাড়ি। সেই রকম জৌলুস ছিল তাদের এককালে। ভাঙ্গা বিল্ডিঙ্গগুলো তার অতীত গৌরবের সাক্ষী। এতবড় পুরানো স্ট্রাকচার আমি আগে দেখিনি। াড়িটা দেখেই প্রথম যে কথাটা মাথায় এলো- এতবড় ছাদ ধরে রাখার জন্য বীম আছে কি? নাকি ফ্লাট প্লেটের কোন একটা আদিম সংস্করন ব্যবহার করেছে? এতবড় ছাঁদ ধরে রাখার জন্য কলামের সাইজ কেমন ছিল? এই প্রশ্নগুলা মাথায় আসায়, নিজের কাছেই ভালো লাগল। আমি সবার প্রথমে একজন সিভিল ইঞ্জিনীয়ার।

সুন্দর একটা ছোট পুকুর। তার পাড়গুলা বাধাই করা ছিল একসময়। তার চিহ্ন পেলাম। কিন্তু চারিদিক হতে দখলকারীরা এগিয়ে আসছে। দিনে দিনে জমিদার বাড়ির সীমানা ছোট হয়ে আসছে। জসিম সাহেব দেখালেন পুরাতন বাড়িটার নিচে সুড়ংগ আছে, পালিয়ে যাবার জন্য। ( এই বাড়িটা নিয়ে পরে ব্লগ লিখব )

সেখান থেকে গেলাম বাজারে। বাজার থেকে হেটে আসার বদলে রিকশায় আসলাম। টাকা সেভ করার কথা মনে ছিল না।

আবার অফিসে এসে কিছু কাজ করলাম। রাতে নেটে কিছুক্ষন ঘুরাঘুরি করে শুয়ে পড়লাম।



========================
আরেকটা বছর গেল। আরেকটা ভেলেন্টাইন ডে পার হয়ে গেলো। আমার কিছু করা হলো না।

কৌতুক- ফাদারের গাধা রোগ ;)

একজন ফাদার চার্চের জন্য কিছু টাকা তুলতে চান। তিনি বিশপকে জিজ্ঞেস করলেন, কিভাবে কিছু টাকা আয় করা যায় বলুন ত! চার্চে কিছু সংস্কার কাজ করা হবে। কিন্তু ফান্ডে যথেষ্ট টাকা নাই।
বিশপ বুদ্ধি দিলেন, শহরে ঘোড়ার রেস হয় প্রতি সপ্তাহে। একটা ঘোড়া কিনে সেখানে অংশ নাও।
পরের সপ্তাহেই ফাদার গেলেন ঘোড়া কিনতে। কিন্তু ঘোড়ার দাম শুনে তার চক্ষু চড়ক গাছে। বেচারা আর কিছু কিনতে না পেরে একটা গাধা কিনে নিয়ে চলে এলেন।
শহরে এসে ভাবলেন, কিনছি যখন গাধা, সেটাকেই রেসে লাগাই। কি আর এমন হবে যদি হেরে যাই।
রেসের ময়দানের সবাইকে অবাক করে দিয়ে গাধাটা ঘোড়ার রেসেই তৃতীয় হয়ে বসল। শহর জুড়ে গাধার প্রশংসা আর তার কীর্তির আলাপ হচ্ছে। পত্রিকাগুলাও পরদিন ফলাও করে খবর ছাপাল, Father'S ASS SHOWS!!!


ফাদার গাধাটাকে খুব ভালো ভালো খাবার দেয়া শুরু করলেন। পরের সপ্তাহেও রেসে অংশ নিলেন গাধা নিয়েই। এইবার তার গাধা রেসের প্রথমেই। পরদিন বিশাল ছবি সহ সংবাদপত্রের শিরোনাম- FATHER'S ASS OUT IN FRONT!!!


ফাদার আগ্রহ নিয়ে বিশপের সাথে দেখা করতে গেলেন। ফান্ডে বেশ ভালো টাকা জমা হচ্ছে গাধাটার কারনে। এদিকে গাধাটা আবার শহরের হিরো হয়ে গেছে। কিন্তু বিশপ পেপারের হেড লাইনগুলো পছন্দই করেন নাই। তিনি ফাদারকে হুকুম দিলেন, বদমাশ গাধাকে আর রেসে দিবেন না। ফাদার তাই করলেন।রেসে কভার করতে আসা সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করল গাধাটা রেসে নাই কেনো? সহজ-সরল ফাদার বলে দিলেন বিশপের নির্দেশেই এই কাজ করা হয়েছে। রেসিং ডে এর পরের দিন পেপারে আসল- BISHOP SCRATCHES FATHER'S ASS


বিশপ ত এইবার পুরা ক্ষেপা। তার কড়া নির্দেশ এলো ফাদারের কাছে। গাধাকে সরাও। ফাদার আর কি করবেন? এত শখের গাধা তার। কাছের এক সন্ন্যাসী আশ্রমে তার পরিচিত এক নান থাকেন। তিনি গাধাটা নানকে দিয়ে দিলেন। পরের দিনে পেপারে আসল, NUN HAS BEST ASS IN TOWN!!! এইবার পেপারের হেডিং দেখে বিশপ ফিট হয়ে পড়ে গেলেন। জ্ঞান ফিরে আসার পর নানকে খবর পাঠালেন, দয়া করে গাধাটা বিক্রি করে দেন।
নান তাই করলেন। নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিলেন গাধাটা। পেপারে খবর চলে আসল, NUN SELLS ASS FOR 1000 Taka.

বিশপের মাথা এইবার আউলিয়ে গেছে। পেপারগুলা যা শুরু করছে!!!! গাধাটার হাত থেকে যেভাবেই হোক মুক্তি পেতে হবে। তিনি নানকে নির্দেশ দিলেন, আপনি গাধাটা আবার কিনে নেন। এরপর সেটাকে জঙ্গলে ছেড়ে দেন। এরসাথে আমাদের চার্চের যেন কোনরূপ সম্পর্ক না থাকে। নান গাধাটা কিনে ফেরত নিলেন। তারপর বনে নিয়ে ছেড়ে দিলেন। সংবাদ সম্মেলন করে জানালেন, আমার গাধাটার সাথে চার্চের কোনরূপ সম্পর্ক আর নাই। সেটাকে মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। কেউই আর গাধাটার মালিক নয়। পরেরদিন পেপারের হেডিং- NUN ANNOUNCES HER ASS IS WILD AND FREE.
সেইদিন সকালে হার্ট এটাকে বিশপ মারা গেলেন।

কৌতুক- এলিয়েনের পৃথিবী ভ্রমন

দুই এলিয়েন আসছে পৃথিবীতে।ধরা যাক তাদের নাম এক্স আর ইয়। দুইজন মরুভূমিতে এসে নেমেছে। চারিদিকে কিছু নাই। দুইজন হাটা শুরু করল প্রানের খোজে।
অনেকক্ষন হাটার পর তারা একটা পেট্রোল স্টেশনে এসে পৌছল। কোন একটা কারনে সেইদিন স্টেশনে কেউ নাই। নজলসহ পাইপটা মেশিনের গায়ে প্যাচিয়ে রেখে চলে গেছে। খা খা চারিদিক।
এরা দুইজন এগিয়ে এসে, তেল নেয়ার পাম্পটাকে অভিবাদন জানিয়ে বলল, পৃথিবীবাসীকে স্বাগতম।
বলাবাহুল্য, পাম্প কোন উত্তর দিলো না। এক্সের মেজাজ খারাপ হওয়া শুরু হইছে। সে আবার বলল, পৃথিবীবাসীকে শুভেচ্ছা।
উত্তর দেয় না। কথা বলিস ক্যানো? এই বলে এক্স কোমড়ে রাখা আগ্নেয়াস্ত্র বের করল। ইয় তাড়াতাড়ি এসে এক্সের হাত চেপে ধরে বলল, দোস্ত! ফায়ার করিস না।
এক্স কথা শুনবে না। সে ফায়ার করবেই। কিছুক্ষন ধ্বস্তাধ্বস্তির পর এক্স ফায়ার করে দিল।
সাথে সাথে বিরাট বিস্ফোরন। তারা দুইজন উড়ে গিয়ে পড়েছে দূরে। হাচড়ে-পাচড়ে উঠে দাড়াইছে দুইজনেই। আহত হইছে, তয় সিরিয়াস কিছু না।
এক্স হাপাইতে হাপাইতে ইয় কে জিজ্ঞেস করে, দোস্ত, তুই ফায়ার করতে মানা করছিলি, ক্যামনে বুঝলি আগে থেইক্যা?
ইয় কয়, গ্যালাক্সি ঘুইরা আমি কিছু শিখি আর না শিখি, একটা জিনিস শিখছি। যে ব্যাটা তার পুরুষাংগ নিজের শরীরে দুইবার পেচাইয়া এরপর সেইটা কানে গুজে রাখতে পারে, ওর লগে পাঙ্গা নিতে নাই।

তোরা চিন্তা করিস না। আমি আছি ।

ব্লগে যখন ঢুকি তখন যে কয়জনের সিরিজ নিয়মিত পড়তাম তাদের একজন কৃষক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমের কাহিনী লেখা শুরু করেন। সিরিজের প্রথম ব্লগটাতে আমার কমেন্ট আছে।
লম্বা সময় নিয়ে এবং অগোছালোভাবে লেখা সিরিজ। কিষানী এসে মাঝে কিছুদিন লিখে তারপর লাপাত্তা। আমার মনে হয় কিষানীর লেখা পর্বগুলা যখন শুরু হল, তখন থেকেই আমি সিরিয়াসলি সিরিজটা পড়া শুরু করি। তাদের হিংসাও করা শুরু করি। দুইজনের ব্লগের লেখনীতে একটা সুন্দর সময়ের ছবি আছে- যেটা দেখে ঈর্ষা গোপন করা কঠিন।
মাত্র গত বৃহপতিবার জানলাম কৃষক আর কিষানীর মিল হয় নাই। তারা দুইজন সারা রাত জেগে জোৎস্না দেখে নাই। মাদক এসে দুইজনকে আলাদা করে দিয়েছে।
আমার মন খারাপ হল। প্রথম থেকেই আমার ধারনা ছিল- দুইজন খুব সুখী একটা পরিবারের অংশ। বিয়ের দশম বিবাহ বার্ষিকীতে একজন আরেকজনকে নিয়ে প্রেমের গল্পগুলো সবাইকে বলছে।

এই নিয়া আর কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে না। বরং ভাবতাছি আমার দোস্তের কথা। ব্যাটায় হিন্দু। প্রেম করতাছে মুসলমান মেয়ের সাথে। আমাদের চারপাশের মানুষের যেই চাপ, এই দুইজন পীরিত টিকায়ে রাখতে পারব? নাকি আলাদা হইয়া যাইব?
আমি এর আগে একবার ফাইজলামি কইরা বলছিলাম, তোরা ভাবিস না,যতদিন নিজের পায়ে দাড়াবি না, আমি তোদের পালমু। আমি যা খামু তোদের নিয়া খামু। আমার লগে রাখমু।
এইবার ঠিক করছি ওর ভার্সিটিতে যাইয়া দুইজনেরে এই কথাটাই আবার কমু। সিরিয়াসিলি কইয়া আসমু। তোরা চিন্তা করিস না। পুরা দুনিয়া তোদের বিরুদ্ধে গেলেও আমি আছি তোদের সাথে।

কৌতুক ( আমার নিজের জন্য,আপনার ভালো না লাগলে ...)

রাতের মাতলামি শেষ করে পরদিন ঘুম থেকে উঠেছে বব। মাথা ব্যাথা করছে তার। গতকাল রাতে কি হইছে , কি করছে কিছুই মনে পড়ছে না।

বিছানা থেকে মাথা তুলেই দেখে পাশে দুইটা এসপিরিন আর এক গ্লাস পানি। বড়ি দুইটা খেয়ে উঠে পড়ল। তার জামা কাপড় ইস্ত্রী করে রাখা। তার পাশে একটা লাল গোলাপ। ঘরের সব কিছু বেশ পরিস্কার-সাধারনত এর পরিস্কার থাকে না।

ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় সে আবিষ্কার করে তার চোখের নিচে বড় কালো দাগ। গতকাল কি কেউ ঘুষি মেরেছে? তার কিছুই মনে পড়ে না। অফিস পার্টিতে এত মদ খাওয়া উচিত হয় নাই।

দাত মাজতে বাথরুমে ঢুকে দেখে আয়নায় লিপিস্টিক দিয়ে একটা চুমু আকা। নিচে নোট


হানি,
তুমি ঘুমাচ্ছো দেখে আর জাগালাম না। নাস্তা রেডি আছে। আমি গ্রোসারি সেরেই আসছি। আজকে রাতে তোমার জন্য স্পেশাল রান্না হবে।
তোমার সোনাবউ

বব ডাইনিং টেবিলে গেল। তার পোলা নাস্তা করছে।
-বাপধন, গত রাইতে কি হইছিলো? আজকে সকালে দেখি সব সাজানো গোছানো, ঘর ত এত ভালা থাকে না।
-তুমার কিছু মনে নাই?
-না!
-তুমি রাইত তিনটার সময় আসছো। ঘরে ঢুকার সময় দরজায় বাড়ি খেয়ে তোমার চোখের নিচে দাগ পড়ল।
-আইচ্ছা। তারপর?
-আছাড় খেয়ে পড়ে তুমি আমাদের কফি টেবিলটা মাঝ বরাবর ভেঙ্গে ফেলছো। এরপর ড্রইং রূমের কার্পেটে একগাদা বমি করলা।
-এরপরও ঘরের সব ঠিক রইলো ক্যামনে?
-যখন তুমারে মায়ে বিছানায় নেয়ার জন্য জড়িয়ে ধরছে, তখন তুমি মায়রে কইছো, মাগী ছাইড়্যা দে আমারে! আমি বিবাহিত ।


==========================
এইটা অনুবাদের মুড নাই। ইংলিশেই দিলাম-

Burford is checking out of a hotel when suddenly he has to take a shit real bad. The toilet in his room isn't working, so he bolts down to use the lobby Men's Room, but all of the stalls are occupied, so he runs back up to his room, and in desperation, he drops his pants, uproots a plant, and takes a shit in the pot. Then he puts the plant back in the pot and leaves. Two weeks later, he gets a postcard from the hotel that says,

"Dear Mr. Burford... All is forgiven. Just tell us...where it is?"

আমার নির্বাচন অভিজ্ঞতা

উপজেলা নির্বাচনের আগের দিন আমার বাবা ফোন করে জানালেন , তোমার ফুফা ত নির্বাচনে দাড়াইছে। বাড়ি যাবে?
আমার দাদা-নানা সব বাড়িতেই আমার এমন চমৎকার ইমেজ যে কোন কিছুর জন্য আমাকে কোনদিন ডাকা হয় না। আমার ফুফা ভাইস চেয়ারম্যান হতে চান- সেইটা আমি জানি নির্বাচনের আগের দিন।

যাই হোক বাবার সাথে গেলাম দাদা বাড়ি। বাড়ির কাছের প্রাইমারী স্কুল হলো কেন্দ্র। আর আমাদের প্রাইমারী টার্গেট ফুফাকে এইখানে পাস করাতে হবে।

দাদাবাড়ি হাইওয়ে থেকে বেশ দূর। হাইওয়ে থেকে নেমেই আমার বাবা ছোট একটা চায়ের দোকানে ঢুকে বসে গেলেন। আমাকে বললেন, আসো চা খেয়ে নেই।
চায়ের দোকান সেই রকম ময়লা। একটা বেঞ্চ ছাড়া আর কিছু নাই। আমার বাবা চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলে, এইটা আমাদের নিজের দোকানের মতই।
আমি মনে মনে বলি সেইটাই কারন। এমনিতে ত এইসব দোকানের সামনে দাড়াতে পর্যন্ত চাও না আর এখন খাচ্ছো চা।


রিকশা নিয়ে যেতে হয়। ত্রিশ মিনিট লাগে। রিকশায় উঠেই বাবা রিকশাওয়ালাকে বলল, তুই অমুকের ছেলে না?
-হ।
-তোর বড় ভাইটা বিয়ে করছে?
-গত বছর।
- এখনো কি মাছ বেচার কাজ করে?
-করে, লগে অন্য ব্যবসাও শুরু করছে।

আমি অবাক। একজন রিকশাওয়ালেরে শুধু চিনেনই না, তার ভাই কি করে সেটাও আমার বাবার মনে আছে। কিন্ত আমি নিশ্চিত বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার রেজাল্ট কি বা আমার পজিশন কত ছিল সেটা তিনি বলতে পারবেন না।
রাস্তায় যেতে যেতে দুনিয়ার সব মানুষের খোজ নিতে লাগলেন। আমার অবাক ভাবটা কমে আসল। ভেবে দেখলাম বাবা তার শৈশব আর কৈশোরের জায়গায় আসছেন। তার সব মনে থাকবে। অতি তুচ্ছ ঘটনাও তার স্মৃতিতে উজ্জ্বল থাকবে।
আমি চাদপুরে বড় হইছি। আমার মনে হয় বিশ বছর পরেও শহরের প্রতিটা ঘাস আমি চিনতে পারব।

কপাল ভালো ছিল এইবারের দুইটা নির্বাচনে আমার ডিউটি পড়ে নাই।প্রথম নির্বাচনে(জাতীয় সংসদ) আমি সারাদিন রূমে ছিলাম। এত কষ্ট করে "না " ভোট দেয়ার জন্য কেন্দ্রে যেতে ইচ্ছে করল না। ইন্ডিয়ার একটা বিজ্ঞাপনে দেখলাম ইলেকশনের দিন যদি আপনি ভোট না দেন- তবে আসলে আপনি ঘুমিয়ে আছেন। কথাটা পুরাপুরি সত্য না। কারন সেইদিনের সারাটা আমি ঘুমিয়ে কাটাতে পারি নাই।



উপজেলার সময় বুঝলাম নির্বাচন কাকে বলে।

নির্বাচনে সাধারন মানুষ যে কি করে সেটা দেখে আসলাম। টাকা আসলে প্রার্থীরা যতটা না ছড়ায় তারচে দেখি পাবলিক টাকা নেয়ার ব্যাপারে বেশি উৎসাহী। বাজারে এসে তাদের টার্গেট থাকে কার কাছ থেকে বিকালের নাস্তাটা আদায় করা যায়। এরপরের টার্গেট সিগারেট বা বিড়ির একটা প্যাকেট জোগার করা যায় কিনা। কেউ কেউ আছে স্মার্ট। চা খায় না, বিড়ি নেয় না। তাদের কথা ক্যাশ দেন। ক্যাশ না পেলে মুখের উপর বাজে কথা বলে দিবে। তাদের ভাষায় এইটা উচিত কথা। নির্বাচন শুরুর কিছুদিন আগে থেকেই এদের নবাবের চাল শুরু হয়। যে টাকা দিবে তার সাথে দুদন্ড কথা বলবে। টাকা না দিলে নাই। আবার সবার কাছ থেকেও টাকা খাচ্ছে। কিছু মানুষ যে আলাদা সেটা সত্য। কিন্তু কে জিতবে কে হারবে সেটা এরা ঠিক করতে পারে না। সবার যে একটা মাত্র ভোট।

আমাকে চিনে না গ্রামের সবাই। বলা বাহুল্য আমিও বেশিরভাগ মানুষকে চিনে না।অথচ এই অপরিচিত মানুষগুলা ময়লা দাত দেখিয়ে হেসে বলে টাকা দেন ত।
-কিসের জন্য?
-বিমানে ভোট দিমু টাকা দেন। তাদের বাক্য সংযম আর কথা সোজা করে বলা দেখে আমি অবাক আর মুগ্ধ। আসলেই ত কথা বাড়িয়ে লাভ কি? টাকা দেই-ভোট কিনি। নির্বাচনে জিতলে এই টাকা বহুগুনে তুলে নিয়ে আসা যাবে। এইটা তারাও জানে, আমিও জানি। যেই জিতুক এই মানুষগুলা ভবিষ্যত পালটায় না। তাই এরাও যতটা পারে নগদ নিয়ে নেয়।

আমার ফুফাকে কেন্দ্রে পাস করাতেই হবে। দাদা জানালেন, গ্রামের সব বাড়িতে মোটামুটি টাকা দেয়া হয়েছে। রাতে আমি আর বাবা বাজারে গেলাম। যাকে পাইছি তাকেই ধরে এনে চা খাওয়ালাম। গোল্ড লীফ বিলাচ্ছে বাবা দেদার হস্তে। এক কথা -একটু দেইখেন যেন পাস করতে পারে।

দাদা হজ্জ্ব করে আসার পর দুনিয়াদারীতে আর অত সময় দেন না। তিনিও দেখি দৌড়াচ্ছেন। আমার দাদী বিশাল পাতিলে ভাত রেধে রেখেছেন। দল বেধে ছেলেরা আসে,খায়, রেস্ট নেয়। এরপর আবার ক্যাম্পেইনের দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। হূলস্থূল কাজকারবার। আমি শুধু সাথে থাকছি। এইটুকুই।
পরদিন নির্বাচন। আমি কেন্দ্রের কাছের চায়ের স্টলে আশ্রয় নিয়েছি। যেই ভোট দিতে আসে তাকেই চা খাওয়াচ্ছি। গভীর রাতে ছেলেরা দ্বিতীয় দফা টাকা দিয়ে আসছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে। সকালে আর টাকা দেয়া হবে না।
কেন্রের সামনে দাড়িয়েও আমার কাছে একজন টাকা চাইল। ভোট দিতে আসছি। চা খামু না। টাকা দেন।


আমি যা বুঝে আসলাম, টাকা থাকলে আপনি নির্বাচনে জিতবেন। টাকা না থাকলে আপনি সৎ নাকি অসৎ -কোনো ব্যাপার না। হার নিশ্চিত।
যতদিন আমরা শিক্ষিত জাতি না হতে পারলাম, ততদিন নির্বাচন একটা আমেজ, একটা উৎসব, একটা খেলা।

ষড়চিতো হড়োড় কৌতুক

আমি শুনেছি ব্লগারদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত যে আর হরর গল্প লেখা হবেনা। কিন্তু কৌতুকের ব্যাপারে এই রকম কিছু বলা হয় নাই। তাই খুব ছোট আর অচলীল ( শব্দটা সুদীপ্ত থেকে শেখা) কৌতুক লিখলাম। আমি ঠিক জানি না এই কৌতুকটা লেখা উচিত কিনা।


===================

ভূতপ্রেতদের বার কাম রেস্টুরেন্ট । সেখানে ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দানবটা হলো বার টেন্ডার কাম বেয়ারা । বারে বেশ ভিড়। এলাকার ডাইনী, পেত্নী, দানব, জ্বিন, ভূত সবাই খুব ফূর্তি করছে।

ড্রাকুলা সাহেব আসছেন। তিনি সব সময়ই কাউন্ট। ছোটলোক ভূত পেত্নীর সাথে তিনি বসেন না। তাকে আলাদা করে নিয়ে বসাল ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দানবটা।
-স্যার কি খাবেন? আটাশের এক যুবতীর দুই ব্যাগ রক্ত আছে। বি পজেটিভ। দিব স্যার এক বাটি?
- হুমম! না থাক। তুমি বরং এক বাটি গরম পানি নিয়ে আসো।
-স্যার!কিডনীর একটা ভালো স্যুপ আছে।
-না থাক। তুমি গরম পানি নিয়ে আসো।
ড্রাকুলা পকেট থেকে একটা ব্যবহৃত সিনোরা স্যানেটারী প্যাড বের করতে করতে বলল, আজকে চা খাব।

আমার ধর্মচিন্তা

আমার বাসা থেকে কোনদিন ধর্মপালনের জন্য জোরাজুরি করা হয় নাই। বাবাকে দেখতাম রোজার সময় খুব নামাজ পড়তে আবার রোজা শেষে ঢিলেমি শুরু করতে। আদতে বাসার সবাই ধর্মবিশ্বাসী ছিল। তবে ধর্ম বিষয়ে আমাদের কারো বাড়াবাড়ি ছিল না। উদাহরন দেয়া যায়, আমার নানা হজ্জে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। তার অতি কষ্টে জমানো সম্পদের সামান্য একটু খরচ করেও তিনি হজ্জে যেতে আগ্রহী ছিলেন না। সৌদিদের হজ্জ্ব ব্যবসার প্রতি তার এই ঘৃনা মোটামুটিভাবে ধর্মবিদ্রোহের সমান।

ক্লাস সিক্সের দিকে আমি নামাজ পড়া শুরু করি। বাসায় মাসিক মদীনা থেকে শুরু করে বেহেশতি জেওর- প্রচলিত সব ধর্মীয় বইই ছিল। আবহাওয়া বেশ অনুকূল ছিল। কিন্তু তীর ছেড়ে সামান্য দূরে গিয়েই তরী ডুবে গেল। বেহেশতের তীরে আর আমি পৌছতে পারলাম না।

তরী ডুবা শুরু করার কোন একটা একক কারন নাই , সুতরাং একটা নির্দিষ্ট দিন থেকেই অবিশ্বাসের শুরু না। সেভেনে থাকার সময়ও নামাজ পড়ি নিয়মিত। মসজিদে ঈদের জন্য কেনা নতুন জুতা হারিয়েও আসি।


আমার ধারনা পিউবার্টি শুরুর সময় থেকেই আমার সন্দেহের সূত্রপাত।

প্রচুর হাবিজাবি বই পড়ি। নাইনে থাকতেই সেবা ছেড়ে দিয়ে ক্লাসিকে ঝুকে পড়ছি। রবি-শরৎ-বঙ্কিম শেষ। পড়াশুনার পরিধি বাড়ে সেই সাথে বাড়ে অবিশ্বাস। ছোট ছোট প্রশ্ন আসে যার উত্তর পাই না। হুজুরদের চরিত্র দেখে ইসলাম সেরা জীবন ব্যবস্থা সেটা মানাও কষ্টকর হয়ে পড়ে।

সত্যিকার অর্থে বিজ্ঞান-যুক্তি-গনিত এই সম্পর্কে আমাকে আগ্রহী করে তুলেন নটরডেমের নিমাই স্যার। তার স্পর্শে এসে আমি পুরা অবিশ্বাসের জগতে চলে আসি।

এরপর বুয়েটে এসে নাস্তিকতা ফলাই। ক্লাসে হযরতকে নিয়ে একটা জোকস বলায় সবাই মিলে ঠিক করে আমাকে ক্যাফের সামনে পিটানো হবে। বড় ভাইয়েরা আমার ক্লাসমেটকে সতর্ক করে দেয় যেন আমার সাথে না মিশে। তাবলীগের হুজুরদের সাথে দুর্ব্যবহার শুরু করি। দুই হুজুরকে সমকামি বলে সন্দেহ করি - সবাইকে সেটার জানান দেই।

একটা পর্যায়ে এসে আমি অনুভব করি- অনেক হইছে। মানুষকে তাক্ত করে লাভ নাই। এরচে নিজেই ধর্ম প্রচারের কথা ভাবি। দিনের পর দিন, ঘন্টার পর ঘন্টা সময় নষ্ট করি প্ল্যান করে। ধর্মের মূল দর্শনটা ধরার চেষ্টা করি। বাইবেল, কোরআন সিরিয়াসলি পড়া শুরু করি।

একসময় ধর্মপ্রচারের সিদ্ধান্তও বাদ দেই। অবিশ্বাসের জগতে আমি ইতঃস্তত ঘুরি। কোন উদ্দেশ্য খুজে পাই না নাস্তিকতার বা ধর্মবিশ্বাসের। দুইটাই সমান মনে হয়। হুজরদের সুখী মুখ দেখে হিংসা হয়। বিশ্বাস ঠকায় বটে তবে বিনিময়ে সে অনেক ভালো বস্তু দেয়।

আমি এরপর বিশ্বাসের জগতে ফিরে আসার চেষ্টা করি। কয়েকবার চেষ্টা করেছি। ফিরে আসতে পারি না। ভাবলাম নামাজ পড়া শুরু করি। একসময় বিশ্বাস চলে আসবে... কাজ হয় নাই।
আমার সমস্যা হল জাকির নায়েককে দেখলে হাসি আসে, হুজুরদের অতি মাত্রায় স্বল্পজ্ঞানী মনে হয়- কাউকে পাই না যে আমাকে পাপ থেকে ফিরিয়ে স্বর্গে নিয়ে যাবে ।

আমি একা, আমার বিশ্বাসহীনতার জগতে। "কিছু নাই" - এরচেয়ে বড় সত্য আমি খুজে পাই নাই।

১৮+ কৌতুক

একশহরে দুই জমজ ভাই ছিল। বব আর জন। বব বিয়ে করেছিল লিসা নামের একটা মেয়েকে। কাকতালীয়ভাবে লিসা নামে জনের একটা ফিসিং বোটও ছিল। আরো কাকতালীয়ভাবে ববের বউ লিসা যেদিন মারা যায় ঠিক সেইদিন জনের নৌকাও ডুবে যায়।

কয়েকদিন পর, শহরের এক বৃদ্ধা মহিলা জনের সাথে দেখা হলো। জন তার নৌকা লিসাকে হারিয়ে খুব একটা দুঃখ পায় নাই। এদিকে মহিলা ভেবেছে এইটা বব। ববের বউ মরায় সে নিশ্চয় কষ্টে আছে।
মহিলা বলল “আহা! কিরে পোলা, লিসার জন্য কষ্ট হয় রে?”
জন বলল, তেমন একটা হয় না।
কি বলিস ছোকরা!
আরে বলবেন না, যেদিন থেকে লিসা আমার হলো- সেদিনই আমি টের পেলাম আসলে লিসা বেশ খারাপ মাল। তার নিচটা বেশ ময়লা- পচা মাছের গন্ধ পেতাম। যেদিন আমি প্রথম তার ওপর উঠলাম- সে ছ্যাড়ছ্যাড় করে পানি ছেড়ে দিল। আমার মনের অবস্থাটা বুঝেন! তার পিছন দিকে তাকালে পরিষ্কারভাবেই একটা খাজ দেখা যেত। আর সামনের দিকের ছিদ্রটা যত দিন যেতে লাগল ততই বড় হতে লাগছিল। তবু তাকে দিয়ে আমার কাজ চলে যাচ্ছিল। কিন্তু শহরের চার যুবক এসে তার জীবন শেষ করে দিল। এই চাইর বদমাশ আসছিল একটু ভালো সময় কাটানোর জন্য। শহরে ভালো কিছু না পেয়ে এরা লিসাকেই পছন্দ করে ফেলল।আমি ত লিসাকে ভাড়া দিতে রাজি না। হাজার হোক লিসা আমার। কিন্তু হারামজাদাগুলা লিসার জন্য আমাকে টাকা সাধতে শুরু করল। আমি জানি লিসার ক্ষমতা নাই একসাথে চারজনকে নেয়ার- কিন্তু ওরা টাকা দিয়ে আমাকে রাজি করিয়ে ফেলল।


একটু দীর্ঘশ্বাস ফেলে জন বলল, ওরা চারজন একসাথে লিসার ওপর চড়ে বসতেই লিসা শেষ বারের মত পানি ছেড়ে দিয়ে ...... শেষ হয়ে গেলো।
জনের কথা শেষ হতেই বুড়ি মাথা ঘুরে পড়ে গেলো।

ছিল মর্মবেদনা গাঢ় অন্ধকারে- ০৩

ধরা যাক যুবকের নাম ওয়ালিদ। সে বুয়েটের ছাত্র।আমার আট বছরের সিনিয়র হবেন। এখনো পাশ করতে পারেন নি। প্রচন্ড হাসিখুশি। উদার। আধুনিক চিন্তা চেতনা। খুবই মিশুক ধরনের। তার সাথে কথা বলতে আপনার ভালো লাগবেই।

ইনি একজন মেয়ে পটানো বিশেষজ্ঞ। মেয়েদের সাথে শুচ্ছেন, তাদের ছবিও তুলে নিয়ে আসেন। ভিডিও করেছেন কিনা জানি না। কোনদিন দেখাননি।তবে ব্ল্যাক মেইল করেন না।(আমার জানা মতে।)

হলে থাকাকালীন সময়ে রূমে আসতেন মাঝে মাঝে। আমাদের রূমের সব কয়জনের নারী বিষয়ক ধারনায় উনি প্রভাব ফেলেছেন।



ওয়ালিদ ভাইয়ের কর্মকান্ডের কিছু উদাহরন দেই।
০১
একদিন উনি রুমে আসলেন পেন ড্রাইভ নিয়ে। তাতে কোন একটা সুন্দরী
প্রতিযোগিতার বারোজন মেয়ের ছবি আছে। আমাদের বললেন, এদের ভিতর একজনকে পছন্দ হইছে। তার সাথেই হবে।
আমরা বিশ্বাস করি না।
তিনি বললেন, এইখানে বারোজনের ভিতর তার একজন বান্ধবী আছে। আগে তার বান্ধবীকে আমার বোন বানাতে হবে। এরপর সব হবে..
মাসখানেক পর তিনি বললেন, হইছে। ছবি দেখবা? আমি বললাম থাক! দেখার দরকার নাই।
তিনি একটু হেসে বললেন, ওর বান্ধবীর সাথেও হইছে।
তাকে না আপনি বোন ডাকলেন?
তিনি কথা না বলে হাসেন।

০২
একবার ছবি নিয়ে আসলেন ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া মেয়ের। আজিজ মার্কেটের কোন এক বন্ধুর রূমে তারা দুইজন সময়(!) কাটিয়েছেন একত্রে। কিছু ছবি দেখালেন যেগুলো মেয়েটাকে খুব একটা এক্সপোজ করে না।
মেয়েটার মুখ কি যে নিস্পাপ! দেখলেই মন খারাপ হয়ে যায়। এই মেয়ে...ওয়ালিদ ভাই- মেলাতে কষ্ট হয়।
আমাদের ভিতর থেকে একজন প্রশ্ন করল, এই মেয়েটার সাথে এরপর কি হবে?
ওয়ালিদ ভাই হাসিমুখে বললেন, এক সপ্তাহের ভিতর মেয়েটা বুঝে যাবে যে কার সাথে সে পড়েছে। এরপর আর কোনদিন আমার সাথে কথাও বলবে না।


তার কর্মকান্ড এর আর উদাহরন দিতে ইচ্ছে করছে না।

প্রায় প্রতিমাসে তিনি একটা মেয়েকে পটান। একবার কোন একটা মেয়ের সাথে শুয়ে পড়ার পরপরই তিনি অন্য কাউকে খুজতে থাকেন।

মেডিকেল, বুয়েট বা ঢাকা ভার্সিটির মেয়েদের দিকে তিনি হাত বাড়ান না। এদের জন্য নাকি বেশি সময় দেয়া লাগে। এখানে উল্লেখ করে রাখি তিনি বিবাহিত- বুয়েটের এক জুনিয়র মেয়েকেই বিয়ে করেছেন। বিয়ের পরও তার কাজ থামেনি।

একদল ভার্জিন যুবকের সামনে উনি যখন তার উদ্দাম সঙ্গমের উল্লেখ করেন, তখন সেই যুবকদের মনের অবস্থা সহজেই অনুমান করা যায়।

আমার ভিতর কি ওয়ালিদ ভাইয়ের জীবনটা পাবার লোভ এসেছিল?

এসেছিল... নিশ্চিতভাবে এসেছিল। আমারো ইচ্ছে করছিল এই সুযোগ নেই। খুব একটা কঠিন নয় এই সুযোগ নেয়া।

কিন্তু আমি নেইনি। আমার রূমের আর কেউই এইধরনের কাজে জড়িয়ে পড়েনি। আমাদের পাশের রূমের জুনিয়রদেরও এই ধরনের কিছু কাহিনী বের হল। কিন্তু আমরা রুমের সবকয়জন fifa আর warcraft নিয়েই পড়ে থাকলাম। একটা আফসোস হয়ত ছিল। কিন্তু সেটা কখনই বড় কিছু ছিল না। আজকে আমি আফসোস করি না যে গেম খেলে আমার বুয়েট লাইফ শেষ হয়েছে। আমার ধারনা আমাদের ভিতর কেউই করে না। গত ঈদের পরদিন সবাই ল্যাপটপ নিয়ে আমাদের বাসায় এসে পড়ে- সারারাত গেম ফাইট হয়। :)

ওয়ালিদ ভাই আমার উপর ছাপ রেখে গেছেন। তার দিকভ্রান্ত জীবন থেকে আমি শিখেছি। গত আট-দশ বছরে তিনি বড়জোড় দেড়শ মেয়ের সাথে কিছু করেছেন। কিন্তু খেসারত হিসাবে নিজের জীবনটা নষ্ট করে ফেলেছেন। এই দেড়শজন মেয়ের থেকেও নিজের জীবনটা অনেক দামী। সেইটা তিনি বুঝেন নাই। আমার তার জীবনটা পাবার লোভ আছে, কিন্তু তারচেয়েও বেশি লোভ নিজের জীবনটার জন্য। দেড়শ-দুইশ মেয়ের জন্য একটা মানব জন্ম খরচ করা যায় না।

আমি ভার্জিন। সেটা নিয়ে একসময় কিছুটা আফসোস ছিল। এখন আর নাই। আমি জানি আমি ঠিক কাজ করছি। দোস্তরা বোকাচোদা বলে ডাকুক- আমার তাতে কিছু যায় আসে না।

(অবশ্য মাঝখানে নিজের sexual orientation নিয়ে সন্দেহে পড়ে গিয়েছিলাম। সেটা নিয়ে পরের পর্বে লিখব)

আরেকটা ছেলের সাথে পরিচয় হয়েছিল যার কাজ সহপাঠিনীদের সাথে সঙ্গম করা। তার কথা লিখলাম না। এক ওয়ালিদ ভাইয়ের কথা লিখতেই নিজের কাছে খারাপ লাগছে- তার কথা লেখার কোন মানে হয় না।

কৌতুক ( কিছুটা অশ্লীলতা দোষে দুষ্ট, এর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী)

বাঙ্কে বেশ বড় একটা লাইন। ডেস্কে বসে যে মেয়েটা টাকা ও চেক জমা নিচ্ছে সে কানে হেডফোন লাগিয়ে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছে। ফাকে ফাকে কাজ করছে। লাইনে যারা দাঁড়িয়ে আছে সবাই বিরক্ত।

একজনকে দেখে মনে হল তার বিরক্তির সীমা নাই। একটু পরপর বলছে, আর কত দাঁড়িয়ে থাকব? ভালো লাগেনা।

এক পর্যায়ে তার ধৈর্যচ্যুতি হল। সে লাইন ভেঙ্গে সবার সামনে এসে মেয়েটাকে বলল, তাড়াতাড়ি করেন। আমি সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না।
মেয়েটা হেডফোন সরিয়ে বলল, লাইন ধরেন।
-বালের লাইন ধরব আমি।
-বাজে কথা বলবেন না।
- মাগী তুই আমার চেক নিবি কিনা সেটা বল।
-খবরদার। আপনি বাজে ভাষা ব্যবহার করছেন। আমি ম্যানেজারকে ডাকতে বাধ্য হব।
-কুত্তী! যা তোর ম্যানেজারকে ডাক।
মেয়েটা ম্যানেজারকে ঠিকই ডেকে আনল। ম্যানেজার এসেই বলল, খারাপ ভাষায় কথা বলছেন কেনো? এইখানে সবাই সম্ভ্রান্ত লোক। আজেবাজে লোকদের এই ব্যাঙ্কে কোন কাজ থাকে না। এখন বলুন আপনার সমস্যা কি?
-আমি দশ কোটি টাকার এই চেকটা জমা দিতে এসে গত দেড় ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।
ম্যানেজার চেকটা হাতে নিল। টাকার অঙ্ক দেখল। ছোট্ট একটা শিস দিল। এরপর বলল, আপনি চেক নিয়ে এসেছেন, আর এই মাগী আপনার চেক জমা নিচ্ছে না?

প্রমোদে ঢালিয়া দিনু মন, তবু প্রান কেনো কাদে রে...

সৃষ্টিকর্তা সবার জন্য সমান সুখের ব্যবস্থা রাখেন। যখন কাউকে দুনিয়ায় পাঠানো হয়, তখন তার প্রাপ্য সুখের একটা অংশ তার সাথে দিয়ে দেয়া হয়। বাকি অংশগুলো পৃথিবীর অন্য মানুষের হাতে দিয়ে দেয়া হয়। যারা সৌভাগ্যবান এবং একই সাথে অতি দুর্ভাগা- তাদের সুখের বড় অংশটা বিপরীত লিঙ্গের কাউকে দিয়ে দেয়া হয়। ফলে দুনিয়াতে এসে ছেলেটা যদি অই মেয়েটা বা মেয়েটা যদি সেই ছেলেটাকে খুজে পায়, সারাজীবন সুখী থাকে। এরা সৌভাগ্যবান কেননা, আনন্দের সবটুকু এরা একজনের কাছেই পেয়ে যাচ্ছে। এরা একই সাথে দুর্ভাগা কেননা যদি ফিরিয়ে দেয়- তাদের সুখী হবার আর উপায় থাকে না। আবার অনেকের সুখটুকু অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে সবার মাঝে দিয়ে দেয়া হয়। এরা দুনিয়াতে এসে মানবতাবাদী হয়। পৃথিবীর এক কোনে জন্ম নিয়ে হয়ত আরেক কোনের মানুষের জন্য নিজের জীবন শেষ করে।


তবে বেশিরভাগ মানুষের সুখ বড় বড় কয়েকটা টুকরা করে দিয়ে দেয়া হয়। এই টুকরাগুলোর মালিক হয় সাধারনত বউ, ভালো একটা বাড়ি, উচ্চবেতনের চাকুরি ইত্যাদি ইত্যাদি।


সবাই নিজের সুখ বা আনন্দের অংশটুকু খুজে পায় না। কেউ কেউ পায়। সবাই খুজতেও যায় না। প্রাসাদে থেকেও যখন কেউ সুখী হয় না- তখনও সে বুঝতে পারে না তার সুখের অংশগুলো এই প্রাসাদে নাই। অন্য কোথাও আছে। গৌতম যেদিন বুঝতে পারল তার আসল আনন্দ কোথায়- সেইদিনই সুন্দরী বঊকে ঘরে ফেলে চলে এলো বাইরে।

আমার সুখের অংশগুলো কার কাছে আছে? আমি জানি না।


=====================================

গতকাল সাইট পরিদর্শনে গেলাম। সরকারের জমিতে ভূমিহীনরা ঘর তুলে বাস করছে। তাদের কিছু নাই । কামলা খাটে, রিকশা চালায়।

আমার কুড়েঘর দেখে সেখানে থেকে যেতে ইচ্ছে করছিল। খড়ের কুড়েঘরের প্রতি আমার এত ভালোবাসা কেন সেটা পরিষ্কার না। সম্ভবত ছোটবেলা থেকেই কুড়েঘরের ছবি আকতে আকতে ঘর বললে এইটাই বুঝি। আর শুকনো খড়ের গন্ধের চেয়ে চমৎকার আর কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না। উঠানের এক কোনায় মাচা। সেখানে লাউ গাছ। চালের এক কোনায় সীম গাছ। আর ঘরটার পিছনে দুইটা কলাগাছ। তাদের লম্বা পাতাগুলো যেন আমার উদ্দেশ্যে হাত নাড়ছে।
চলে আসো... চলে আসো...

একটা বিষন্ন কুড়েঘর,তার মলিন পোষাকের শক্তিশালী অধিবাসীরা,ঘরের কাছেই ঢেড়সের খেত , উঠানে শুকাতে দেয়া পাটি -আমাকে আবার মনে করিয়ে দিল আমি জীবন চিনি না। আমি কিছুই জানি না হয়ত সুখ কাকে বলে।


আমার বার বার মনে হচ্ছিল একটাই কথা- আমার সুখের অংশগুলো কার কাছে আছে?

ঠিক এই মেয়েটিকেই ভালোবাসা যেত

ঠিক এই মেয়েটিকেই ভালোবাসা যেত-
তার লম্বা চুল নিয়ে কবিতা হত
অন্তত একশত।
অথবা তার নীরব হাসি
মোলায়েম ঠোটের ফাকে সাদা দাত
অনর্গল বকে যাওয়া নেড়ে বা হাত-
ডান হাত কেন জানি কখনো নাড়ায় না সে।
আহা! এই মেয়েটাকে নিয়ে কবিতা লেখা যেত-
শুধু ভালোবেসে।

এই মেয়েটার সাথেঙ্করা যেত মান-অভিমান
পড়ন্ত বিকালে এই মেয়েটাকে ভেবে-
গাওয়া যেত খুব আধুনিক হিন্দী গান।
তার মুখ ভালোবেসে-
যাওয়া যেত দোজখে-
হাসিমুখে।
ঠিক এই মেয়েটিকেই ভালোবাসা যেত-

ছিল মর্মবেদনা গাঢ় অন্ধকারে -০২

প্রথম যেদিন আমি গোপন ক্যামেরায় ধারন করা বাঙ্গালী যুবক আর যুবতীর
সঙ্গমের ভিডিও দেখলাম আমি খুব শকড হয়েছিলাম।

রশীদহলে থাকার সময় আকু(তার নাম আকাশ- আমরা আদর করে আকু
ডাকি) আমাকে প্রথম খবর দেয় - দোস্ত ঢাকা ভার্সিটির মেয়েদের ভিডিও বের হয়েছে। সে খুব উত্তেজিত। ভিডিও এর ফাইল জোগাড় করেছে। সে এখনো দেখে নাই। তবে দেখবে শীঘ্রই।

পরদিন তার সাথে দেখা। চিমসা মেরে আছে।
-কি হইছে তোর? ভিডিও দেখছোস?
-দোস্ত! আমি খুব শকড।

আমি দেখি এর বছরখানেক পর। আমারও একই কথা মনে হয়েছিল। আমি খুব শকড।

আকুকে তখন জিজ্ঞেস করা হয় নাই কেন সে শকড ছিল। আমি কি কারনে এতটা ধাক্কা খেলাম সেটা বলছি।

থ্রী এক্স দেখে দেখে সঙ্গমের ক্ষেত্রে আমার ধারনা ছিল এতে খুব আবেগ কাজ করে। মুভি গুলাতে মেয়েটার পরিতৃপ্তির দৃশ্য এবং শব্দগুলো আমাকে এই ধারনা দিয়েছিল।আমি জানি যে পর্নোমুভি আদতেই মুভি। কিন্তু আমি ভার্জিন, আমার ত অভিজ্ঞতা নাই। তাই হয়ত ভিডিওকে বিশ্বাস করেছিলাম অবচেতনে। সঙ্গমের ক্ষেত্রে কি হয় সেটা জানার আরেকটা সোর্স ছিল গল্প ও উপন্যাস। অনিমেষ আর মাধবীলতাও সঙ্গম করে- সেটাতে প্রেম ছিল গভীর। হয়ত মনের কোনায় এই বিশ্বাসটাও গাঢ় ছিল যে, বাঙ্গালীর সঙ্গমে প্রেম উপস্থিত থাকে।

গোপন ক্যামেরায় ধারন করা দৃশ্যে দেখি আবেগশূন্য কাজকারবার। প্রেম তার উপস্থিতি কোনভাবেই জানান দেয় না। বাঙ্গালী নারীদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ছিল। হৈমন্তী বা শরৎচন্দ্রের নায়িকারা আমার চারপাশে আছে- এই ধরনের একটা ধারনা মনজগতে ছিল।

সঙ্গমের দৃশ্য আমি আগেও দেখেছি কিন্তু বাঙ্গালীর গোপন ক্যামেরায় ধারন করা দৃশ্য দেখে যে খুব অবাক হলাম আর কষ্ট পেলাম তার কারন বোধহয় এটাই।

হস্তমৈথুনে যে মেয়রা থাকে বা পর্নো মুভিতে- আমি তাদের কখনই বাস্তবের বাঙ্গালি মেয়েতে রুপান্তর করিনি । কিন্তু গোপন ক্যামেরায় দেখার পর মনে হল- আমি একি হেরিলাম?
বিকালেবেলায় দুই দোস্ত যখন নাস্তা করতে যাই ক্যান্টিনে, পাশাপাশি বসে চা খাই। তখন যে রকম ঠান্ডা থাকি- সঙ্গমের প্রতিটা সময়েই ছেলে আর মেয়েটা সেইরকম উত্তাপহীন। দুইজন মিলে চা খাওয়ার মত স্বাভাবকভাবেই সঙ্গম করছে। আমার ধারনা- এই অতি স্বাভাবিকত্ব পুরা ভিডিওটাকে খুবই বিশ্বাসযোগ্য করে ফেলেছে।

বাঙ্গালী মেয়েদের ভিতর আমি মনে মনে যে দেবী খুজে বেড়িয়েছিলাম- সেটা ভেঙ্গে গেছে। সেদিনের এই কষ্টটা আমি আজও অনুভব করি।

এরপর কত দেখলাম। সঙ্গম চলাকালীন সময়েই এক নারীর চিপস খাওয়ার দৃশ্যে কত হাসলাম। আর কখনো কষ্ট লাগেনি। বাঙ্গালী নারীরাও শুধু নারী-
এইধারনা মনে গজিয়ে গেছে। পরবর্তীতে যেসব ছেলে প্রচুর মেয়ের সাথে শুচ্ছে- এমন দুএকজনের সাথেও কথা হয়েছে। পরবর্তী পর্বে সেটা লিখব।

১৮+ কৌতুক - মায়েরা কিভাবে সব টের পায়?

জন নয়া ফ্লাটে ঊঠছে। ওর বাবা-মা আসছে দেখতে কি অবস্থা। এসে দেখে সে একা থাকে না, তার মেয়ে রুমমেট আছে একজন।লিসা নাম তার। মেয়েটা যাকে বলে সেই রকম সুন্দরী আর রমনীয়।
ওর মার সন্দেহ হলো,-
-বাবা! তোমরা দুইজন কি লিভ টুগেদার শুরু করছো?
-না মা। সে আমার রুমমেট। এর বেশি কিছু না।
-সে তোমার সাথে রাতে থাকে না?
-না। ফ্লাটে ত দুইটা বেড। এই দেখ সে এইটাতে থাকে আর আমি থাকি পাশের রূমে।
-হুম! ভালো।

পরের সপ্তাহে লিসা জনকে জানালো তার খুব দামী ঘড়িটা পাওয়া যাচ্ছে না। যেদিন জনের বাবা-মা এসেছে তার পরদিন থেকেই ঘড়িটা গায়েব। জন ভাবল এটা নিয়ে মাকে ফোন করা যায় না। তাই সে একটা চিঠি লিখল।

মা!তুমি যাওয়ার পরদিন থেকে লিসা তার ঘড়িতা খুজে পাচ্ছে না। আমি বলতে চাই না তুমি ঘড়িটা নিয়েছো, আমি এটাও বলতে চাইনা যে ঘড়িটা তুমি নাও নি। কিন্তু কথা হল, তুমি যাওয়ার পরদিন থেকে ঘড়িটা কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না।

জনের মা উত্তর দিল, বাবা।আমি বলতে চাই না লিসা তোমার সাথে রাতে শোয়, আমি এটাও বলতে চাই না, লিসা তোমার সাথে রাতে শোয় না। কিন্তু কথা হল, লিসা যদি নিজের খাটে রাতে শুইত, তবে চাদরের নিচে ঘড়িটা পেয়ে যেত।

ছিল মর্মবেদনা গাঢ় অন্ধকারে -০১

জীবনের যে কয়টা বিষয়ে আমার হতাশা- বুদ্ধিমত্তা তার ভিতর একটা।আমার সবসময়ের আফসোস একবার পড়েই আমি কোন কিছু মনে রাখতে পারি না। এমনিতে আমার স্মৃতিশক্তি বেশ শক্তিশালী, কিন্তু সেটা অসাধারন নয়। আমি শ্রুতিধর নই। এই দুঃখ আমার সারাজীবন থাকবে।

নেটে একবার একটা সাইটের খোজ পেলাম যারা high IQ মানুষের একটা ক্লাব খুলেছে। শুরুতেই একটা টেষ্ট দেয়। সেটা পার হতে হয়। যাদের IQ 126 এর উপর তাদের ক্লাবে আমি ঢুকতে পারলাম। কিন্তু ১৬০ এর ঊপর যারা আছে, তাদের একটা ক্লাব আছে-সেখানে আমার প্রবেশাধিকার নেই।

IQ ধারনাটার প্রথম অনুমিতি হচ্ছে- একজন মানুষের একটাই IQ. সময়ের সাথে সেটা বাড়ে না বা কমে না। নিখুতভাবে বুদ্ধি মাপার কোন উপায় নাই। তাই বিভিন্ন টেস্টে বিভিন্ন রেজাল্ট দেয়। কিন্তু তাতে মানুষটার বুদ্ধির কম বেশি হয় না। যে যা, বুড়া বয়স পর্যন্ত তাই থাকে। সো, আমি কোনদিন ১৬০+ ক্লাবে ঢুকতে পারব না।

মেধা, IQ, শ্রুতিধর হওয়া- এইসব বিষয় নিয়ে আমার এক ধরনের উন্মাদনা আছে। শুধু মনে হয়, কেন আমি আরেকটু বুদ্ধিমান না। কোন একটা জটিল বিষয় বুঝতে পারার পর খালি মনে হয়, কেনো সময় লাগল। কেন প্রথমবারেই বুঝতে পারলাম না?

বুদ্ধিমত্তা হয়ত বাড়ানো যাবে না, কিন্তু সামনের দিনে শ্রুতিধর হওয়া সম্ভব। যদি আমি আমার মাথার সাথে একটা হার্ড-ডিস্ক লাগিয়ে নিতে পারি। সমস্ত তথ্য সেখানে জমা রাখা কোন ব্যাপার হবে না। ট্রানঞ্জিস্টর ভিত্তিক ইলেক্ট্রনিক্সের বয়স ষাট বছরের কাছাকাছি। আগামী বছরগুলার আশায় থাকলাম। কিছু একটা কি বের হয়ে আসবে না?

কৌতুক- পাপের শাস্তি

শহরের পাড় মাতাল, বুড়া বব গেছে চার্চে। সবার সামনে সে প্রশ্ন করল-
-ফাদার! আর্থেরাইটিস কিভাবে হয়?
ফাদার ববের দিকে তাকালেন। ববের হাত পা কাপছে। যুবক বয়সে ববের অপরিমিত মদ খাবার কাহিনী শহরের সবাই জানে। আরো জানে যৌবনে সে যত্র-তত্র যে কোন মেয়ের সাথে শুয়ে পড়ত। ফাদার ভাবলেন, যুবক সম্প্রদায়কে একটা শিক্ষা দেয়া দরকার। তাই তিনি খুব ভাব নিয়ে বলা শুরু করলেন।
-এটা হয় পাপীদের। যারা খায় মদ। নারী যাদের কাছে বিনোদন মাত্র। যুবকেরা শুনে রাখ, তোমাদের এই যৌবনে তোমরা যে পাপ করবে উদ্দাম সঙ্গমে আর মদে- সেই পাপ তোমাদের ধরবে বার্ধ্যকে এসে।

বব শুনে মাথা নিচু করে রাখল কিছুক্ষন। এরপর বলল, ড্যাম! আজকে পেপারে দেখলাম পোপের আর্থেরাইটিস হইছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ... বাংলাদেশ সরকার ছোট একটা কাজ করছে (অন্যগুলা আমি জানি না)

আজকে অফিসে ভয়াবহ কাজের চাপ। কোটি টাকার একটা টেন্ডার এর কাজ করছি। আমি নতুন জয়েন করেছি। সব কিছু বুঝে উঠতে সময় লাগছে। বিরক্ত হয়েই ঠিক করলাম পুরা ডকুমেন্ট নিজেই পড়ে শেষ করব। টেন্ডার ডকুমেন্টটা পড়তে গিয়েই একটা বিষয় জানলাম। আমার মনটা ভালো হয়ে গেল। বিরক্তি আর কিছু থাকল না।

টেন্ডার ডকুমেন্টে দুই ধরনের শর্ত থাকে। জেনারেল কন্ডিশন আর পার্টিকুলার কন্ডিশন। পার্টিকুলার কন্ডিশনে দেখলাম পরিষ্কার করে লেখা আছে ইসরায়েলের কোন নাগরিক টেন্ডারে অংশ নিতে পারবে না। শুধু এইটুকুই নয়, ইসরায়েলে প্রস্তুত কোন ধরনের যন্ত্রপাতি কোন ঠিকাদার ব্যবহার করতে পারবে না। ধারা দুইটা সরাসরি দিয়ে দিলাম। পুরা ডকুমেন্ট দিতে পারলাম না। প্রজাতন্ত্রের কররচারী হিসাবে আমি সরকারী ডকুমেন্ট অনুমতি না নিয়ে প্রকাশ করতে পারি না।

GCC 1. Contractors that are national of , or registered in the following country are not eligible- Israel
GCC 2. materials/equipment/ plant shall not be supplied from the following country of origin- Israel.



বুক ফুলে গেল আমার। সরকার আসলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কিছু করে। আমরা সবাই সেটা জানি না। হতে পারে আমরা গরীব রাষ্ট্র কিন্তু আমরা ইসরায়েলের নাগরিকদের আমাদের দেশে কাজ করতে দিব না। হতে পারে আমরা দুর্নীতি পরায়ন রাষ্ট্র- কিন্তু আমরা জল্লাদের সাথে নাই। সরকারের চাকর হিসাবে আমি গর্ববোধ করলাম।

আমি জানি আমাদের একটু চাওয়া বা না চাওয়ায় ইসরায়েলের কিছু আসে যায় না। তবুও আমার ভালো লাগছে।
প্রাসঙ্গিক কারনেই জানিয়ে রাখি আমি ত ফিলিস্তিনের জন্য সমবেদনা দেখানোর চেয়ে বেশি আর কিছুই করতে রাজি নই।

কৌতুক- মূর্তি

একপার্কে দুইটা মুর্তি ছিল। একটা ছেলের। তার ঠিক মুখমুখি একটা মেয়ের মুর্তি। একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে আছে।

একদিন স্বর্গ থেকে একজন দেবদূত এলো। মুর্তি দুইটাকে বলল,
"তোমরা দুইজন খুব ভালো মুর্তি। অতি ভদ্র আচরনের পুরস্কার হিসাবে তোমাদের দুইজনকে ত্রিশ মিনিটের জন্য জীবন্ত করে দেয়া হবে।"

মুর্তি দুইটা জীবন্ত হল। মেয়েটা ছেলেটার দিকে লাজুক হেসে এগিয়ে এল। ছেলেটাও লাজুক ভঙ্গিতে হাসতে লাগল। কিছুক্ষন হাসার পর, মেয়েটা ছেলেটাকে বলল, ত্রিশ মিনিট খুব কম সময়।
ছেলেটা একটা ইঙ্গিতপূর্ন হাসি দিল। মেয়েটাও হাসি দিল। সময় নাইরে। দুইজন দৌড়ে ঢুকে গেলো পাশের একটা ঝোপের ভিতর।

কিছুক্ষন হাসাহসি, ঝোপের নড়াচড়া হল। ছেলেটার সেইরকম আওয়াজও পাওয়া গেল।

অবশেষে তারা দুইজন বের হয়ে এলো। মুখে তৃপ্তির হাসি।

দেবদূত বলল, ইয়ে। তোমাদের হাতে আরো পনের মিনিট আছে। ছেলেটা আবার মেয়েটার দিকে তাকাল। দুইজনের মুখে চওড়া হাসি। ছেলেটা
ইঙ্গিতপূর্নভাবে মেয়েটাকে বলল, আবার হবে নাকি?
-অবশ্যই। তবে এইবার তুমি কবুতর ধরে রাখবে। আর আমি তার ওপর মলত্যাগ করব।

চলুন জানি মডু-মডারেশন সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ কি বলেছেন (সাথে বিটলসের একটা উপদেশ ফাও)

হুজুরদের একটা মাসআলা বই থাকে। বেহেশতি জেওর বা এই টাইপ। কোন একটা সমস্যা হলেই সেই বই খুলে দেখেন এবং ফতোয়া দেন। পাদ্রীরা সম্ভবত বাইবেলে খুজেন সমাধান। আমি ধর্মগ্রন্থে ধর্মীয় সমাধান খুজতে পারি। কিন্তু যে কোন ধরনের আদর্শিক সমস্যায় পড়লেই রবীন্দ্রনাথের কাছে ছুটে যাই।

ব্লগ রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর বহু পরে এসেছে। কিন্তু তবুও আমি ব্লগের মডারেটর সম্পর্কে তার একটা পরামর্শ খুজে পাইছি। সরাসরি ব্লগের মডুদের ব্যাপারে না। তবে মডারেশন সম্পর্কে তিনি বলে গিয়েছেন।
এবারও সরাসরি উদ্ধৃতি দিতে পারছি না। বই পত্তর সাথে নাই। কথাটা আছে গোরা উপন্যাসে। তিনশ পেইজের এই উপন্যাস থেকে খুজে বের করে নেন যদি আমাকে সন্দেহ হয়।

আসল কথায় চলে আসি।

একটা ছোট ছেলে যখন এমন কোন একটা দুষ্টুমী করে যা সামাজিক নিয়মের বাইরে বা বিরুদ্ধে যায়, তার মা অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী তাকে বেত্রাঘাত করে শাস্তি দেন। ছেলেটা রাগারাগি করে হয়ত রাতে ভাত খায় না। কিন্তু ঘুমুতে যাবার সময় ঠিকই মাকে জড়িয়ে ঘুমায়। মায়ের বিরুদ্ধে তার পরদিনই আর নালিশ থাকে না।
এই ছেলেটা বড় হয়। বড় হবার পরে যখন সামাজিক নিয়মের বাইরে যায়, তখন মা আসেন বা না আসেন, পুলিশ আসে। পুলিশ যদি তাকে সামান্য বেত্রাঘাত করেই ছেড়ে দেয়। তবুও সে সারাজীবন অই পুলিশটাকে ক্ষমা করতে পারে না। তার নিজের দোষ থাকুক বা নাই থাকুক।

কেনো এমন হয়? মায়ের শাসন সহ্য হয় কিন্তু পুলিশেরটা না? কারন সহজ। ভালোবাসা। মায়ের শাসনের সময় হয়ত ছেলেটা মনের কোন একটা গভীরতায় টের পায় , তার মা তাকে ভালোবাসে। সেইজন্যেই তার রাগ বা অভিমান টিকে থাকে না। পুলিশ যে শুধু কর্তব্য করছে( যদি সে ভালো পুলিশ হয়)। নইলে অকারন ক্ষমতা দেখাচ্ছে। এই জন্যেই পুলিশের ওপর রাগ আর মুছে যায় না।

ব্লগারদের প্রতিক্রিয়া থেকে আমি যা বুঝলাম, মডু পুলিশ পর্যায়ে আছে। যারা নানা রকম শাস্তির শিকার হচ্ছে তারা ভালোবাসা এর কোন আভাস পাচ্ছে না। এই কারনেই তাদের রাগ বেশি। কিছুতেই মডারেশনকে সহ্য হচ্ছে না।

মডুদের প্রতি-
মডারেশনের দরকার আছে কি নাই- সেটা নিয়ে আলোচনা করতে চাই না। আমি জানি না আপনারা এই ব্লগ কতটুকু মনযোগ দিয়ে পড়বেন। আপনাদের উদ্দেশ্যে আমি শুধু বলতে চাই- আমাদের ব্লগারদের ভালোবাসুন এবং সেটা যেন সত্যিকারের হয়। আমরা টের পাব আপনাদের ভালোবাসা। আমার ধারনা এখন সামুতে যেই অস্থিরতা, আন্দোলন, মডুদের প্রতি কটাক্ষ সবকিছুই কমে আসবে ধীরে ধীরে। বীটলসও বহু আগেই আমাদের কথা বলে গিয়েছে- ALL WE NEED IS LOVE

.....................................................................................
......................................................................................
মডুদের ব্যাপার নিয়ে এর আগে একবার ব্লগ লিখলাম ঈসপের গল্প হতে।
Click This Link আমার মনে হয় এর অন্তর্নিহিত কথাটা সবাই বুঝতে পেরেছেন।
আজকেও আবার মডুদের বিষয়ে আরেকটা ব্লগ লিখতে হল। এই ব্লগটা লিখলাম শুধু কাকনের জন্য। তিনি নাই, আমার ব্লগ দুনিয়াও ফাকা ফাকা লাগে। আমি জানি না কাকন অফলাইনে থেকে এই ব্লগ পড়ছেন কিনা। আরেকটা কথা এই নিক নিয়ে আমি জেনারেল। জানি না কয়জন পড়বেন এই ব্লগ। আমি তবু লিখে গেলাম। আমার কাজ আমি করেছি, আপনাদের কাজ আপনারা করেন।

সরকারের অর্থ অপচয় - চলুন ছোট একটা হিসাব করি

আসুন সরকারের কত টাকা অপচয় হচ্ছে তার একটা সরলীকৃত হিসাব করি। প্রথমই একটা বিশ্ববিদ্যালয় বেছে লই। ধরা যাক প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। বুয়েটেরএক বছরের বাজেট ত্রিশ কোটি টাকার মত। ( আমি যখন ছাত্র ছিলাম তখন এটা বাজেট ছিল। এখন মনে হয় আরো বেড়েছে)। বছরে দিন ৩৬৫। তাহলে প্রতিদিন বুয়েট চালাতে সরকারের খরচ ত্রিশ কোটি/ ৩৬৫ = আট লাখ টাকা প্রায়, আসলে হিসাবটা হল ৮২১৯১৭.৮ টাকা।
চলেন আরেকটু হিসাব করি। বুয়েটের ছাত্র কতজন? গড়ে আটশ জন ধরে নিলাম। আরো ধরি পাচটা ব্যাচ আছে। এক টার্মে (সেমিস্টার) বুয়েটের খরচ ত্রিশ/২= পনের কোটি। এই টাকাটা খরচ হচ্ছে ৮০০x৫= ৪০০০ জন ছেলের পিছে। তাহলে প্রতি ছেলের পিছে এক সেমিস্টারে সরকারের খরচ কত? সহজ হিসাব। ১৫ কোটি/৪০০০ = সাইত্রিশ হাজার পাচশ টাকা। আমরা ধরে নিতে পারি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি হলে প্রতিটা ছাত্রকে সেমিস্টার প্রতি সাইত্রিশ হাজার পাচশ টাকা দিতে হত। সরকার প্রতিটা ছাত্রের হয়ে এই ব্যয় বহন করছে।

সরকার টাকা পায় কোথা থেকে? সারা দেশের মানুষের কাছ থেকে কর নিয়ে। এমনকি যে লোকটার আয় দিনে একশ টাকার কম সেও সরকারকে কর দেয় মূল্য সংযোজন করের মাধ্যমে। সুতুরাং সারাদেশের মানুষের টাকায় বুয়েটের একেকটা ছেলে পড়াশুনা করছে। দেশের মানুষের দাবি সামান্য। পড়ো আর পড়া শেষে আমাদের জন্য কিছু কর।

সারমর্মে চলে আসি। বুয়েট একদিন চালাতে সরকারের খরচ আটলাখ টাকা মাত্র এবং প্রতিটা ছাত্রের সেমিস্টার ফি আটত্রিশ হাজার পাচশ টাকা মাত্র।

এখন আমার প্রশ্ন। যদি বুয়েটের শিক্ষাবর্ষ একদিন পিছায় সরকারের কত টাকা লস হয়? পুরো আটলাখ মাত্র। কেননা সরকারের অনেকগুলো ইঞ্জিনীয়ার তৈরী একদিন পিছিয়ে গেল, কিন্তু খরচ ত ঠিকই করতে হচ্ছে। বুয়েটে অহরহ দুই সপ্তাহ পিছিয়ে যায় পরীক্ষা। এবার হিসাব করে বলুন সরকারের কত টাকা বুয়েটের ছাত্র শিক্ষকরা অপচয় করছেন।

ফাকা মাঠের ভিতর কালভার্ট বানানো হয়েছে। প্রথম আলো সেই ছবি ছাপিয়ে দিয়ে কাপিয়ে দিয়েছে দেশ। সারাদেশ জুড়ে কত কথাবার্তা। একটা কালভার্টের কত খরচ? সেটা কি আটলাখ টাকা থেকেও বেশি? বুয়েট একদিন পিছালে কেউ ত কোন আওয়াজ করে না। জনগনের পয়সার অপচয় করা পাবলিক ভার্সিটি গুলোর এইকাজ কি দুর্নীতির আওতায়? নাকি বাইরে?

বুয়েটের প্রতি আমার আলাদা রাগ নয়। এই হিসাবটা করলাম কেননা আমি সেখানকার ছাত্র ছিলাম। একটা ধারনা আছে বুয়েট সম্পর্কে। আর এই অপচয় ত শুধু বুয়েটে না। বাকি ভার্সিটিগুলোর হিসাব এর কাছাকাছি হবে। হয়ত উনিশ বিশ পার্থক্য।


( আমি ছাত্র অবস্থায় এই কথা গুলো বলেছিলাম। কিছু ছেলে, যারা পরীক্ষা পিছাতে চায় আমাকে মারধোরের হুমকি দিয়েছিল। ব্লগে মারতে পারবে না, কিন্তু হয়ত একটা গ্রুপ তৈরী হবে আমাকে অযথা হেনেস্থা করার জন্য। তবু আমি লিখলাম। আরেকটা কথা। এটা পুরানো ব্লগ। সামুতে অবশ্য প্রথমবারের মত দিচ্ছি।)

আজকে বুড়ির জন্মদিন ১৭ ই জানুয়ারি,

আমার অনেক ব্লগে বুড়ির নাম থাকে। তার কড়া নির্দেশে আমি এখন ব্লগে আর বুড়ির নাম নেই না । কিন্তু জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ব্লগটাকেই ভালো মনে হল।

আদিকান্ড
অরকুটে আমি বুড়িকে প্রথম পাই। সেখান থেকে ইয়াহুতে চ্যাট শুরু করি। একসময় মোবাইল নাম্বারও দেয়া-নেয়া হয়। বুড়ির সাথে প্রথম দেখা করি ফুলার রোডে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের সামনে।

কেন সে বুড়ি
সে বিরাট ভাব নিচ্ছে একদিন আমার সাথে। “আমি তোমার চেয়ে বয়সে বড় হে ছোকরা। দুনিয়া আমি বহুত দেখে ফেলেছি।“ সেইদিন আমি মনে মনে তার নাম ঠিক করে ফেলি-বুড়ি। এরপর যখন তার সাথে সম্পর্ক আরো সহজ হলো, বুড়ি নামটা দিলাম। সে বাধা দেয় নাই। আর আমি বারবার ডেকে এই নামটা প্রতিষ্ঠিত করে ফেললাম।

কেন তাকে এত ভালো লাগে
ভার্চুয়াল জগতে কাউকে ভালো লেগে যাওয়াটা কঠিন। কেননা কিছু আইডিয়া আর কথা ছাড়া কোনকিছু টের পাওয়া যায় না। বুড়িকে আমার ভালো লাগা শুরু চ্যাট করা থেকে।একদিন চ্যাট করার সময় বুড়ি বলে, তুমি জানো না। আমি ত বিরাট ঘাউড়া।
এই ঘাউড়া শব্দটা দেখে আমি খুব মজা পাইছি। আর মনে হয় ভালো লাগাটার সেখান থেকেই শুরু।
হাজারটা কারন আছে বুড়িকে ভালো লাগার। আমি যখন ফোন করি , ফোনটা ধরেই সে হাসি দেয় । মনটা ভালো হয়ে যায়। তার অনুকরনে ফোন ধরেই একটা হাসি দেয়ার চেষ্টা আমি করি। আমার স্বভাবটা খারাপ ছিল। মেয়েদের খোজে এদিক-সেদিক নজর দিতাম আর মেয়েরা দিত হেভি ঝাড়ি। প্রতিবার ঝাড়ি খেয়ে এসে বুড়ির আশ্রয় নিতাম। বুড়ি আমার বিলাপ মনযোগ দিয়ে শুনত। পরামর্শ দিত। সেগুলো কাজের ছিল খুব।
বুড়ি আমাকে প্রথম জান বলে ডেকেছে। এর আগে আমি আমার বন্ধুদের দেখতাম কাউকে জান বলে ডাকতে। আমার খুব হাস্যকর লাগত। কিন্তু যেদিন বুড়ি আমাকে “জান কি করো” বলল, সেদিন দেখি আর হাস্যকর লাগছে না।
আমি রাইকিশোরীর কাছ থেকে লাত্থি খেয়ে আসি, সে আমাকে ভালোবাসা দিয়ে জড়িয়ে রাখে। আমি টুনটুনির সাথে তিনবছরের সম্পর্কটা আর না রাখার সিদ্ধান্ত নেই, সে আমাকে গাধা বলে ডাকে। আমার মেয়ে সংক্রান্ত সবকিছুতেই সে কিভাবে যেন সম্পর্কিত হয়ে যায়।

তাকে নিয়ে ব্লগ কেনো?
আমার অভ্যাস কোন মেয়ের সাথে একটু পরিচয় হলেই তাকেই সনেট লিখে দেই। বুড়িকে কেনো জানি সনেট লিখে দেই নাই। এরপর বহুদিন চলে গিয়েছে। আমি সনেট লেখা বন্ধ করে দিয়েছি। লিখতে গেলেও পারি না। নিজের কাছেই কেমন জানি লাগে। যখন মোটামুটি নিশ্চিত যে আমি আর লিখতে পারব না, তখন একদিন অফিসে কাজ করতে করতে আধা ময়লা একটা কাগজে বুড়িকে নিয়ে কবিতা লিখি। এরপর আর লিখতে তেমন সমস্যা হয় নাই। পরদিনই রাইকিশোরীকেও একটা সনেট লিখে দিয়ে কাত করার চেষ্টা করলাম।
আমার এই স্বত্বাটার পুনর্জন্মেও বুড়ি থাকল।
আমাকে সামুর ঠিকানা প্রথম বুড়িই দেয়। বলল এইখানে অনেকে ভালো লিখে। মিশে যাও তাদের সাথে। আমি রেজি করলাম। কাজেই আমার ব্লগ জীবনটার সূচনাও বুড়ির কারনে।

ব্লগে আমাকে যেদিন প্রথম গালি দিল কেউ, ঘন্টা দুয়েকের ভিতর বুড়িকে ফোন করে জানালাম। তার সে কি হাসি। আমিও হাসি থামাতে পারলাম না। তার হাসিই আমাকে বলে দিল গালির বদলে গালি না দিয়ে হাসাতে হবে। আমার মাথায় আইখ্যা সিরিজের আইডিয়াটা আসল।

আমি যে কয়টা বিষয়ে বেশ শ্লাঘা বোধ করি- বুড়ির সাথে আমার সম্পর্কটা তার ভিতর একটি। আমরা নেটের বন্ধু। নেটে আমাদের বেশিরভাগ কথা আর আমরা যে বন্ধু সেটা না বললেও চলে। এই বন্ধুত্ব কোন কিছুর প্রত্যাশী নয়। হয়ত মাস পার হয়ে যায় বুড়ির সাথে যোগাযোগ নাই। কিন্তু সম্পর্কটা পানসে হয়ে যায় না।


ব্লগে যখন তার কথা বলা শুরু করি তখন অনেকেই বলেছেন বুড়ি কে? সে আপনার কি হয়?
আমি ঠিকমত গুছিয়ে উত্তর দিতে পারি নাই। তাই আজকে কিছুটা বললাম। বুড়ির পরিচয় যেন না বোঝা যায় সেইদিকে মনযোগ ছিল বেশি। তাই খুব বেশি বলা গেলো না। আরেকটা কথা , সোজা-সাপ্টা বলেছি। ফেনিয়ে বললাম না। ( আমার অন্য ব্লগ পড়লে বুঝা যায় ,আমি ফেনিয়েও বলতে পারি, তাই না?)

সবশেষে বুড়ির প্রতি
শুভ জন্মদিন।ভালো থেকো বুড়ি। সবার ভালোবাসা তোমাকে আজীবন জড়িয়ে রাখুক

কৌতুক

মেডিকেল কলেজের প্রফেসর নতুনদের ক্লাস নিচ্ছেন।

-ভালো ডাক্তার হওয়ার দুটি শর্ত। প্রথমটি হল খুব ভালো পর্যবেক্ষন শক্তি থাকা। রুগীকে দেখেই যেন তার সম্পর্কে ধারনা করতে পারো, কোন একটা অসুখের হালকা লক্ষনও যেন বাদ না যায়। দ্বিতীয়টা হল মন শক্ত করা। যেন কিছুতেই তুমি ভড়কে না যাও।

আজকে তোমাদের পর্যবেক্ষন এবং মানসিক অবস্থার পরীক্ষা হবে। আমার সামনে একটা জারে হলুদ বর্নের তরল আছে। সবাই এক এক করে আসো আর দেখে যাও। বলো এটা কি?

একে একে সবাই এলো। সবার এক কথা এটা প্রস্রাব।

গুড! এই বলে প্রফেসর একটা আঙ্গুল তরলে ডুবিয়ে দিলেন। ছাত্র-ছাত্রীরা ওয়াক থু টাইপ আওয়াজ করল। তরলে আঙ্গুল রেখেই প্রফেসর বললেন,

-তোমাদের ঘেন্নাপাতি কমাতে হবে। মানসিক দৃঢ়তার জন্য এই ধরনের ঘৃনা থাকা ভালো নয়। যারা এখনো আমার আঙ্গুল চুবিয়ে রাখা পছন্দ করো নাই তারা ভালো করে লক্ষ্য করো। এইবলে প্রফেসর আঙ্গুল তুলে মুখে দিলেন। ছাত্রদের অবস্থা ত সেই রকম।

এরপর প্রফেসর বললেন, তোমরা সবাই ঠিক আমি যেভাবে আঙ্গুল চুবিয়েছি আর মুখে দিয়েছি সেইভাবে কর। সবাই আসো... একে একে...

ছাত্ররা তাই করল।

সবশেষে প্রফেসর বললেন, এবার তোমাদের পর্যবেক্ষনের প্রসঙ্গে আসি। বলো কতজন খেয়াল করেছো যে আমি তর্জনী চুবিয়েছি আর মধ্যমা মুখে দিয়েছি...

ফিলিস্তিনীদের জন্য আমার সামান্য সমবেদনা ছাড়া আর কিছু নাই, ভালোবাসা সব অন্যত্র রেখেছি

০১
অফিসে আমার পাশেই বসেন শহীদুল্লাহ সাহেব। তিনি সেদিন বললেন ভয়াবহ এক কাহিনী। এলাকার এক রাজনৈতিক নেতা বাসার কাজের ছেলেকে মেরে ফেলেছে। এরপর নিজের ছেলেকে লুকিয়ে রেখে এলাকার সবার কাছে বলে বেড়িয়েছে, বিপক্ষ দল তার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। নির্বাচন জিতে সেই নেতা ...বড় নেতা হয়ে গিয়েছে রাতারাতি।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, কাজের ছেলের মা-বাবা কিছু বললো না?
না স্যার! অই নেতা টাকা দিয়ে দিয়েছে বাপ-মাকে। টাকা পেয়ে আর ভয়ের চোটে ওরা আর কিছু বলে নাই।

০২
আমার বাসায় রান্না করে এলাকার এক বয়স পঞ্চাশের মহিলা। সে আমার জন্য তিনবেলা রান্না করে। বাসন-টাসন মেজে দেয়। প্রতিদিন মোটামুটি ঘন্টা তিনেক কাজ করতে হয়। তার বেতন মাসে তিনশ টাকা। তারমানে দিনে আমি তাকে দশ টাকা দেই। দশ টাকার জন্য সে তিনঘন্টা কাজ করে। দিনে তার আয় এক ডলারের কম, সুতরাং দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। আমি হিসাব করে দেখেছি ঘন্টায় এই মহিলার বেতন সাড়ে পাচ সেন্ট। আমার নিজের বেতন ঘন্টায় একডলার আট সেন্ট।

০৩
বাংলাদেশ কমন একটা ঘটনা লঞ্চডুবি। ডুবে যাওয়ার এত ভয় থাকার পরও কেন মানুষ দলে দলে উঠে লঞ্চে? উত্তরটা দিয়েছিল একজন বুয়া। আমাদের মেস থেকে তার আয় মাসে পনেরশ টাকার মত। ঈদের ছুটিতে তার বাসার সবার বাড়ি যেতে বাসে লাগে একহাজার টাকা (5X200), আসা যাওয়ায় শুধু ভাড়াই লাগছে দুই হাজার টাকা। লঞ্চে গেলে হাজারখানেকের ভিতর হয়ে যাচ্ছে। লঞ্চে যাওয়া ছাড়া উপায় কি?

যারা মারা যায় পত্রিকায় এক সপ্তাহের মত তাদের এবং আত্মীয়স্বজনদের ছবি থাকে। এরপর সব ভুলে যাই আমরা। আমার যতটুকু মনে আছে, এক বছরে বারশ এর মত মানুষ শুধু লঞ্চ ডুবিতে মারা যায়। (ফিলিস্তিনে হামলায় মৃতের সংখ্যা এখনো এত হয় নাই। টুইন টাওয়ারে কতজন মারা গিয়েছিল? )

০৪
আমার সমবেদনা ফিলিস্তিনী নারী-পুরুষ আর শিশুদের জন্য। আমার সমবেদনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কুত্তার মত মারা পড়া ইহুদীদের জন্য। আমার সমবেদনা ইরাকী জনগনের জন্য।

কিন্তু আমার ভালোবাসার কিছুই এদের জন্য নাই।যে পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা ভিক্ষে করে জীবন ধারন করে আমার ভালোবাসা তাদের জন্য। যে মহিলা আমার বাসায় ঘন্টায় সাড়ে পাচ সেন্টের জন্য কাজ করে আর আমার কাছ থেকে প্রতিদিন পেয়াজ,মসলা এইসব চুরি করে নিয়ে যায়-আমার ভালোবাসা তার জন্য রাখা। যে বাবা-মা সামান্য টাকা বিনিময়ে সন্তানের মৃত্যু ভুলে যেতে বাধ্য হয়-আমার ভালোবাসা তাদের জন্য।
নিজের ঘরের মানুষের দুঃখ-কষ্টের কথা না বলে,তাদের জন্য কান্না-কাটি না করে-বাইরের কারোর জন্য আমি ভালোবাসা খরচ করতে পারি না। যে আরব ভাইদের জন্য আমার কান্না কাটি করা উচিত শুধু গরিব বলে তারা আমার প্রাপ্য সম্মান দেয় না। আমার শ্রমিক ভাইকে দেশে ফিরিয়ে দেয়। অর্থ আর নৈতিকতার নিদারুন অপচয় করার পর, মুসলমান ভাই বলেই আমার ভালোবাসার একটা অংশ ফিলিস্তিনীরা পেতে পারে না।

আমার ভালোবাসা নাই ফিলিস্তিনীদের জন্য। আমি বড়জোর সমবেদনা দেখাতে পারি। নিজের লড়াই তারা নিজেরা করুক। আমি তাদের জন্য নিজের একটা __ ও ছিড়ব না।






বিঃদ্রঃ- শেষ লাইনের শূন্যস্থানে চুলের হিন্দি শব্দ হবে।

কয়েকজন ব্লগারের মুক্তি চেয়ে আন্দোলন সম্পর্কে হাজার বছর আগে ঈসপ যা বলে গিয়েছেন


এক পুকুরে অনেক ব্যাং থাকে। তাদের খাওয়া-দাওয়ার অভাব নাই। সুখের জীবন। কথায় আছে সুখে থাকলে ভূতে কিলায়। ব্যাংগুলাকেও ভূতে কিলানো শুরু করল। একদিন তারা সবাই মিলে গেল জিউসের কাছে।
হে দেবতারাজ! আমাদের সব আছে। কেবল একজন রাজা নাই। আপনি একজন রাজা ঠিক করে দিন।
জিউসের সময় নাই। তাই বললেন, যা দূরে গিয়া মর।
ব্যাংদের ঘ্যান ঘ্যান চলতেই থাকে। শেষ পর্যন্ত জিউস বিরক্ত হয়ে একটা কাঠের টুকরা পুকুরে ছুড়ে দিলেন, যা!! এইটাই তোদের রাজা।
ব্যাঙ্গের দল মহাখুশি।
কিছুদিনের ভিতর তারা আবিষ্কার করল, নতুন রাজা কিছুই করে না। সারাদিন শুধু পানিতে ভেসে বেড়ায়। ইচড়ে পাকা টাইপের কয়েকটা কমবয়সী ব্যাং সাহস করে রাজার উপর চড়েও বসল। রাজা কিছুই করে না। ব্যাং এর দল বুঝল তাদের প্রতারনা করা হয়েছে। আবার গেল জিউসের কাছে।
আমাদের একজন রাজা দেন। আমাদের একজন রাজা দেন।
জিউসের কান ঝালা-পালা। বিরক্ত হয়ে তিনি বললেন, আমি নতুন একজন রাজা দিতে পারি, কিন্তু শর্ত হলো এরপর আর কোন রাজা দিব না। ব্যাঙ্গের দল হেভী খুশি। শর্ত মেনে নিল। জিউস তাদের রাজা করে দিলেন বড়সড় একটা বককে।

বকটার কাজ হল সারাদিন ব্যাং খাওয়া।

(যাদের কাছে অপ্রাসংগিক মনে হল এই গল্প। তারা দ্বিতীয়টা পড়া শুরু করেন। )
০২
একটা ব্লগ সাইট ছিল যেখানে ব্লগাররা খুশি মনে ব্লগাইতেন। কোন মডারেশন ছিল না। সুখের জীবন। কথায় আছে সুখে থাকলে ভূতে কিলায়। ব্লগারদের তাই হল । একদিন কয়েকজন ব্লগার এর মনে হল আমাদের একজন মডু দরকার। .........

আর লেখার দরকার আছে?

এক চোখ নষ্ট বৃদ্ধা আর তার রাজকুমারী মেয়ে

(আমার ঠিক মনে নাই) বিষ্ণুর তৃতীয় বা চতুর্থ অবতার হলেন বরাহ। বরাহ মানে শূয়োর। তা তিনি শুয়োর হিসাবে মর্ত্যে এসেছেন। তার কাজ হল কোন একটা দৈত্য মেরে দুনিয়ার শান্তি ফিরিয়ে আনা। সেটা তিনি সুচারুভাবেই সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু কাজ শেষ হবার পরও দেখা গেল তিনি স্বর্গে ফিরে আসছেন না। স্বর্গ জুড়ে তোলপাড়? কই?? বিষ্ণু কই???

স্বর্গ থেকে দেবদূত গেল। খোজ লাগানোর পর তাকে আবিষ্কার করা হল নদীর তীরে। প্রখর রৌদ্রের ভিতর কাদা মেখে সারা শরীরে তিনি শুয়ে শুয়ে আলস্য করছেন। দেবদূত গিয়ে বলল, " চলেন। স্বর্গে হাহাকার পড়ে গিয়েছে"

বরাহ বললেন, " আমি কিছুতেই ফিরে যাব না। এইখানেই ভালো আছি।"



যার একটু ইচ্ছেয় বহু কিছু হয়। মহা পরাক্রমশালী একজন দেবতা শেষ পর্যন্ত তার স্থান খুজে পেয়েছেন একপাল শুয়োরের মাঝে।



১.

আমার ভবঘুরে শ্রেনীর প্রতি আলাদা মমতা আছে। মমতার একটি অংশ বরাদ্দ শ্রমজীবি মানুষদের জন্যও। সম্ভবত খুব কাছ থেকে এদের দেখিনি বলেই মমতা এত গাঢ়।থিসিসের কাজে গিয়েছি মানিকগঞ্জের একটা গ্রামে।সুহাদ, আলামিন আর আমি। সেখানে আমাদের তিনজনের কাজ একটা জরিপ চালানো। মানুষ একদিন কয় লিটার পানি ব্যাবহার করে সেটা বের করাই জরিপের মুখ্য উদ্দেশ্য। সুহাদ বেচারা প্রশ্ন করে। আমি আর আলামিন সাথে থাকছি ব্যাস এইটুকুই। উনিশ বছরের এক তরুনীকে যখন সুহাদ প্রশ্ন করে আপনি টয়লেটে কয় লিটার পানি ব্যাবহার করেন তখন সেটা একটা দেখার মতই বিষয় হয়।



দৈবচয়নের ভিত্তিতে আমরা বিভিন্ন ঘরে যাচ্ছি। শেষের দিকে মনে হল একজন নিম্ন আয়ের পরিবারকেও জিজ্ঞেস করি। সাথের স্থানীয় গাইডকে বললাম এই রকম একটা ঘরে নিয়ে যেতে।



নদীর একেবারের পাড় ঘেষে ঘর। ঘরে কোন পুরুষ নাই। একজন বৃদ্ধা মহিলা আছেন। একচোখে বোধহয় ছানি পড়ে গেছে। দৃষ্টিগ্রাহ্য যে সে একচোখে দেখে না। পেশা তার মাটি কাটা। দিন মুজুরের কাজ করেছে সারাটি জীবন ধরে, তার সারা যৌবনে। এখন আর শক্ত সমর্থ না। এখন জীবন চলছে পরের বাড়িতে ছোট-খাটো কাজ করে আর ছাগল পেলে। মাসে তার আয় হাজার দুয়েকের মত। ছোট একটা ছনের ঘর।সেখানে একটা চৌকি পর্যন্ত নাই। অনুমান করলাম চাটাই ( মাদুর বলা যায় না কিছুতেই) পেতে রাতে থাকে। ঘরের পাশে কিছু ফলের গাছ লাগিয়েছে। সেখান থেকেও কিছু আয় হয়। প্রশ্নোত্তরের এক পর্যায়ে বৃদ্ধার মেয়ে এল পাশের বাড়ি থেকে। পিড়ি পেতে দিল যেন আমরা বসতে পারি।





গল্পের আরেকটা ভূমিকা শেষ হল।



২.



যা বলছিলাম। বুড়ির মেয়ে এসে পিড়ি পেতে দিল। কিন্তু আমরা কেউ বসলাম না। চারজন আছি। চারজনের বসার জায়গা সেখানে নাই।সুহাদ খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন করা শুরু করল। আর আমি দু'চোখ ভরে দেখছিবুড়ির মেয়েটাকে।

গ্রীষ্মের দুপুরে আমরা গায়ের পথে হেটেছি ঘন্টা পাচেকের মত। গরমে অতিষ্ঠ। হেটে হেটে পা দুটো ক্লান্ত। ঠিক এইসময় এই মেয়ের উপস্থিতি যেন হঠাৎ করেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হওয়া। ইচ্ছে করেই তার নাম লিখছি না। মেয়েটার বয়স কত হবে? হুমমম... আঠারো বা সতেরো।

একটু আগেইসে গোসল করেছে। নাহ! গোসল করি আমরা, সে যা করেছে সেটা যেন গোসলের চেয়ে বেশী। বিবর্ন গাছকে বর্ষা যেভাবে সবুজ করে তার গোসলের সাথে সেটার গভীর মিল। মাথায় কাল কুচকুচে চুল। কুচকুচে কালো চোখের মণি আর গভীর সাদা চোখ। এইরকম চোখ খুব বিরল।



যৌবন তার দেহে প্রস্ফুটিত। চলনে একটু ধীর। কথাবার্তায় গ্রীষ্মের মাঝে শীতল বায়ু। ধীরে প্রবাহিত কিন্তু যেন শান্তি নিয়ে আসে। গায়ের রঙ কাল। এই কাল তার সৌন্দর্যকে যেন আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। নীল রঙের একটা জামা পড়ে আছে। কোন কারুকার্য নাই তাতে। আর এতেই মনে হচ্ছে উজ্জ্বল শুভ্র সে। তার আচরনে যে আভিজাত্য সেটা কেউ তৈরী করতে পারে না, জন্ম থেকেই নিয়ে আসতে হয়।



আমি সেই উঠানে দাঁড়িয়ে আছি স্থানুর মত। মনের ভিতর ইচ্ছেরা করছে ছুটোছুটি। থেকে যেতে ইচ্ছে করছে এখানে। এদের পাশে ছোট একটা কুড়েঘর তৈরী করব। ছাগল পালব আমিও দু'চারটা।সকালে পালা মুরুগিগুলো আর কবুতরগুলোকে কিছু ধান খেতে দিয়ে বের হয়ে যাব মাটি কাটতে বা কোন ফসলের ক্ষেতে কামলা খাটতে। বিকেলে ফিরে এসে সামনের নদীটির ঠান্ডা পানিতে দিব বড় দুইটা বা তিনটা ডুব। একটু সাতরিয়ে এসে ছাগলগুলোকে ঘরে নিয়ে আসব। মুরগিগুলো গুনে গুনে তুলব ঘরে। কবুতরগুলোকে দিব শেষ বিকেলের খাবার।



আর তার কোন একটা উপকারে আসার প্রানপনে চেষ্টা করব। সকালে তার ছাগলগুলোকে আমার সাথে নিয়ে নিব। বিকালে আমার গুলোর সাথে সেগুলোকে ফিরিয়ে আনব। তাকে অনুরোধ করব আমার জন্য দুপুরের রান্নাটা করে দিতে।



এই যে দুশ্চিন্তাহীন মুক্ত জীবন, কোন একটা উদ্দেশ্য সফল করার জন্য যেখানে প্রানপণে খাটতে হয় না। এইখানে নিম্নস্তরের (!) জীবনে যে সুখ লুকিয়ে তার খোজ আমি এতদিন পাইনি। আমার মনে হচ্ছিল গহীন বনে অনেক হিংস্র জীব-জন্তুর পাহারায় যে গুপ্তধন থাকে বা প্রশান্ত মহাসাগরের কোন একটা নির্জন দ্বীপে ষোড়শ শতকের কোন জলদস্যুর গুপ্তধন আমার সামনে উন্মোচিত। শুধু দুই হাত ভরে তুলে নেয়া।



কিন্তু আমি একটা গাধা। আমার নাকের সামনে একটা মূলা ঝুলে আছে। সেই মূলাটা ধরার জন্য আমি শহরে ফিরে এসেছি। কিন্তু আমার জীববে সবচেয়ে গাঢ় ভালোবাসা রেখে এসেছি সে বাড়ির ঊঠানে, সেই সদ্য যৌবনা নারীর জন্য আর তার রাজকীয় জীবনটার জন্য। মুর্খ আমি সেই জীবনের একজন হতে পারলাম না।

কজন অসহায় বৃদ্ধের মুখ

আমার মনে নাই প্রথম কবে আমি জানতে পারি মানুষ মারা যায়। কেউ আমাকে জানিয়েছে নাকি আমি চারপাশ থেকে এই উপাত্ত সংগ্রহ করেছি সেটাও বলতে পারছি না। আমি প্রথম ঘড়ি দেখা শিখেছি কখন সেটা আমার মনে আছে। কবে আমার প্রথম দাত পড়ল সেটাও আমার মনে আছে। কিন্তু মৃত্যুর ব্যাপারটা আমার কিছু মনে নাই। অবশ্য প্রথম মৃতদেহ কাছ থেকে দেখার স্মৃতি মনে আছে।



আমি তখন থ্রী তে পড়ি। স্কুল শেষে বাসায় ফিরে আসছি। রাস্তার পাশে চাটাই এর ওপর রাখা লাশ একটা। সেই লাশ কিছুক্ষন আগেই স্থানীয় লেক থেকে তুলে আনা হয়েছে। লাশটা পাচ টুকরা করা। দুই হাত, দুই পা আর বাকি অংশ। একজন লোক খুব বিরক্ত ভঙ্গিতে পাশের জনকে ব্যাখ্যা করছে কি কষ্ট করে সে লাশের টুকরা গুলো তুলে এনেছে। আমি মাথাটা দেখিছি। ঠোটটা ছিল তার কুচকুচে কালো। কয়েকদিন পানির নিচে থাকলে এইরকম হয় কিনা কে জানে।



ভূমিকা শেষ হল।



অনেকদিন পরের কথা। আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুন। টিউশনি করতে যাচ্ছি পুরান ঢাকায়। রাস্তায় জ্যাম। পুরান ঢাকার গলিতে যা হয় আরকি। রিকশায় বসে দেখি রাস্তার পাশে এক ফকির শুয়ে আছে। তার মাথার কাছে বমি।সে বড় বড় নিঃস্বাস নিচ্ছে। প্রতিটি নিঃশ্বাসের সাথে সাথে ঘড়ঘড় আওয়াজ হচ্ছে। বছর পাচ বা ছয়ের একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার হাতে একটা পাউরুটি। পাউরুটি থেকে ছোট ছোট টুকরা ছিড়ে মুখে পুড়ছে। বৃদ্ধের অসহায় মুখ আর ছোট মেয়েটার চোখের গভীর আগ্রহ দেখে আমার বুকের ভিতরটা হঠাৎ করেই ধ্বক করে উঠল। আমার মনে হল এই বৃদ্ধ মারা যাবে রাস্তার পাশে আর ছোট মেয়েটা দেখবে প্রথম মৃত্যু। আমার তখন রিকশা থেকে নেমে বৃদ্ধকে কোন একটা হাসপাতালে নেয়ার ইচ্ছে হচ্ছিল। আবার ঝামেলা ঘাড়ে নিতে ইচ্ছে করছিল না। দুটো বিপরীতমুখী ইচ্ছার সংঘর্ষ চলতে চলতে সময় শেষ। জ্যাম আর নেই। রিকশা চলতে শুরু করেছে। আমি ভাবলাম হয়ত বৃদ্ধের কিছুই হবে না। এখন থাকুক পড়ে। ফেরত যাবার সময়ও যদি দেখি পড়ে আছে তাহলে হাসপাতালে নেবার একটা চেষ্টা করব।

টিউশনীতে আমি কখনও একঘন্টার বেশী পড়াই না। সেদিন মন খারাপ ছিল খুব। তাই তাড়াতাড়ি ফিরে এলাম। আসার পথেও সেই একই জায়গায় জ্যাম। রাস্তার পাশে মানুষের জটলা। ময়লা কাপড়ে মুড়ে রাখা হয়েছে লম্বাটে কিছু একটা। কেউ না বলে দিলেও আমি জানি সেটা কি এবং কার লাশ। ছোট মেয়েটাকে দেখলাম না কোথাও। ভিড় করে থাকা লোক গুলোর মুখে বিরক্তি। হারামজাদা মরার আর জায়গা পেল না। সারা দুনিয়া থাকতে আমাদের ঘরের সামনে এসে পরে মরে আছে।





জ্যাম একসময় শেষ হয়। রিকশা চলতে থাকে। আমি হলে ফিরে আসি। সেদিন গভীর রাত্রে আমি উপলব্ধি করি আসলে আমি প্রথম বারের মত মৃত্যু দেখলাম। এর আগে আমি লাশ দেখিছি। কিন্তু মৃত্যু দেখিনি কোন মানুষের।



অবহেলায় রাস্তার পাশে মরে পড়ে থাকা বৃদ্ধের জন্য আমার খুব মায়া হচ্ছিল। সে কি মৃত্যুর আগে কিছু বলে যেতে চাচ্ছিল? সেই ছোট মেয়েটা কি কিছু শুনে রেখেছে? বালিকাটির গভীর আগ্রহের দৃষ্টির কথা বার বার মনে পড়ছিল। আমি টের পাচ্ছিলাম বাকি জীবন আমাকে একজন অসহায় বৃদ্ধের মুখ স্মরন রাখতে হবে। আমি সে রাতে কেদেছিলাম অনেক। দুটা কারনে আমার কান্না। কেদেছিলাম এটা উপলব্ধি করে যে আমি এবং অনান্য মানুষ সবাই খুব অসহায়। দ্বিতীয় কারনটা হল আমার সাথে একজন মহান মানুষের মুল পার্থক্যটা কোথায় সেটাও সেদিন আমি প্রথম বুঝতে পারি।

কৌতুক - মুরগি দুইটা ধরবে কে?

বাজার করে আসার পথে ববের গাড়ি খারাপ হয়ে গেলো। সে গাড়ি থেকে নেমে এল। তার ফার্মটা কাছেই। হেটে যেতে মিনিট দশেক লাগবে। সে আপাতত গাড়িটা ফেলে রেখে চলেই যেতে পারত। পরে মেকানিক নিয়ে এসে ঠিক করা যেত গাড়িটা। কিন্তু সমস্যা হল সাথে কিছু বাজার আছে। একটা বড় হাস, দুইটা মুরগি, একটা বালতি আর চার লিটার রঙের ডিব্বা।
এতগুলা জিনিস কিভাবে নেয়া যায় সে বুঝে উঠতে পারছে না।

রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে সে এটা নিয়ে ভাবছে, এমন সময় খুব সুন্দর এবং বছর চব্বিশের এক মেয়ে তাকে জিজ্ঞেস করল,
-আচ্ছা, ৭৭ নম্বর ফার্মটা কোনদিকে?
-৭৭? আমার বাসার পাশেই। হেটে যেতে বড়জোর দশমিনিট লাগবে। আমিই আপনাকে সাথে নিয়ে যেতাম কিন্তু একটা হাস, দুইটা মুরগি,বালতি আর রঙের কৌটা নিয়ে হাটতে পারছি না।
-এককাজ করেন। রঙের কৌটাটা নেন বালতির ভিতর। মুরগি দুইটা নেন দুই বগলে আর হাসটা নেন আরেক হাতে।

বব তাই করল। চমৎকার কাজ করছে। পথে কথাবার্তায় মেয়ের নাম জানা হল লিসা। সে যাচ্ছে কাজিন জনের বাসায়।


পথের এক জায়গায় বব বলল, এই ওয়ালটার পাশ দিয়ে একটা শর্টকাট -আছে। এখান দিয়ে গেলে তাড়াতাড়ি হবে।
লিসা বলল, কিন্তু খুব নির্জন মনে হচ্ছে পথ।
-তাতে কি?
-আপনি একজন যুবক। আমি একজন তরুনী। ধরেন, আপনি যদি নির্জনে আমার সাথে u know what শুরু করতে চান?
-হা হা হা! আমার একহাতে বালতি, যেটার ভিতর রঙের কৌটা, আরেক হাতে হাস। দুই বগলে দুইটা মুরগি। আমি কিভাবে আপনার সাথে জোর করে কিছু করতে পারি?
-ধরেন, আপনি বালতি থেকে রঙের কৌটাটা বের করে সেটা উল্টিয়ে হাসটা রাখলেন। হাসটা যেন না পালাতে পারে সেজন্য রঙের কৌটাটা বালতির ওপর রাখলেন। তাহলেই হল।
-ভুল করছেন। দুইটা মুরগি আছে যে, সেগুলার কি করব শুনি?
একটু হেসে লিসা বলল, মুরগি দুইটা না হয় আমিই ধরে রাখলাম।





\”Bookmark”?>