দুইটা ভদ্র কৌতুক

০১
বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। অনেকক্ষন বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা ঘাটে প্রচুর পানি জমে আছে। এর ভিতর এক মাতাল চিৎকার করে কেদে কেদে বলছে, কে আছো ভাই? একটু ধাক্কা দাও।

লিসা তার জামাই ববকে ডেকে তুলল। আমার মনে হয় তোমার যাওয়া উচিত।
-কিন্তু বাইরে অনেক বৃষ্টি। রাস্তায় অনেক কাদা।
-তোমার গত বছরের কাহিনী মনে নাই?
-আছে মনে আছে। কিন্তু এই ব্যাটার গলা শুনে ত মনে হচ্ছে পুরা মাতাল।
-তোমার গলা শুনে সেদিন কি অন্যরা মাতাল ভাবে নি?

গত বছর লিসার বাচ্চা হবে। রাতের বেলা হাসপাতালে নিয়ে যাবে। সেদিনও এমন বৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তাঘাট ভেসে যাচ্ছিল। তাদের গাড়িটা আটকা পড়ে গিয়েছিল কাদায়। অনেকক্ষন ঠেলে ঢুলেও বব গাড়িটা গর্ত থেকে বের করতে পারছিল না। এদিকে বউয়ের বাচ্চা প্রসবের সময় হয়ে যাচ্ছে। বার বার বব ধাক্কা মারছিল। কিন্তু গাড়িটা বের করে আনতে পারছিল না। একসময় হতাশায় সে চিৎকার করে কাদা শুরু করেছিল । ধাক্কা দাও। কেউ একজন এসে ধাক্কা দাও। আশেপাশের বাসা থেকে দুইজন সহৃদয় মানুষ বের হয়ে এসেছিল। নিজের ভিজে, কাদায় মাখামাখি হয়ে গাড়িটা বের করে দিয়েছিল ধাক্কা মেরে। আর সেদিন রাতেই তাদের ফুটফুটে একটা মেয়ে হয়েছিল।

আজকে, বছরখানেক পর, আরেক বৃষ্টির দিনে এক মাতাল চিৎকার করে বলছে, ধাক্কা দাও। আমাকে ধাক্কা দাও।

বব বের হয়ে আসল। রাস্তার পাশের লাইটগুলাও নিভে আছে কেন জানি। বেশ অন্ধকার। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। শুধু চিৎকার শোনা যাচ্ছে, ধাক্কা দাও।
বব বলল, ভাই আপনি কই?
-এদিকে আসেন।
বব সামনে এগিয়ে যায়।
-বাগানের ভিতর আসেন।
বব বাগানে ঢুকে পড়ে। ভাই, আপনাকে দেখছি না ত।
-ভাই, টবগুলার পাশে আসেন।
বব টবের পাশে এসে দাঁড়ায়।
-ভাই ,আপনার মত মানুষ হয় না। আসেন, একটু ধাক্কা দেন ত। অনেকক্ষন দোলনায় বসে আছি। এত ডাকছি। কেউ ধাক্কা দিতে আসে না।


০২

বিচারক আসামীকে ২০ বছরের সাজা দিয়েছেন।
আসামী- হুজুর, আমি একটা জিনিস জানতে চাচ্ছিলাম।
বিচারক- বল। কি প্রশ্ন?
-যদি আমি আপনাকে শুয়োরের বাচ্চা বলে গালি দেই , তা হলে কি হবে?
-আদালত অবমাননার অভিযোগে, তোমার সাজা আমি আরো ২ বছর বাড়িয়ে দিব।
-যদি আমি মনে মনে চিন্তা করি, মনে মনে গালি দেই?
-তাহলে সমস্যা নাই।
-তাইলে আমি মনে মনে ভাবছি, আপনি একটা মোটা মাদী শুয়োরের ভোটকা একটা বাচ্চা।

বড় দুঃখ পেলাম :| /:) :(( ( একটি পরিশিষ্টযুক্ত দুঃখবিলাসী আজাইরা পোষ্ট)

বাসে উঠে পাশের সিটে সুন্দরী তরুনী পাবার সৌভাগ্য আর কয়জনের হয়। গতকাল এমন একটা সুযোগ এসেছিল। যাচ্ছি সাবেক ১৪ নম্বর বাসে করে ইউনিভার্সিটিতে। যাত্রাবাড়ি থেকে এক চাদর পড়া ললনা বাসে উঠল। আমার কপালের গুনেই হোক বা অন্য কারনেই হোক, এসে বসেছে ঠিক আমার পাশেই। চোখে চশমা, গায়ে চাদর –ইউনিভার্সিটির ছাত্রী না হয়েই যায় না। ললনার গা থেকে পারফিউমের সুবাতাস। গন্ধটায় কিছুটা বিস্কুট বিস্কুট ভাব আছে।

কিন্তু আসল কথা হলো, মিনিট দুয়েক আমার পাশে বসেই ললনা অন্য সীটে চলে গেল। দুঃখ - দুঃখ - দুঃখ -পেলাম...আমিইইইইই...দুঃখ -দুঃখ -দুঃখ -পেলাম...

না হয় আমি গত চারদিন গোসল করি নাই। শীতের সময় চারদিন অনেকেই গোসল না করে থাকে। না হয়, এর আগের রাতে গেম পার্টিতে জয়েন করে মাত্র ৩ ঘন্টা ঘুমিয়েছি, চোখ লাল ছিল। তা আজকাল কার না চোখ লাল থাকে। না হয় চুল এলোমেলো ছিল। তা ছেলদের চুল কি পরিপাটি করে আচড়ানো থাকে? না হয়, টি শার্ট যেটা পড়েছিলাম সেটা গত এক সপ্তাহ যাবত ধোয়া হয় নি। তা বাসায় বুয়া না আসলে অনেকেরই ত কাপড় ধোয়া হয় না। তাই বলে কি বুকে এমন আশা জাগিয়ে পরে এতবড় দাগা মেরে অন্য সীটে চলে যেতে হয়? এই যে আমি ললনা পাশে এসে বসতেই, মনে মনে কত কথা ভেবে ফেললাম। কোন কথাটা প্রথম বলব। কিভাবে আলাপ শুরু করব একেবারে কবিতার মত করে। কি বলব আর কি বলব না। কেমন করে কোন কৌশলে –এমনভাবে নিজের ঢোল পিটাব যাতে ললনার মনে হয় অতি সুমধুর বাজনা বাজছে- এই ভাবনা গুলোর কোন মর্যাদাই সে রাখল না। হৃদয়হীনা নিষ্ঠুর নারী অন্য সীট ফাকা পেয়ে সেখানে চলে গেল। সেই সীটটাও এমন আহামারি কিছু না। সবার শেষের পাচজনের লম্বা সীটগুলার জানালার পাশের সীট। তা আমার জালানার পাশের সীটটা কি আমি ছেড়ে দিতে পারতাম না?

ললনার হৃদয়হীনতায় ব্যাথিত হয়ে আমি বিমর্ষ মুখে ঢাকার ময়লা আকাশ দেখতে লাগলাম।

পরিশিষ্ট

এমন একটা ঘটনার পরিশিষ্ট না থাকলে আসলে জমে না। এই ঘটনারও একটা পরিশিষ্ট আছে।
কিছু মানুষ আছে খোদা-ভগবান মানে না। তাদের ধারনা, দুনিয়াতে আর ভালো মানুষী নাই। দুনিয়াতে খারাপ কাজের শাস্তি নাই। একজন সৃষ্টিকর্তা যদি আসলেই থাকত, তাহলে মানুষের বুকে দাগা মেরে কেউ শান্তি পেত না। তাদের জ্ঞাতার্থে বিনয়ের সাথেই এই পরিশিষ্ট যুক্ত করা হলো।
সায়েদাবাদ হতেই তিন-চারজন বাসে উঠল। গ্রাম থেকে আসা মানুষ। সাথে ইয়া বড় ছালার বস্তা। আমার টি-শার্ট যদি এক সপ্তাহ না ধোয়া হয়ে থাকে, তবে তাদের জামা কাপড় গার্মেন্টস থেকে বের হয় আর সাবানের মুখ দেখে নাই। গা থেকে ভুরভুর করে একেবারেই স্বদেশী নিজ দেহে প্রস্তুত গন্ধ বের হচ্ছে। ( ভালো করে লক্ষ্য করুন শুধু গন্ধ বের হচ্ছে লিখলাম।“ সু” বা “দু” যুক্ত করে গন্ধটার বিশেষন দিলাম না। আমার কাছে ঘামে ভেজা মানুষের গন্ধ খারাপ লাগে না। ) তাদের একজন একটু ইতস্তত করে ললনার পাশে বসে পড়ল এবং বাকি পথ অতি উচ্চস্বরে মোবাইলে ঢাকায় নিরাপদে পৌছেছে এই খবর জানাতে লাগল। তার কথোপকথন থেকে তার সম্পর্কে আমাদের অনেক জ্ঞান লাভ হলো। অতি উচ্চস্বরে আলাপের কারনে আরো বুঝতে পারলাম ফোনের অই প্রান্তে যে আছে তার বুদ্ধিমত্তা বা লিংগ যাই হোক না কেন-কানে সে কমই শুনে। ললনা দেখলাম বিমর্ষ মুখে জালানা দিয়ে ঢাকার ময়লা আকাশ দেখা শুরু করছে।

যে দুঃখটা কিছুক্ষন আগে নিতান্ত আমার ছিল সেটা রূপ পাল্টে ললনার কাছে চলে গেছে।

বুয়েটের পোলারা দেশের বাইরে কেনো যায়? আর যায়ও যদি, পোলাগুলা ফিরা আসে না কেনো?

ইঞ্জিনীয়ারদের জন্য দেশে কাজের পরিবেশ খারাপ। খারাপ বললে আসলে যথাযথ বলা হয় না। গায়ের চামড়া যথেষ্ট মোটা না হলে কারো পক্ষে দেশে চাকুরি করা সম্ভব না। বেসরকারি চাকুরিক্ষেত্রে মালিকপক্ষের যথেচ্চারিতা, নিম্নবেতন, দৈনিক দীর্ঘ সময় কাজ করা, বাজে ব্যবহার, অনৈতিক কাজকর্ম- সব কিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি মোটেই অনূকুল না। আর সরকারি চাকুরির অবস্থা আরো খারাপ। সরকারি জবে ক্যারিয়ার ডেভেলপের কোন সুযোগ নাই। সিনিয়রদের তেল মেরে চলতে হয়, ঘুষ খাওয়া সরকারি ইঞ্জিনীয়ারদের জন্য এক রকম বাধ্যতামূলক কেননা নইলে হয়রানির সম্মুখীন হতে হবে। যদি কেউ নাও খায়, তাকে অন্যদের খাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন এত লোকের দুর্নীতি খুজে বের করল, কিন্তু সেখানে ইঞ্জিনীয়ারদের সংখ্যা খুব কম। এখানে সবাই টাকার ভাগ পায়। কেউ টাকার ভাগ না নিতে পারে সেটা তার ইচ্ছা, কিন্তু অন্যদের অবৈধ টাকা উপার্জনে বাধা দিলে তার জীবন দুর্বিষহ করে দেয়া হয়।


এই আমিই ত বাংলাদেশের সরকারি আর বেসরকারি দুই ক্ষেত্রেই চাকুরি করে ফেললাম। যতটুকু দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে দুই সেক্টরেই চাকুরির পরিবেশ খুব খারাপ। পাশ করার পর আমার বারবার মনে হয়েছে, চাকুরি ছেড়ে দিয়ে ঘরে বসে টিউশনী করে জীবন চালাই।

বুয়েট থেকে পাস করে আসলাম। যখন আমার বন্ধুরা একে এক বাইরে চলে যাচ্ছিল, আমি বলেছিলাম, তোমার যেখানে সাধ চলে যাও আমি এই বাংলার পাড়ে রয়ে যাব।

বুয়েটের একজন অতি প্রিয় শিক্ষকের কাছে গিয়েছিলাম ক্লিয়ারেন্সে সই নেবার জন্য। তখন সদ্য পাস করেছি। উনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার রেজাল্ট কি? রেজাল্ট শোনার পর, স্যার আমাকে বার বার বলেছিলেন, দেশ ছেড়ে চলে যাও...ভাগো এখান থেকে। আমি স্যার এর কথা শুনি নাই। দেশে রয়ে গিয়েছিলাম।

যখন আমার একটা সরকারি চাকুরি হয়েছিল, আমি নিজের ঘরের কম্পিউটার অফিসে নিয়ে গিয়ে বসিয়েছিলাম। আমার যুক্তি ছিল, অফিসের কাজকর্মে সুবিধা হবে। সরকারি অফিসে দক্ষ লোকের বড় অভাব, তাই অফিসের বহু রিপোর্ট আমি স্বেচ্ছায় করে দিয়েছি, চিঠি লিখেছি, টাইপ করেছি। সেই আমিই দশমাস পরে ট্রান্সফার হয়ে অন্য অফিসে এসে প্রথম যে কথাটা বলেছিলাম তা হল, আমি বাংলা টাইপ পারি না।

পাস করার মাত্র দুই বছরের মাথায় আমি এখন জুনিয়রদের বুদ্ধি দেই , খবরদার দেশে থাকবে না। পাস করো আর প্রথম সুযোগেই বাইরে চলে যাও।


যে স্বপ্ন নিয়ে দেশে থেকেছিলাম তা আজ বড় বিবর্ন। চোখের সামনে বহু অন্যায় দেখলাম, বড় কষ্ট লাগে আমার দেশের ইঞ্জিনীয়ারদের দেখে। একটা খুব ছোট উদাহরন দেই। আইলার পরের সপ্তাহের ঘটনা। চারিদিকে আইলার ক্ষতি নিয়ে আলোচনা, ক্ষয়ক্ষতির বিবরন জানিয়ে রিপোর্ট পাঠাচ্ছি। একদিন দেখি আমার অফিসে দুইজন অফিসার খুশিতে ডগমগ। আইলার শেষে অনেক টাকার বরাদ্দ আসছে। এই আইলাই আমার কয়েকজন কলিগকে লাখপতি করে দিয়েছে। আর্ত মানুষের কষ্টকে পুজি করেও এরা টাকা কামাতে দ্বিধা করে না। আমার চোখের সামনেই ত সব ঘটল। আমি বাধা দিতে পারি নাই। অসহায় হয়ে বসে বসে এদের কাজকর্ম দেখলাম। নিজের ক্ষুদ্রতায় রাগ হয়েছে, বার বার মনে হয়েছে, আমার পাপের ভান্ড কি ভর্তি হচ্ছে না?


গত সপ্তাহে IELTS দিয়ে আসলাম। বাইরে চলে যাবার কাগজপত্র তৈরী শুরু করব। সত্য কথা বলি, আমার দেশে থাকতে বড় ইচ্ছে করে। দেশে থাকতে ইচ্ছে করে যখন দিন শেষে ছোটবোন দুইটাকে দেখি । শুক্রবার দুপুরে বাসার সবাইকে নিয়ে যখন এক সাথে খেতে বসি, তখন মনে হয়, এক জীবনে মানুষ আর কতটুকু পায়? আমি ত দেশেই ভালোভাবেই বেচে থাকতে পারি। বৃষ্টির দিনে অফিস কামাই করে ঘরে কাথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে শুয়ে ভাবি, এই বেশ ভালো আছি। কিন্তু এই সবই ক্ষনিকের জন্য। জীবনের অনিশ্চয়তা, দেশের কিছু মানূষের নীতি এবং কান্ডজ্ঞানহীন আচরনে বড় ভয় পাই।


পাস করার পর চাকুরি নিয়ে আমার যে হতাশা তার বিবরন লিখতে হলে পনের বিশ পর্বের একটা সিরিজ লিখতে হবে। সব কথা না বলি।

বাংলাদেশ একটা গরিব দেশ। গরিব হবার পরও অনেক টাকা খরচ করে আমাকে ইঞ্জিনীয়ার বানিয়েছে। দেশের প্রতি আমার একটা কর্তব্য আছে। এই সবই আমি জানি। তবুও কত দুঃখে যে আমার দেশ ছাড়তে ইচ্ছে করে সেটা আমার মত বুয়েট থেকে যারা পাস করে এসেছে তারাই বুঝবে। আমি জানি যদি আমি বাইরে যাই, আমি চোরের মত মাথা নিচু করে দেশ ছাড়ব। আমার বুকে কি আর দেশ ছাড়ার কষ্ট থাকবে না? কিন্তু কত হতাশা আর বেদনাকে আমি সঙ্গী করে নিয়ে যাব, তা শুধু আমিই জানি।

কত শুনলাম, বুয়েটের ছাত্র-ছাত্রীরা বড় বদমাশ। পড়াশুনা শেষ করেই দেশ থেকে উড়াল মারে। আমাদের ত আর কম গালি দেয়া হয় না। কিন্তু কেন যে উড়াল মারে, কেন নিজের চেনা জগতটা ছেড়ে অজানা দেশে পাড়ি জমায়-সেটা ত কেউ জানতে চায় না।

আমার একখানা প্রেম অঙ্কুরোদগমের পূর্বেই মৃত্যুবরন করিল... :(

বালিকা আমাকে একান্তে ডাকিয়াছিল তাহার হলের পাশে। টিএসসি উদ্যানে বসিয়া আমার হাতে ধরাইয়া দিয়া ছিল উপহার। ছোট একটা অনুরোধ করিয়াছিল। দয়া করিয়া তোমার পরিবারের অন্যদিগকে জানাইও না ইহা আমি প্রদান করিয়াছি। আমি মস্তক নাড়িয়া সায় জানাইয়েছি এবং তাহার সহিত একত্রে বসিয়া উত্তরের শীতার্ত বাতাস তুচ্ছ করিয়া সান্ধ্যকালীন সময় উপভোগ করিয়াছি। কিন্তু তাহার অনুরোধখানা রাখিতে পারি নাই।

আমি বিশ্বাসভঙ্গের কারন হইয়াছি।পূর্ব হইতেই জ্ঞাত যে ইহা ক্ষুদ্র অপরাধ নয়, তথাপি মনে আশা রহিয়াছিল বালিকারা যাহাদের ভালোবাসে বালিকারা তাহাদের ক্ষমা করে। সুতরাং আমি নিশ্চিত মনে লেপ মুড়ি দিয়া ল্যাপ্পিখানা বুকের উপর রাখিয়া অন্তর্জাল হইতে একখানা বই নামাইয়া আনন্দচিত্তে পড়িতেছিলাম।

তাহার ফুন আসিল। তাহাকে ভীরু চিত্তে জানাইলাম আমার মাতাজী এই উপহার দর্শন করিয়া ফেলিয়াছেন এবং কিঞ্চিত বিরক্তি সহযোগে আমাকে ভৎর্সনা করিয়াছেন। ইহাতে বালিকা মনঃক্ষুন্ন হইয়া বলিল, তুমি কেন উপহারের কথা বলিতে গেলে? আমি কি তোমাকে পূর্বেই নিষেধ করিয়া দেই নাই? আমি মূর্খতা স্বীকার করিয়া যতই নীরব রহিলাম ততই উহার রাগ বাড়িতে লাগিল। আমি কদাচিৎ দু একটা বাক্য যাহা বলি তাহাতেই পরিস্থিতি পুর্বাপেক্ষা অধিক ঘোলা হইতে লাগিল। বালিকা মর্মাহত হইয়া ফুন রাখিয়া দিল।

ঘটনা এইখানে শেষ হইলেই ভালো ছিল, কিন্তু তাহা আমার দুর্ভাগা কপালে নাই। পরবর্তীতে বালিকা ফুন করিয়া তাহার আর আমার ভবিষ্যৎ বিষয়ে দুই একটা প্রশ্ন শুধাইলো এবং যাহা উত্তর পাইল তাহাতে সন্তুষ্ট হইতে পারিল না। বাস্তবিকই আমার কপাল ফাটিয়া গেল-বালিকা আমাকে ত্যাগ করিল।


বালিকা আমাকে যখন ত্যাগ করিল, আমার চোখে জল আসিয়াছিল কি? কহিতে পারি না। বালিকা কাদিয়াছিল ইহা আমি জানি। বালিকাকে ত্যাগ করিতে আমার বড় বেদনাবোধ হইয়াছিল। তবুও ত্যাগ করিলাম। আমি কষ্ট পাইয়াছি আবার এক সময় ভুলিয়া যাইব। কিন্তু রাত্রির অন্ধকারে বিশ্রামাগারের বারান্দায় এক যুবক যে বহুক্ষন মাথা নিচু করিয়া বসিয়াছিল,আকাশের তারারা মিটিমিটি জ্বলে দেখিতেছিল তাহার গভীর অনুতাপ-সেই যুবকটি যে আমি , তাহা কোনদিন স্বীকার করিব না।

তিনটি কৌতুক ("এই পুস্ট রুচিশীলদের জইন্য না")

০১
বাংলাদেশি, চাইনিজ আর আমেরিকান তিনজন গেছে steam bath নিতে।

তিনজনে বসে আছে খালি তোয়ালে পেচিয়ে রেখে। এমন সময় ক্রিং ক্রিং শব্দ। আমেরিকানটা এক্সকিউজ মি বলে উঠে চলে গেল। সে তার

হাতের তালু মুখের কাছে এনে কিছুক্ষন কথা বলল। এরপর ফিরে আসল।
-সরি। আমার অফিস থেকে ফোন আসছে। আমার হাতের তালুর চামড়ার নিচে খুব ছোট একটা মোবাইল ফুন ঢুকিয়ে দেয়া আছে। আমি

যেখানেই যাই আমাকে যেন পাওয়া যায় সেই ব্যবস্থা আর কি।

একটু পর আবার ক্রিং ক্রিং।
এইবার চাইনিজটা কথা শুরু করল। তার হাতের চামড়ায় ছোট একটা স্ক্রীন আছে। সেইটাতে ভিডিও কল করছে।

তিনজন চুপচাপ বসে আছে।

ক্রিং ক্রিং

বাংলাদেশীটা উঠে গেল । টয়লেটে ঢুকে গেল টিস্যুর প্যাকেট নিয়ে।

একটু পর বের হয়ে আসছে। পাছার পিছন থেকে টিস্যু পেপার বের হয়ে আসছে। সে বিব্রত ভঙ্গিতে বলল, সরি! অফিস থেকে একটা ফ্যাক্স

আসতাছে।


০২

-দোস্ত তোর নতুন পিএস মেয়েটা ত হেভি মাল।
- তোর ভালো লাগছে।
- কইলাম না, কঠিন চিজ। যা ফিগার... মাই গড। অফিসে এমন কড়া জিনিস পাইলি কই?
- এই ত নতুন আসছে।
-আমার পি এস টা একটা বুড়া ভাম। তুই ত শালা ভালা ফস্টি নস্টি করার সুযোগ পাইলি।
- ফস্টি নস্টির সুযোগ নাই। এইটা একটা রোবট।
- তাই নাকি?
- হ! দাড়া তোকে এনে দেখাই। ইন্টারকমে বলল, লিলি আমার রূমে আসো একটু।

লিলি আসল।

-দোস্ত, এর পেট এ ছোট একটা ফ্রিজ আছে। পিঠে একটা শ্রেডার মেশিন আছে। এর বডিতে প্রিন্টার, তিন টেরা হার্ড ডিস্ক আর যাবতীয় অফিস সামগ্রী আছে।
-ভালো ত। দোস্ত, আমারে দুই দিনের জন্য ধার দে। ইউজ (!) কইরা দেখি।
-আচ্ছা নে। লিলি, তুমি আগামী দুইদিন আমার দোস্তের সাথে কাজ করবা।

দোস্ত আর রোবট লিলি বের হয়ে গেল। পাচমিনিট পরই শোনা গেল দোস্তের গগনবিদীর্নকারী চিৎকার, " আমার ইয়ে কাটা পড়ছে"

মাথা নাড়তে নাড়তে বলল, শীট!! লিলির পেন্সিল শার্পনারটা কোন জায়গায় সেইটাই ত দোস্তকে বলা হয় নাই।


০৩

দিনের শেষে ডাক্তার বব আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। নিজের প্রতিচ্ছবির দিকে তাকিয়ে সে নিজেকে বলল, বব! আপসেট হওয়ার কিছু নাই। বি কুল। তুমি পৃথিবীর প্রথম ডাক্তার না যে রোগীর সাথে সেক্স করছে। আর তোমার পরেও আরো ডাক্তার আসবে যারা রোগীর সাথে সেক্স করবে। বি কুল।
ববের মুখে অপরাধবোধ, চোখে পানি। আয়নার দিকে তাকিয়ে সে আবার নিজেকেই বলল, কিন্তু আমি যে পশু চিকিৎসক!!

কাগু কারবার ৩

১) এপ্যাল কোম্পানীর লোগোতে পুরা আপেল ছিল। আপেলটাতে আসলে কাগু কামড় দিয়েছিলেন।
২) কাগুর ভয়ে নদীর পানি উজানে বয়।
৩) লোকজ বিশ্বাস এই যে, কাগুর চোখের অশ্রুতে ক্যান্সার ভালো হয়। কিন্তু আফসোসের বিষয়, কেউ কখনো কাগুকে কাদতে দেখে নাই।
৪) কাগু অসীম পর্যন্ত গুনেছেন- দুইবার।
৫) সব পুরুষের একটা বিচি অন্যটা থেকে বড় হয়। কিন্তু কাগুর দুইটা বিচিই একটা অন্যটার থেকে বড়।
৬) কাগু একবার সাইক্লোপসের দুচোখের মাঝখানে ঘুষি মারছেন।
৭) ধারনা করা হয় যে, কাগু ফিফথ ডাইমেনশনে বাস করেন।
৮) কাগুর সৌন্দর্যের রহস্য হলো- গরম লাভায় স্নান করা।
৯) কাগু কখনোই ঘুমান না। চোখ বন্ধ করে ধ্যান করেন।
১০) কাগু ডিম লাইট ব্যবহার করেন। কাগু অন্ধকারকে ভয় পান না, অন্ধকার যেন কাগুকে ভয় না পায় তার জন্যই এই লাইট।

আরো দশটি কাগু কারবার

১) কাগুকে একবার পদ্মগোখরা কামড় দিয়েছিল। পাচদিন অবর্ননীয় কষ্ট পেয়ে,গায়ের রঙ নীল হয়ে গিয়ে সাপটা মারা যায়।
২) আমাগো কাগু এক বলেই ছয় ছক্কা মারতে পারেন।
৩) অনেকেই সুপারম্যান লেখা টি-শার্ট পইড়া ঘুরে, মাগার সুপার ম্যান কাগু লেখা টি-শার্ট পইড়া ঘুরে।
৪) কাগু টুথপেষ্ট থেকে বের হওয়া পেষ্ট আবার ভরতে পারেন।
৫) সবার ক্রমোজম ২৩ জোড়া করে। কিন্তু আমাগো কাগুর ক্রমোজম ৪৭ জোড়া, এর ভিতর পাচটা খুব বিষাক্ত।
৬) কাগু যখন খুব ছোট ছিলেন মাইকেল জ্যাকসন একবার কাগুর দিকে বদ নজর দিয়েছিল। কাগু মাইকেলের দিকে এমন কড়া চোখে তাকাইছেন যে, মাইকেল ভয়ে ব্ল্যাক থেকে সাদা হয়ে গিয়েছে।
৭) ধারনা করা হয় যে, বিশ্বের ৯৯% শক্তিই কাগু শক্তি রূপে আছে।
৮) কাগু লেবু চিপে কমলার রস বের করতে পারেন।
৯) কাগু ব্রেইলি তে কথা বলতে পারেন।
১০) কাগু মাছকে পানিতে চুবিয়ে মারতে পারেন।

কাগু শক্তির জয় হোক!!!

কাগু, কাগু শক্তি ... কাগু ময় দুনিয়া

তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি। রোজার ঈদের ছুটি শেষে স্কুলে গিয়েছি। সবাই দেখি কি যেন নিয়ে একসাথে আড্ডা দিচ্ছে। সাথে তুমুল হাসি। সবুজ নামে একটা পোংটা ছেলে আসরের মধ্যমনি। তার কাগু নাকি আসছে এইবার বাসায়। সেই কাগুর নানা কাহিনী। কাহিনী এমনই আজব যে, চাপা পিটাচ্ছে এটা বলার কোন মানে হয় না। বরং হাসি চলে আসে। সবুজ আবার এমন ভাব নিয়ে গল্প করে যে, কাগুর সব ঘটনা বাস্তব। কিছুই উলটা পালটা না।

সবুজ, তার কাগু আর তার কাগুর অস্বাভাবিক ক্ষমতা দীর্ঘদিন আমার মনে ছিল। কিন্তু ছোটবেলার অনেক সোনালী মুহুর্তের মত এটাও ধীরে ধীরে ভুলে গিয়েছিলাম। আজকে, প্রায় বার বছর পর, ইন্টারনেটে কৌতুক পড়তে গিয়ে সবুজের কাগুকে খুজে পেলাম। সবুজের কাগুর মতই অস্বাভাবিক ক্ষমতার অধিকারী এক চরিত্র নিয়ে এই ছোট ছোট মজার লাইন লেখা। মূল কৌতুকগুলা চাক নরিস আর ভিন ডিজেল কে নিয়ে করা। কিন্তু অতি আশ্চর্যজনক ভাবে সবুজের কাগুর সাথে এই কৌতুকগুলার গভীর মিল। সবুজ, আমার হাই স্কুলের অনেক বন্ধুর মত সেও হারিয়ে গেছে। আমি জানি না জীবন তার দিকে হাসি মুখে তাকিয়ে আছে কিনা। সে হারিয়ে গেলেও তার কাগু আমার ভিতর রয়ে গিয়েছে।

ব্লগেও একজন কাগু আছেন। তিনিও কম আশ্চর্যজনক নন। এই এক লাইনের কৌতুকগুলা তাকে নিয়েও হতে পারে। তিনিও খুব সহজেই এর সাথে মানিয়ে যান।
যাই হোক, কাগুর কথা বলা শুরু করি।

১) আমাগো কাগু দুই টুকরা বরফ ঘষেও আগুন জ্বালাতে পারেন।
২) কাগু বই পড়েন না। বইকে টর্চার করে সব কথা জেনে নেন।
৩) যদি তোমার কাছে ১০০ টাকা থাকে, আর আমাগো কাগুর কাছেও ১০০ টাকা থাকে, তইলে আমাগো কাগুর কাছে বেশি টাকা আছে।
৪) কাগুর কি বোর্ডে কন্ট্রোল বাটন নাই, কেননা কাগুর সব সময় সব কিছুই কন্ট্রোলে থাকে।
৫) কাগু এক পাখি ছুড়ে দুইটা ঢিল শিকার করতে পারেন।
৬) ব্যাট ম্যান আর সুপারম্যানের ভিতর মারামারি হইলে কে জিতবে? ...... কাগু জিতবে।
৭) কাগু শীতের দিনের জন্যে সুর্যে একটা বাড়ি বানিয়ে রাখছেন।
৮) কাগু যেই বাড়িতে জন্ম নিছেন, সেইটা উনি নিজের হাতেই বানাইছেন।
৯) কাগু একবার একটা ঘোড়ার থুতনি তে লাত্থি দিয়েছিলেন। পরে সেই ঘোড়া থেকে যে বাচ্চা হয় সেইগুলারে আমরা জিরাফ বইলা ডাকি।
১০) আপনি নিজের ইচ্ছায় এই ব্লগ পড়েন নাই। কাগু আপনারে মন্ত্রবলে এই ব্লগ পড়তে বাধ্য করেছেন।