আমার একখানা প্রেম অঙ্কুরোদগমের পূর্বেই মৃত্যুবরন করিল... :(

বালিকা আমাকে একান্তে ডাকিয়াছিল তাহার হলের পাশে। টিএসসি উদ্যানে বসিয়া আমার হাতে ধরাইয়া দিয়া ছিল উপহার। ছোট একটা অনুরোধ করিয়াছিল। দয়া করিয়া তোমার পরিবারের অন্যদিগকে জানাইও না ইহা আমি প্রদান করিয়াছি। আমি মস্তক নাড়িয়া সায় জানাইয়েছি এবং তাহার সহিত একত্রে বসিয়া উত্তরের শীতার্ত বাতাস তুচ্ছ করিয়া সান্ধ্যকালীন সময় উপভোগ করিয়াছি। কিন্তু তাহার অনুরোধখানা রাখিতে পারি নাই।

আমি বিশ্বাসভঙ্গের কারন হইয়াছি।পূর্ব হইতেই জ্ঞাত যে ইহা ক্ষুদ্র অপরাধ নয়, তথাপি মনে আশা রহিয়াছিল বালিকারা যাহাদের ভালোবাসে বালিকারা তাহাদের ক্ষমা করে। সুতরাং আমি নিশ্চিত মনে লেপ মুড়ি দিয়া ল্যাপ্পিখানা বুকের উপর রাখিয়া অন্তর্জাল হইতে একখানা বই নামাইয়া আনন্দচিত্তে পড়িতেছিলাম।

তাহার ফুন আসিল। তাহাকে ভীরু চিত্তে জানাইলাম আমার মাতাজী এই উপহার দর্শন করিয়া ফেলিয়াছেন এবং কিঞ্চিত বিরক্তি সহযোগে আমাকে ভৎর্সনা করিয়াছেন। ইহাতে বালিকা মনঃক্ষুন্ন হইয়া বলিল, তুমি কেন উপহারের কথা বলিতে গেলে? আমি কি তোমাকে পূর্বেই নিষেধ করিয়া দেই নাই? আমি মূর্খতা স্বীকার করিয়া যতই নীরব রহিলাম ততই উহার রাগ বাড়িতে লাগিল। আমি কদাচিৎ দু একটা বাক্য যাহা বলি তাহাতেই পরিস্থিতি পুর্বাপেক্ষা অধিক ঘোলা হইতে লাগিল। বালিকা মর্মাহত হইয়া ফুন রাখিয়া দিল।

ঘটনা এইখানে শেষ হইলেই ভালো ছিল, কিন্তু তাহা আমার দুর্ভাগা কপালে নাই। পরবর্তীতে বালিকা ফুন করিয়া তাহার আর আমার ভবিষ্যৎ বিষয়ে দুই একটা প্রশ্ন শুধাইলো এবং যাহা উত্তর পাইল তাহাতে সন্তুষ্ট হইতে পারিল না। বাস্তবিকই আমার কপাল ফাটিয়া গেল-বালিকা আমাকে ত্যাগ করিল।


বালিকা আমাকে যখন ত্যাগ করিল, আমার চোখে জল আসিয়াছিল কি? কহিতে পারি না। বালিকা কাদিয়াছিল ইহা আমি জানি। বালিকাকে ত্যাগ করিতে আমার বড় বেদনাবোধ হইয়াছিল। তবুও ত্যাগ করিলাম। আমি কষ্ট পাইয়াছি আবার এক সময় ভুলিয়া যাইব। কিন্তু রাত্রির অন্ধকারে বিশ্রামাগারের বারান্দায় এক যুবক যে বহুক্ষন মাথা নিচু করিয়া বসিয়াছিল,আকাশের তারারা মিটিমিটি জ্বলে দেখিতেছিল তাহার গভীর অনুতাপ-সেই যুবকটি যে আমি , তাহা কোনদিন স্বীকার করিব না।

No comments: