প্রমোদে ঢালিয়া দিনু মন, তবু প্রান কেনো কাদে রে...

সৃষ্টিকর্তা সবার জন্য সমান সুখের ব্যবস্থা রাখেন। যখন কাউকে দুনিয়ায় পাঠানো হয়, তখন তার প্রাপ্য সুখের একটা অংশ তার সাথে দিয়ে দেয়া হয়। বাকি অংশগুলো পৃথিবীর অন্য মানুষের হাতে দিয়ে দেয়া হয়। যারা সৌভাগ্যবান এবং একই সাথে অতি দুর্ভাগা- তাদের সুখের বড় অংশটা বিপরীত লিঙ্গের কাউকে দিয়ে দেয়া হয়। ফলে দুনিয়াতে এসে ছেলেটা যদি অই মেয়েটা বা মেয়েটা যদি সেই ছেলেটাকে খুজে পায়, সারাজীবন সুখী থাকে। এরা সৌভাগ্যবান কেননা, আনন্দের সবটুকু এরা একজনের কাছেই পেয়ে যাচ্ছে। এরা একই সাথে দুর্ভাগা কেননা যদি ফিরিয়ে দেয়- তাদের সুখী হবার আর উপায় থাকে না। আবার অনেকের সুখটুকু অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে সবার মাঝে দিয়ে দেয়া হয়। এরা দুনিয়াতে এসে মানবতাবাদী হয়। পৃথিবীর এক কোনে জন্ম নিয়ে হয়ত আরেক কোনের মানুষের জন্য নিজের জীবন শেষ করে।


তবে বেশিরভাগ মানুষের সুখ বড় বড় কয়েকটা টুকরা করে দিয়ে দেয়া হয়। এই টুকরাগুলোর মালিক হয় সাধারনত বউ, ভালো একটা বাড়ি, উচ্চবেতনের চাকুরি ইত্যাদি ইত্যাদি।


সবাই নিজের সুখ বা আনন্দের অংশটুকু খুজে পায় না। কেউ কেউ পায়। সবাই খুজতেও যায় না। প্রাসাদে থেকেও যখন কেউ সুখী হয় না- তখনও সে বুঝতে পারে না তার সুখের অংশগুলো এই প্রাসাদে নাই। অন্য কোথাও আছে। গৌতম যেদিন বুঝতে পারল তার আসল আনন্দ কোথায়- সেইদিনই সুন্দরী বঊকে ঘরে ফেলে চলে এলো বাইরে।

আমার সুখের অংশগুলো কার কাছে আছে? আমি জানি না।


=====================================

গতকাল সাইট পরিদর্শনে গেলাম। সরকারের জমিতে ভূমিহীনরা ঘর তুলে বাস করছে। তাদের কিছু নাই । কামলা খাটে, রিকশা চালায়।

আমার কুড়েঘর দেখে সেখানে থেকে যেতে ইচ্ছে করছিল। খড়ের কুড়েঘরের প্রতি আমার এত ভালোবাসা কেন সেটা পরিষ্কার না। সম্ভবত ছোটবেলা থেকেই কুড়েঘরের ছবি আকতে আকতে ঘর বললে এইটাই বুঝি। আর শুকনো খড়ের গন্ধের চেয়ে চমৎকার আর কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না। উঠানের এক কোনায় মাচা। সেখানে লাউ গাছ। চালের এক কোনায় সীম গাছ। আর ঘরটার পিছনে দুইটা কলাগাছ। তাদের লম্বা পাতাগুলো যেন আমার উদ্দেশ্যে হাত নাড়ছে।
চলে আসো... চলে আসো...

একটা বিষন্ন কুড়েঘর,তার মলিন পোষাকের শক্তিশালী অধিবাসীরা,ঘরের কাছেই ঢেড়সের খেত , উঠানে শুকাতে দেয়া পাটি -আমাকে আবার মনে করিয়ে দিল আমি জীবন চিনি না। আমি কিছুই জানি না হয়ত সুখ কাকে বলে।


আমার বার বার মনে হচ্ছিল একটাই কথা- আমার সুখের অংশগুলো কার কাছে আছে?

No comments: